শিরোনাম
◈ জুলাইয়ে আমদানি ৬.২ বিলিয়ন ডলার, তিন বছরের সর্বোচ্চ ◈ শনিবার সকাল ৯টার মধ্যে বজ্রবৃষ্টি ঝরতে পারে যেসব অঞ্চলে ◈ আরব-মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আকাশপথ অবরোধে ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা ◈ অনলাইন জুয়ার শাস্তি বিষয়ে যা জানালো তথ্য মন্ত্রণালয় ◈ বাংলাদেশে নিরাপদ ও সাশ্রয়ী জ্বালানি সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার ◈ এক বছরে প্রত্যাশিত অগ্রগতি হয়নি: নাহিদ ইসলাম ◈ কুমিল্লার হোমনায় মাজারে অগ্নিসংযোগ: অজ্ঞাত ২২শ জনের বিরুদ্ধে মামলা, এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি ◈ ৩৫ বছর পর চাকসু নির্বাচন: ২৩২ পদে লড়বেন ৯৩১ প্রার্থী ◈ মন্ত্রিত্বের প্রস্তাব ফিরিয়ে নেপালের চিকিৎসক বললেন ‘রোগীদের ছেড়ে যাব না’! ◈ ইউপিইউ কাউন্সিলে বাংলাদেশ পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন

প্রকাশিত : ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৪:৫২ সকাল
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৪:৫২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মৃত্যুদ- দিন মাদক বিক্রেতাদের

মোহাম্মদ আবু নোমান : পরিবারের কোনো সন্তান ধর্ষক, খুনি, বখাটে, সন্ত্রাসী, মাদকসেবী হবে এটা কেউই চান না। পরিসংখ্যানে ৮০ শতাংশ খুনের সঙ্গে মাদকাসক্তরা কোনো না কোনোভাবে জড়িত। সম্প্রতি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের তথ্যে একথা বলা হয়েছে। সন্ত্রাস, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের অন্যতম প্রধান কারণ এই মাদকাসক্তি। এমন কোনো দিন নেই, গণমাধ্যমে শিরোনাম হচ্ছে না ধর্ষণ, গণধর্ষণের খবর। প্রতিদিন গড়ে ১০টিরও বেশি ধর্ষণের ঘটনা শুধু গণমাধ্যমে আসে। এর বাইরে বিভিন্ন কারণে অপ্রকাশিত পরিসংখ্যা অনেক বড়। যে মাদক সেবন করে, সে কিন্তু প্রথমেই মাদক হাতে নেয় না। প্রথমে সিগারেটেই হাতে খড়ি হয়। এছাড়াও অনেকের মধ্যে সিগারেট খাওয়া নিয়ে স্মার্ট হওয়ার প্রবণতা থাকে। এরপর আফিম, গাঁজা, ড্যান্ডি, ভায়াগ্রা, ফেনসিডিল, হেরোইন, ইয়াবা ইত্যাদি। অনেক ক্ষেত্রে মাদকের মূল উৎস কিন্তু সেই সিগারেটই। এমন কোনো মাদকাসক্ত নেই যে সিগারেট না খায়।

এর সাথে মাদক বন্ধুদের সঙ্গে থেকেই নেশাটি নেওয়া শুরু করে। প্রথমে শুধুমাত্র সখ বা দেখি কেমন(!) ও আনন্দের জন্য অনেকে এনার্জি ড্রিংকসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে সেবন করলেও একসময় অভ্যাসে পরিণত হয়। তখন এ অভ্যাস থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব হয় না। মাদকের প্রভাবে একসময় সেবনকারীর চেতনাকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। ফলে মাদকাসক্তরা স্বাভাবিকভাবে চিন্তা করতে পারে না। এমনকি এর চিকিৎসা নিতেও আগ্রহী হয় না।ইতোপূর্বে চরম উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, পরিতাপ ও লজ্জার খবর, যা ফাঁস করেছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক (গোয়েন্দা) নজরুল ইসলাম শিকদার। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, ‘শিক্ষার্থীরাই বেশি ইয়াবা সেবন করে’। রাজধানীর অভিজাত ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইয়াবা ব্যবসায়ীদের প্রথম টার্গেট।

অনেকে জড়িয়েও পড়ছে জীবনবিধ্বংসী মাদকের ব্যবসায়। পড়ালেখা ছেড়ে আবার অনেকে কাজ করে ইয়াবার ক্যারিয়ার হিসেবে।একটি সুন্দর সাজানো সংসার ও পরিবার ধ্বংস করতে একজন মাদকসেবী সন্তানই যথেষ্ট। বিভিন্ন পারিবারে অশান্তি সৃষ্টির কারণও এই মাদক। তবে পরিবারকে খেয়াল রাখতে হবে ছেলে-মেয়েরা কোথায় যায়, কার সঙ্গে আড্ডা দেয়। মাদকের কারণে যুবসমাজ দিশা হারাচ্ছে। তরুণরা ব্যর্থ হলে রাষ্ট্র ব্যর্থ হয়। মাদকাসক্তির বড় শিকার তরুণ সমাজ। দেশের ভবিষ্যৎ কর্মশক্তি নেশায় বুঁদ হয়ে থাকলে উন্নয়নের চাকা খাদে পড়বে। মাদকের এই ভয়াবহ থাবায় জাতীয় অস্তিত্ব হুমকির সাথে বিভিন্ন পরিবারে ও সমাজে ব্যাপক বিশৃঙ্খলার কারণ হয়েছে। মরণ নেশা মাদকের করাল গ্রাসের ছোঁয়ায় চরিত্র নষ্টের সাথে এইচআইভি ও এইডসের মতো ঘাতক রোগের বিস্তার ও আক্রান্ত হয়ে তরুণরা অকালে প্রাণ হারাচ্ছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক কর্মকা- চালুর সাথে মূল্যবোধ, সুনৈতিকতা বিষয়ক উপস্থিত বক্তৃতা, প্রবন্ধ, রচনা, দেয়াল লিখন, পত্রিকা বের করার সাথে এসব কর্মকা-ে যারা ভালো করবে, তাদের পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হলে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সৃজনশীলতা বেড়ে যাবে। ইন্টারনেট ও আকাশ সংস্কৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দেশে কিশোর-কিশোরী ও যুবক-যুবতীদের সহশিক্ষার সুবাধে- অবাধ মেলা মেশার সাথে পর্যায়ক্রমে আবেগ, কৌতুহল, প্রেম, ভালোবাসায় জড়ানো এরপর ভুল বোঝাবুঝি, অভিমান, বিচ্ছেদ, বিরহ, প্রতিশোধের স্পৃহা, অবসাদ ও হতাশায় পড়ে মাদক ধরে পরবর্তী সময়ে আর ফিরে আসতে পারছে না।মাদক ব্যবসার পেছনে প্রভাব ও প্রতাপশালীদের ভূমিকার অবসান ঘটাতে হবে। কোন মাদকাসক্ত, মাদকচক্র, বিক্রেতা, সিন্ডিকেটধারী ও মাদকসেবী নেতাকর্মী দলে থাকবে না, রাজনীতিবিদদের এ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে রাজনীতির সংযোগ বন্ধ করতে হবে। মাদকের সর্বগ্রাসী বিস্তার প্রতিরোধ করতে হলে মাদক বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদ- আইন প্রণয়ন করতে হবে।

লেখক : প্রাবন্ধিক ও কলাম লেখক
সম্পাদনা : খন্দকার আলমগীর হোসাইন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়