মাসুদ আলম: মো. আজাদ (১৬) অটোরিকশা চালাত আর ঘাতক নাহিদ হোসেন (২২) তাতে কাঁচা তরকারি আনা-নেওয়া করত। অটোরিকশায় চলাচলের মাধ্যমেই মূলত তাদের মধ্যে পরিচয় ও দীর্ঘদিন একই এলাকায় বসবাসের সূত্রে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে নাহিদও একটি অটোরিকশা ক্রয় করেন। নাহিদের অটোরিকশার ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কিস্তিতে টাকা নেন। সেই টাকা নিয়ে ব্যাটারি কিনতে যাওয়ার সময়ে ছিনতাইয়ের শিকার হন নাহিদ। আজাদকে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পূর্বপরিকল্পিতভাবে চাকু দিয়ে গলা কাটার পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে বিশেষ অঙ্গ কেটে হত্যা করেন নাহিদ।
বুধবার সকালে কালিয়াকৈর থানার হরিণহাটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘাতক নাহিদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১। তার কাছ থেকে আজাদের ব্যবহৃত মোবাইলফোন, নগদ সাড়ে তিন হাজার টাকা ও একই এলাকার একটি গ্যারেজ থেকে নিহতের অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, গত জানুয়ারি মাসে নাহিদের রিকশার ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যায় । ব্যাটারি কেনার জন্য সমবায় সমিতি থেকে ৫০ হাজার টাকা কিস্তি নেন নাহিদ। এ টাকা নিয়ে ব্যাটারি কিনতে যাওয়ার পথে আজাদের সঙ্গে তার দেখা হয়। এসময় আজাদ তার গাড়িতে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। আজাদের অটোরিকশায় সফিপুর থেকে আনসার একাডেমি হয়ে নির্জন জঙ্গলের মধ্যখানের রাস্তায় গেলে গাড়ি থামিয়ে প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিয়ে পাশে যান আজাদ।
তিনি আরও বলেন, এসময় জঙ্গল থেকে দুজন ব্যক্তি গাড়িতে থাকা নাহিদকে ভয় দেখিয়ে তার সঙ্গে থাকা ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। ঘটনায় নাহিদ হোসেন মনে মনে আজাদের সংশ্লিষ্টতার সন্দেহে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত ৪ ফেব্রুয়ারি নাহিদ হোসেন আবারও কাঁচা তরকারির ব্যবসা করবে জানিয়ে সবজি পরিবহনের জন্য আজাদকে ডাকেন। এসময় হত্যার উদ্দেশ্যে সফিপুর বাজারের ফুটপাত থেকে ৩০ টাকা দিয়ে একটি চাকু কেনেন। পরে অটোতে করে কাঁচা তরকারি আনার জন্য রওয়ানা হয়ে কালিয়াকৈর থানার গোসাত্রা সবজি ক্ষেতে নিয়ে প্রথমে আজাদকে গলা টিপে ধরে মাটিতে ফেলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।
এমএ/এসএ
আপনার মতামত লিখুন :