জান্নাতুল ফেরদৌসী: বাংলাদেশে পালিয়া আসা রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য যখন মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে বাংলাদেশ মিয়ানমার যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক চলছে তখন জাতিসংঘের শরণার্থী সংক্রান্ত কমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলছেন, জাতিসংঘ যদি রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়া মনিটর করতে না পারলে এই প্রত্যাবাসনকে তারা সমর্থন করতে পারবে না। বিবিসিকে মিস্টার গ্র্যান্ডি বলেছেন, রাখাইন রাজ্যে তাদেরকে যতটা যেতে দেয়া হচ্ছে তা খুবই সীমিত।
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় কক্সবাজার সংলগ্ন এলাকাগুলোতে এখন ৬ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম আশ্রয়শিবিরে বসবাস করছে। গত ২৫ আগষ্ট থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনে লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। রোহিঙ্গাদের কাছে শোনা গেছে নির্যাতনের সব ভয়াবহ বর্ণনা।
এরপর ব্যাপক আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য বাংলাদেশ মিয়ানমার আলোচনা শুরু হয় গত নভেম্বর মাসে। ফিরিয়ে নেয়ার জন্য গঠন করা হয় যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ। এর বৈঠক শুরু হয়েছে গত সোমবারে। কিন্তু জাতিসংঘের শরণার্থী সংক্রান্ত কমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলছেন, জাতিসংঘ এ প্রক্রিয়াকে সমর্থন দিতে পারছে না যতক্ষণ পর্যন্ত তারা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের প্রক্রিয়া যথাযথভাবে মনিটর করতে সক্ষম না হচ্ছে।
তিনি বলেন, এটা সম্ভব করতে হলে হয়তো অনেক বড় বড় চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করতে হবে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে দশকের পর দশক ধরে বিভিন্ন সমস্যায় পড়তে হয়েছে যেমন: নাগরিকত্ব, মৌলিক অধিকার, যোগাযোগের অধিকার ও সমাবেশের অধিকার ইত্যাদির ক্ষেত্রে। আমি এই সংকট শুরুর আগে গত জুলাই মাসে উত্তর রাখাইন রাজ্যে গিয়েছিলাম। তখনকার অবস্থায় এটা স্পষ্ট ছিল সেখানে একটা সংকট যেকোন মূহুর্তে শুরু হতে পারে।
মিস্টার গ্র্যান্ডি আরো বলেন, বাংলাদেশ এখন ৬ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতেই শুরু হচ্ছে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক। তাতে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবসহ ১৪ জন সদস্যের একটি দল। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রমের বিষদ আলোচনা হচ্ছে। মিয়ানমারের সাথে সমযোতা অনুযায়ী জানুয়ারি ২৩ তারিখ থেকে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু এই প্রক্রিয়া শুরুর ক্ষেত্রে বেশ কিছু বাধা বিপত্তির চেষ্টা এখনো চলছে বলে এই বৈঠকের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন।
আপনার মতামত লিখুন :