জাহাঙ্গীর বিপ্লব : বলতে দ্বিধা নেই, বিশ্ব চলচ্চিত্র এখনও নায়ক নির্ভর। বিশ্বের বেশিরভাগ সিনেমাই নির্মিত হয় মূলত নায়ককে প্রাধান্য দিয়ে। হাতে গোনা দুয়েকটি তৈরি হয় নায়িকাকে কেন্দ্র করে। জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতেও নায়কই এগিয়ে থাকেন বেশিরভাগ সময়। কিন্তু তারপরেও নিজস্ব মেধা এবং দক্ষতা-যোগ্যতা দিয়ে মাঝে মাঝেই জ্বলে উঠতে দেখা যায় অনেক নায়িকাকে। নায়ক নয়, মূলত ওইসব নায়িকার কারণেই দর্শকরা সিনেমাহলে ভিড় জমায়। তেমনই এক নায়িকা মাহিয়া মাহি।
শাবনূরের পর দেশীয় চলচ্চিত্রে যে’জন অভিনেত্রীর আগমন ঘটেছে তারমধ্যে মাহিয়া মাহি অন্যতম। এরইমধ্যে চলমান সময়ের শীর্ষ চাহিদাসম্পন্ন অভিনেতা শাকিব খানসহ রিয়াজ, বাপ্পি, সায়মন, শুভসহ অনেকের বিপরীতে অভিনয় করেছেন মাহি। নায়কের পাশাপাশি নিজস্ব জ্যোতিতে ক্যারিয়ার আলোকিত করেছেন তিনি। মাঝখানে একটু ঝক্কি-ঝামেলা গেলেও ২০১৮ সালে আবার আশার আলো জ্বলার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে তার ক্যারিয়ারে। ভক্তরাও প্রিয় অভিনেত্রীর নতুন নতুন সিনেমাতে চুক্তি হওয়ার খবরে নতুন আশায় বুক বাঁধছেন।
কিন্তু ‘জান্নাত’ সিনেমার পর ‘পোড়ামন’ জুটি সায়মন-মাহির নতুন সিনেমা ‘আনন্দ অশ্রু’ নিয়ে দু’দিন ধরে ভক্তদের মনে যে আনন্দ বিরাজ করছিল, তা যেন হঠাৎ করেই থেমে গেলো। বুধবার ‘অন্ধকার জীবন’ নামের নতুন একটি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন মাহিয়া মাহি। সিনেমাটির প্রাথমিক নাম ছিল ‘কাঙাল’। বদিউল আলম খোকনের এই সিনেমায় অভিনয়ের কথা ছিল অপু বিশ্বাসের। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে অপু সিনেমাটি ছেড়ে দিলে। গল্প ও সিনেমার নাম পরিবর্তন করে অপুর জায়গায় মাহিকে চুক্তি করা হয়।
মাহির এই নতুন সিনেমার খবর নিয়ে বৃহস্পতিবার দেশের সবগুলো অনলাইন পোর্টালে ছড়িয়ে পড়লে আনন্দের পরিবর্তে অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েন মাহি ভক্তরা। তাদের ভাষ্য- সিনেমার নাম, গল্প, পরিচালক থেকে শুরু করে সবই ঠিকই আছে, আপত্তি কেবল সিনেমার নায়ক নিয়ে। কারণ, এই সিনেমায় মাহি অভিনয় করছেন টিভি অভিনেতা ডি এ তায়েবের বিপরীতে। যদিও ছোটপর্দার পাশাপাশি বড়পর্দাতেও ইদানিং কাজ করছেন তায়েব। সম্প্রতি ডি এ তায়েব এবং পরীমনি অভিনীত ‘সোনাবন্ধু’ নামের একটি সিনেমা মুক্তি পায়। সে সিনেমাটি মুখ থুবড়ে পড়ে। তাছাড়া অনেক দর্শক মন্তব্য করে বলেছেন- পরীমনি করলেও তায়েবের বিপরীতে মাহিকে মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। আমরা আমার প্রিয় নায়িকার সবসময় ভাল কিছু চাই। মঙ্গল চাই। মাহির কাছে এমন প্রত্যাশা করিনি। আশাকরি, এরপর থেকে আরও হিসাব নিকাশ করে সিনেমা হাতে নেবেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে চলচ্চিত্রপাড়াতেও দেখা যাচ্ছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। চলচ্চিত্র পরিবারের অনেকেই প্রশ্ন বলছেন, ছোটপর্দা থেকে বড়পর্দায় এসে এখন পর্যন্ত কেউ আলোড়ন তুলতে পারেননি। তাছাড়া তায়েব ছোটপর্দাতেও খুব একটা ঝড় তুলতে পারেননি, সিনেমায় তিনি কতটা গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে পারবেন! আবার আরেক দল বলছেন, অপু যেখানে সিনেমাটা ছেড়ে দিয়েছেন, সেখানে আরও কিছুটা চিন্তা-ভাবনা করা উচিত ছিল। সিনেমাটি মাহির ক্যারিয়ারে হয়তো নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
যদিও সিনেমাটি নিয়ে ডি এ তায়েব এবং মাহিয়া মাহি দুজনেই বেশ আশাবাদী বলে উল্লেখ করেছেন। দেখা যাক, শেষপর্যন্ত কতটা আশার আলো জ্বালাতে পারে সিনেমাটি!