গোলাম মোর্তজা: বাংলাদেশ যে শুধু ভারতকে সুবিধা দেয়, তা তো নয়। বাংলাদেশ নিজের দরকারেও ভারতের কাছে যায় বা যেতে হয়। চাল-পেঁয়াজ কেনার জন্যে তো প্রথমে ভারতের কাছেই যেতে হয়।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় ভারত কম বাণিজ্যিক সুবিধা পেয়েছিল, তাও নয়। বাংলাদেশে ভারত বিরোধীতার মধ্যে একটা অহেতুক ব্যাপার আছে, তাও অসত্য না।
একটি ছবি নিয়ে চলা বিতর্কে রাজনীতি আছে,ধর্ম আছে। এই রাজনীতি-ধর্ম, ভারতসহ প্রায় সব দেশ- জাতির মধ্যে আছে।বাংলাদেশে থাকবে না, আশা করতে পারি। তবে তা বাস্তব সম্মত না।
এই ছবিটির ক্ষেত্রে যুক্তির চেয়েও বেশি আছে জাতিগত আবেগ। সেই আবেগকে ধারণ করে কেউ কথা বলতে পারবেন না? কথা বললেই, বিএনপি- জামায়াত- রাজাকার বানিয়ে দেবেন তাকে? ভারত বিরোধী বানিয়ে দেবেন?
সীমান্ত হত্যা নিয়ে কথা বলা কেন, ভারত বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করবেন? দেশের মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হবেন, আপনি তা নিয়ে কথা বলেন না বলে আপনি প্রগতিশীল, আর যিনি কথা বলেন তিনি প্রতিক্রিয়াশীল? ধরে নিলাম রাজনৈতিক পরিচয়ে তিনি প্রতিক্রিয়াশীল।
তাহলেও, সমস্যা তো যে প্রতিক্রয়াশীল কথা বলছেন তার নয়, সমস্যা যে প্রগতিশীল কথা বলছেন না তার। প্রতিক্রিয়াশীল কথা বলে জনসমর্থন পাচ্ছেন, কথা না বলে প্রগতিশীল জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন।
ভারতীয় দূতাবাস কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট থেকে ছবিটি সরিয়ে নেয়ার মধ্যে কিন্তু জনসমর্থন এবং জনবিচ্ছিন্নতার প্রমাণ বহন করছে।
বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর বৈধ পথে ৩২ হাজার কোটি টাকা ভারতে চলে যায়।এই তথ্য প্রকাশ করা মানে ভারত বিরোধীতা নয়। এই তথ্য প্রকাশ করা মানে, দেশে যোগ্য মানুষ থাকলে তাদের চাকরি দেয়ার চাপ তৈরি করা। যোগ্য মানুষ না থাকলে, তৈরি করার উদ্যোগ নেয়া।
অহেতুক ভারত বিরোধীতা একটি ‘রোগ’। যৌক্তিক প্রেক্ষিতে কথা না বলে বা অন্যায়- অনায্যতা জাস্টিফাই করার প্রবণতাও একটি ‘রোগ’।
দ্বিতীয় প্রকারের রোগীদের কারণে, প্রথম প্রকারের রোগীরা ঘৃণা ছড়ানোর সুযোগ পেয়ে যায়।
এই দুই প্রকারের ‘রোগী’রাই বাংলাদেশের সব মানুষ নন, এর বাইরেও বাংলাদেশে মানুষ আছেন। যারা সত্যিকার অর্থেই কোনো সুবিধাবাদের কাছে বিক্রি না হওয়া, বাংলাদেশ প্রেমিক।
সূত্র: ফেসবুক ওয়াল থেকে নেয়া
আপনার মতামত লিখুন :