স্পোর্টস ডেস্ক : তুরস্কের ফুটবলে রীতিমতো ঝড় উঠেছে বাজি কেলেঙ্কারিতে। ফুটবল ম্যাচে অবৈধ জুয়াখেলার অভিযোগে ছয় তুর্কি রেফারিকে সাময়িকভাবে পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন ইস্তাম্বুলের একটি আদালত।
এছাড়া বাজির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে দেশটির পেশাদার লিগের ১ হাজার ২৪ জন খেলোয়াড়কে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ করেছে টার্কিশ ফুটবল ফেডারেশন (টিএফএফ)। তুর্কি ফুটবল ফেডারেশনের (টিএফএফ) বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, যেসব খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে ফুটবলে বাজি ধরার প্রমাণ মিলেছে, তাদের সবাইকে পেশাদার ফুটবল শৃঙ্খলাবিধি বোর্ডে (পিএফডিকে) পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে তুরস্কের শীর্ষ লিগেরই ২৭ জন খেলোয়াড় রয়েছেন।
এই সিদ্ধান্তের পর টিএফএফ তুরস্কের তৃতীয় ও চতুর্থ বিভাগের সব ম্যাচ দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছে। তবে শীর্ষ দুই বিভাগে খেলা আপাতত চালু থাকবে।
এর আগে গত শুক্রবার থেকে আটক থাকা আরও ১১ রেফারিকে গত সোমবার আদালতের তত্ত্বাবধানে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। টিএফএফ জানিয়েছে, ম্যাচে বাজি ধরার অভিযোগে ১ হাজার ২৪ ফুটবলারকে এরই মধ্যে শৃঙ্খলাবিষয়ক কমিটির সামনে তলব করা হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত ফুটবলারদের সাময়িকভাবে নিষিদ্ধও করা হয়েছে।
বড় পরিসরে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ফলে ক্লাবগুলোর স্কোয়াডে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ কারণে টিএফএফ বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার কাছে শীতকালীন ট্রান্সফার উইন্ডোতে অতিরিক্ত ১৫ দিন সময় চেয়েছে, যাতে ক্লাবগুলো নতুন খেলোয়াড় আনতে পারে।
তুরস্কের অন্যতম বড় ক্লাব বেসিকতাস জানায়, তাদের দুই ফুটবলারের নামও পিএফডিকে-র তালিকায় আছে। তবে এক বিবৃতিতে ক্লাবটির কর্তৃপক্ষ ‘নিজেদের খেলোয়াড়দের নির্দোষ বলে বিশ্বাস’ দাবী করে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বাজি ও ম্যাচ ফিক্সিং তদন্তের অংশ হিসেবে অন্তত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে একজন ক্লাব চেয়ারম্যানও আছেন।
এই কেলেঙ্কারির সূত্রপাত হয় ২৭ অক্টোবর, যখন টিএফএফ সভাপতি ইব্রাহিম হাজিওসমানওগলু জানান, শত শত রেফারি বাজি অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত। তার দাবি অনুযায়ী, তুরস্কের পেশাদার লিগে কর্মরত ৫৭১ জন রেফারির মধ্যে ৩৭১ জনের বাজির অ্যাকাউন্ট ছিল এবং ১৫২ জন সক্রিয়ভাবে বাজি ধরতেন।
এদের মধ্যে শীর্ষ দুই বিভাগের ৭ জন প্রধান রেফারি ও ১৫ জন সহকারী রেফারি রয়েছেন। নিচের স্তরের লিগ থেকে আরও ৩৬ জন ‘ক্লাসিফাইড’ রেফারি ও ৯৪ জন সহকারী রেফারির নাম পাওয়া গেছে।
অভিযুক্ত ছয়জনই তৃতীয় ও চতুর্থ বিভাগের সহকারী রেফারি। একই তদন্তের অংশ হিসেবে ম্যাচ ফিক্সিং ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে প্রথম বিভাগের ক্লাব আয়ুপসপোরের সভাপতিকেও কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে গত শুক্রবার থেকে আটক থাকা আরও ১১ রেফারিকে গত সোমবার আদালতের তত্ত্বাবধানে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। টিএফএফ জানিয়েছে, ম্যাচে বাজি ধরার অভিযোগে ১ হাজার ২৪ ফুটবলারকে এরই মধ্যে শৃঙ্খলাবিষয়ক কমিটির সামনে তলব করা হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত ফুটবলারদের সাময়িকভাবে নিষিদ্ধও করা হয়েছে।