ডেস্ক রিপোর্ট : ব্লু বেরিকে কখনো কখনো ‘সুপারফুড’ বলা হয়। এর পেছনে যথেষ্ট কারণও রয়েছে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের আধার ব্লু বেরি স্বাস্থ্য, ঔষধি ও পুষ্টিগুণের দিক থেকে অনন্য। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে ছোট এ ফলটির চমত্কার এক ঔষধিগুণ। গবেষণায় বলা হয়েছে, ক্যান্সারাক্রান্ত কোষ ধ্বংসের মাধ্যমে রোগটির চিকিত্সায়ও বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে ব্লু বেরি। খবর মেডিকেল নিউজ টুডে।
জরায়ুমুখের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে আক্রান্ত কোষের ওপর পর্যবেক্ষণ চালিয়ে একদল গবেষক দেখতে পেয়েছেন, এগুলো ধ্বংসে রেডিয়েশন থেরাপির চেয়েও বেশি কার্যকর ব্লু বেরির নির্যাস। তবে সবচেয়ে কার্যকর ফল পাওয়া যায় ব্লু বেরির নির্যাস ও রেডিয়েশন থেরাপির সমন্বিত প্রয়োগে। গবেষণায় উঠে আসা ফল সম্প্রতি নিবন্ধ আকারে ‘প্যাথোলজি অ্যান্ড অনকোলজি রিসার্চ’ শীর্ষক জার্নালে প্রকাশ করা হয়েছে। নিবন্ধের প্রধান লেখক ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব মিসৌরি-কলাম্বিয়ার স্কুল অব মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ ডা. ইউজিয়াং ফ্যাং।
প্রাণঘাতী ব্যাধি ক্যান্সারের মারাত্মক একটি রূপ হলো জরায়ুুমুখের ক্যান্সার। প্রতি বছরই সারা বিশ্বের প্রচুর নারী এ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন। শুধু যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক একটি ছোট পরিসংখ্যানের দিকে তাকালেই এ বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া যাবে। আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির মতে (এসিএস), চলতি বছর দেশটিতে জরায়ুমুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত ১২ হাজার ৮২০ জন রোগী শনাক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ৪ হাজার ২০০ জনেরও বেশি রোগীর।
জরায়ুমুখের ক্যান্সারের চিকিত্সায় একটি বহুল প্রচলিত প্রাথমিক চিকিত্সা হলো রেডিয়েশন থেরাপি। এক্ষেত্রে উচ্চমাত্রায় বিকিরণ (রেডিয়েশন) ঘটানোর মাধ্যমে ক্যান্সার কোষ ধ্বংসের প্রয়াস চালানো হয়। এ বিষয়ে ডা. ইউজিয়াং ফ্যাং বলেন, ‘শেষ পর্যায়ের জরায়ুমুখের ক্যান্সারের কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিকিত্সার ভালো একটি উপায় হলো রেডিয়েশন থেরাপি। কিন্তু সমস্যা হলো, এক্ষেত্রে সুস্থ কোষেরও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার মতো ঘটনা সব সময়ই ঘটছে।
গবেষণাটির মূল উদ্দেশ্য ছিল ব্লু বেরির নির্যাসকে রেডিওসেনসিটাইজার হিসেবে ব্যবহার করা যায় কিনা সেটি পরীক্ষা করা। যেসব উপাদান ক্যান্সার কোষকে রেডিয়েশন থেরাপির সামনে আরো দুর্বল করে তোলে, সেগুলোকেই রেডিওসেনসিটাইজার বলা হয়।
বিশেষজ্ঞরা জরায়ুমুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর ক্যান্সার কোষের ওপর পর্যবেক্ষণ চালানোর জন্য দুটি আলাদা ক্ষেত্রে চিকিত্সার জন্য শুধু ব্লু বেরির নির্যাস ও শুধু রেডিয়েশন থেরাপির প্রয়োগ ঘটান। তৃতীয় আরেকটি ক্ষেত্রে তারা ক্যান্সারের চিকিত্সায় ব্লু বেরির নির্যাস ও রেডিয়েশন থেরাপির দুয়ের সমন্বিত প্রয়োগ ঘটান। পরবর্তীতে তারা দেখতে পান, শুধু রেডিয়েশন থেরাপির প্রয়োগে ক্যান্সার কোষের সংখ্যা কমেছে ২০ শতাংশ। অন্যদিকে শুধু ব্লু বেরির নির্যাস প্রয়োগে আক্রান্ত কোষ হ্রাস পেয়েছে ২৫ শতাংশ। সবচেয়ে চমকপ্রদ ফল পাওয়া গেছে এ দুয়ের সমন্বিত প্রয়োগে। এক্ষেত্রে ক্যান্সার কোষের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে ৭০ শতাংশ। বণিক বার্তা
আপনার মতামত লিখুন :