ইসমাঈল হুসাইন ইমু : রাজধানীতে ‘জঙ্গি আস্তানা’ হিসেবে চিহ্নিত ভবন গুলো একপ্রকার নিষিদ্ধ। ওইসব বাড়িতে জঙ্গিরা ছিল এ কথা ভেবে কেউ বাসা ভাড়াও নিচ্ছেনা। এছাড়া অনেকগুলো বাড়ি ফাঁকা রয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২৬ জুলাই কল্যাণপুরে ‘জাহাজ বিল্ডিং’ নামক একটি বাড়িতে অভিযান চালায় কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। সেখানে নিহত হয় নয় জঙ্গি। ওই অভিযানের পরই একপ্রকার ভুতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে। ছয়তলা বাড়ির কোনো ফ্ল্যাটে নেই একজন ভাড়াটিয়াও। বাড়ির মালিকসহ অন্যরা জামিন পেলেও জাহাজ বিল্ডিংয়ের দৃশ্যপট আর পাল্টায়নি। শুধু কল্যাণপুরের এই বাড়ি নয়, দেড় বছর ধরে রাজধানীর অন্যান্য এলাকার যেসব বাড়িতে জঙ্গিবিরোধী অভিযান চালানো হয়েছে, সেই বাড়িগুলো এক ধরনের ‘ইমেজ সংকটে’ পড়েছে। অনেক বাড়িতে দিনের পর দিন ‘টু-লেট’ ঝুলিয়ে রাখা হলেও ভাড়াটিয়াদের সাড়া মিলছে না।
রাজধানীর পূর্ব আশকোনার ‘সূর্য ভিলায়’ এখনও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে জঙ্গিদের ব্যবহৃত নানা আলামত। দেয়ালে কালচে হয়ে যাওয়া ছোপ ছোপ রক্তের ছাপ। বাড়ির সামনেই ঝুলছে ‘টু-লেট'। নব্য জেএমবির নেতা মাইনুল ইসলাম ওরফে মুসা গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর সূর্য ভিলার নিচতলার ফ্ল্যাটটি ব্যবসায়ী পরিচয়ে ভাড়া নিয়ে আস্তানা গড়ে তোলে। সিটিটিসির সদস্যরা গত ২৩ ডিসেম্বর সেটির সন্ধান পান। পরদিন পুলিশ অপারেশন ‘রিপল-২৪’ নামে অভিযান চালায়। ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে জঙ্গি তানভীর কাদেরীর ছেলে আফিফ কাদেরীর লাশ উদ্ধার করা হয়। নারী জঙ্গি সাকিনা ওরফে সাকিরা সুইসাইডাল ভেস্ট বিস্ফোরণে আত্মহনন করে। এতে তার শিশুসন্তান আহত হয়। ওই আস্তানা থেকে দুই শিশুসহ নিহত জঙ্গি চাকরিচ্যুত মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী জেবুন্নাহার শিলা ও পলাতক মুসার স্ত্রী তৃষা মনি আত্মসমর্পণ করে। ঘটনার পর থেকেই পুলিশ ফ্ল্যাটটি তালাবদ্ধ করে রেখেছে।
রাজধানীর রূপনগরের শিয়ালবাড়ী এলাকার ৩৩ নম্বর সড়কের ১৪ নম্বর ছয়তলা বাড়িটির পশ্চিম পাশের ফ্ল্যাটে জঙ্গি আস্তানা গড়ে তোলে নব্য জেএমবির নেতা মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম। গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর ওই বাসায় অভিযান চালায় সিটিটিসি। অভিযানে নিহত হয় তামিম চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ জাহিদুল। এখনও পুলিশের লাগানো তালা ঝুলছে বাড়িটিতে।
এদিকে আজিমপুরে ২০৯/৫ লালবাগ রোডের যে বাসায় আস্তানা গড়ে তুলেছিল জঙ্গিরা, গতবছর ১০ সেপ্টেম্বর পুলিশি অভিযানের পর থেকে এখনও তালাবদ্ধ। মালিকপক্ষ বলছে, বাসাটি পুলিশ তাদের কাছে হস্তান্তর করেনি। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ সেটি তালাবদ্ধ করে রেখেছে।
আপনার মতামত লিখুন :