মনিরুল ইসলাম : বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রবীণ সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন,নির্বাচনে নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র জনগন হতে দেবে না। আজ মঙ্গলবার সকালে বিএনপির ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এই কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘‘ আজকে একটা জরিপের রিপোর্ট বের হয়েছে। সেখানে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, বেশি আসন এই নির্বাচনে কে পাবে? কোন দল? শতকরা ৬৬ ভাগ উত্তরদাতা বলেছে বিএনপি। আর শতকরা ২৬ ভাগ উত্তরদাতা বলেছে জামায়াতে ইসলামী। ডিফারেন্স হলো ৪৪ ভাগ। আর অন্যান্য যারা তারা তো অনেক অনেক কম আর কি? এমনকি অনেক উল্লেখযোগ্য দল তারা শতকরা এক ভাগও না আর কি ? চেয়েও কম।”
তিনি বলেন, এতে হতাশ হয়ে নিরাশ হয়ে কেউ ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিতেই পারে। কিন্তু যে জনগণ তাদের মন স্থির করে ফেলেছে তারাই ষড়যন্ত্রকে সফল হতে দেবে না… এটা মনে রাখতে হবে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন. ফ্যাসিবাদের পতন ও একটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরপ্রতিষ্ঠার এক দফা… এই এক দফার আমরা অর্জন করেছি। ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে বাকি অংশটুকু পূরণ করার জন্যই অন্তবর্তীকালীন সরকার।”
‘‘কিন্তু এই বাংলাদেশের জনগণ মাত্র কিছুদিন আগে ১৫ ধইরা সিন্দাবাদের দৈত্যের মত ঘাড়ে চেপে বসা একটা নিপীড়ণকারী একটা খুনি একটা ফ্যাসিবাদী সরকারকে উৎখাত করেছে।‘ সেই জনগণ কোন ষড়যন্ত্র হতে দেবে না। কোন ষড়যন্ত্র এই জনগণকে পরাজিত করতে পারেনি এবং পারবে না ইনশাআল্লাহ।”
রাজধানীর ফার্মগেইটে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির আয়োজনে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনার কর্মসূচি’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠান হয়।
বিকালে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
‘কোটিপতি বাড়বে, দরিদ্র বাড়বে এটাকে উন্নয়ন বলে না’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘ আমরা দেশে উন্নয়ন দেখেছি। বড় বড় দালানকোঠা, বড় বড় এক্সপ্রেসওয়ে, নতুন নতুন ট্রেন ইত্যাদি। কিন্তু পাশাপাশি আমরা দেখেছি জনগণের মৌলিক নূন্যতম আকাঙ্ক্ষাগুলো অপূর্ণ থেকে যেতে। ”
‘‘ আমরা পত্রিকায় পড়েছি যে, কোটিপতি উৎপাদনের দেশ হিসাবে বাংলাদেশ শীর্ষে এদেশে জনসংখ্যার অনুপাতে সবচেয়ে বেশি কোটিপতি হয় প্রতিবছর। অথচ আমরা এটাও পড়েছি যে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ মানুষ দারিদ্র সীমার নিচে চলে যায়। একদিকে কিছু মানুষ কোটিপতি হয়, আরেক দিকে লক্ষ লক্ষ মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে পড়ে যায়। এই অবস্থা, এই অবস্থা গ্রহণযোগ্য না। এটাকে উন্নয়ন বলে না “
তিনি বলেন, ‘‘ একজন রাজনীতিবিদ বলেছিলেন যে দেশের মানুষ বেকার উপার্জনহীন বুভুক্ষ , দরিদ্র সেই দেশে বড় বড় অট্টালিকা, বড় বড় রাস্তাঘাট, বড় বড় পুল-কালভার্ট এসব হলো গোরস্থানে আলোক সজ্জা করা। আপনি একটা গোরস্থানে আলোক সজ্জা করে দেখাতে পারেন বড় সুন্দর লাগছে। কিন্তু তার চারদিকে অন্ধকার। এটা উন্নয়ন না।”
‘‘আপনারা খানিকক্ষণ পরেই শুনবেন যে কেমন উন্নয়নের স্বপ্ন দেখে বিএনপি। কিভাবে সে উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে চাই আমরা। খালি বললেই তো হবে না যে আমরা দেশের মানুষকে শিক্ষিত করতে চাই। কিভাবে শিক্ষিত করবেন? আমরা দেশের মানুষের উপার্জন বাড়াতে চাই। কিভাবে করবেন? আমরা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চাই। কিভাবে করবেন ? আমরা নারীদের অধিকার সুনিশ্চিত করতে চাই। কিভাবে করবেন? আমরা স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে চাই জনগণের জন্য কিভাবে ?
‘দেশ গড়া পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মসূচির বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।