শিরোনাম
◈ ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটি কবে? ◈ ডিসেম্বরে তফসিল ঘোষণা, পিআর পদ্ধতিতে কোনও নির্বাচন হবে না: কক্সবাজারে সালাহউদ্দিন আহমেদ ◈ বিজেপিকে ‘ফ্যাসিবাদী’ আখ্যা দিয়ে আদর্শিক লড়াইয়ের ঘোষণা থালাপতি বিজয়ের ◈ নারীর গলায় কাপড় প্যাঁচানো, শিশুর দেহ বাঁধা—বুড়িগঙ্গা থেকে চারজনের মরদেহ উদ্ধার ◈ এনসিপির সারোয়ার তুষারের শোকজ নোটিশ প্রত্যাহার ◈ বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক এগিয়ে নিতে ৭১-ইস্যুকে ‘ডিল’ করা উচিত: এনসিপি ◈ পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ৩ দলের বৈঠক, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে জোর ◈ টেকনাফে বাংলাদেশি ১২ জেলেকে ধরে নিয়ে গেল আরাকান আর্মি ◈ রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ, ১৪টি শহর বিদ্রোহীদের দখলে, নজর রাখছে চীন ও ভারত ◈ বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু ঘটেছে: সালাহ উদ্দিন আহমদ

প্রকাশিত : ২৩ আগস্ট, ২০২৫, ০৭:২৯ বিকাল
আপডেট : ২৪ আগস্ট, ২০২৫, ০৩:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

আমাদের উপদেষ্টা যারা দায়িত্ব পালন করছেন, এখন অনেক ক্ষেত্রেই তারা অসহায়: মির্জা ফখরুল

বাসস:  বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি)  মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সংকট সমাধানের পথ হলো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিত্বের সরকার।

তিনি বলেন, ‘দেশে বিরাজমান সকল সমস্যার সমাধানের পথ আমরা নিজেরাই তৈরি করতে পারি। তবে এটা আমাদের ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করবে। আমরা যদি একটা জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকার গঠন করতে পারি, একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারি, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে যদি ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পার্লামেন্ট গঠন করতে পারি, তাহলে সেখানে জনগণের কাছে জবাবদিহিতামূলক একটা ব্যবস্থা তৈরি করতে পারব।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন। 

‘ অপর্ণা আলোক সংঘ’ নামে একটি সংগঠনের উদ্যোগে ‘সামাজিক সুরক্ষা কতটা সুরক্ষিত’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা শেষ করে দিয়েছে, স্বাস্থ্য শেষ হয়ে গেছে, এগুলোকে আবার নতুন করে গড়ে তোলার জন্য তো মানুষ লাগবে। সেই  মানুষগুলো তো তৈরি করতে হবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আপনি সচিবালয়ে যাবেন, সেখানে গেলে দেখবেন, যে আমলারা বসে আছেন, তারাই সবকিছু নির্ধারণ করেন।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের উপদেষ্টা যারা দায়িত্ব পালন করছেন, এখন অনেক ক্ষেত্রেই তারা অসহায়। তারপরও আমরা আশা করি যে, উপদেষ্টারা এতদিন যে চেষ্টা করেছেন, সে চেষ্টাটা নিয়ে, যারা বিভিন্ন সংস্কার কমিশনে আছেন, তারাসহ আমরা সকলে মিলে একটা শুরু করতে পারি, যে শুরুটা দিয়ে আমরা ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে বৈষম্যহীন একটি দেশের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেখুন, সেই গ্রামের একজন স্কুল শিক্ষক তার সমস্যার সমাধান করতে হলে তাকে ঢাকায় আসতে হয়। কেনো? যেটার প্রয়োজন নাই, সেটা জেলাতেই যথেষ্ট। কিন্তু ওই যে ব্যবস্থা। ওই ব্যবস্থা যদি কেন্দ্রে না আসে, তাহলে ঘুষটা আসবে কোথায় থেকে?  এটাই বাস্তবতা, শুনতে খারাপ লাগবে, কিন্তু সেটাই সত্য।’

তিনি বলেন, কল্যাণমূলক রাষ্ট্রে যেতে হলে এমন ব্যবস্থার মধ্যে যেতে হবে, যে ব্যবস্থায় নির্বাচিত প্রতিনিধিরা জনগণের অন্তত যে ন্যায়বিচার, সেই বিচারটা নিশ্চিত করবেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আসলে কাঠামোটা সংস্কার দরকার। আগে কাঠামোটাকে বদলাতে হবে এবং সেই কাঠামোতে এই বিষয়গুলোকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিচার করতে হবে।’

তিনি বলেন, আমাদের এই সিস্টেমটাকেই পরিবর্তন করতে হবে। বিচ্ছিন্নভাবে কোনো কিছু হবে না, জোড়াতালি দিয়েও কিছু হবে না। একটা সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য, লক্ষ্য, চিন্তাভাবনা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই গণঅভ্যুত্থানের পর যখনই আমরা নতুন করে রাষ্ট্র কাঠামো পরিবর্তন সংস্কার শুরু করেছি, তখনই তো বিবাদ শুরু করেছি তর্ক-বিতর্ক শুরু করেছি। ভালো কথা, তর্ক বিতর্ক তো হবেই গণতন্ত্রে যেতে হলে। কিন্তু এমন জায়গায় যাচ্ছি, মাঝে মাঝে যে জায়গায় গিয়ে হতাশা এসে যায়।’

তিনি বলেন, ‘আমি হতাশাবাদী কখনও ছিলাম না, আমি হতাশাবাদী হতেও চাই না। কিন্তু এটা তো সত্য কথা যে, হতাশ হতে হচ্ছে। আমি যখন একটা প্রগতিবাদী সমাজ দেখতে চাই, আমি যখন একটা মানুষের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করবার জন্য একটা সুষ্ঠু ব্যবস্থা চাই, আমি যখন জনগণের যে বৈষম্য তা কমিয়ে আনতে চাই, তার আর্থিক বৈষম্য কমিয়ে আনতে চাই, তখন যদি দেখি যে, সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে ভিন্ন চিন্তা করা হচ্ছে এবং মানুষের চিন্তাভাবনাগুলো ডাইভার্ট করার চেষ্টা করছে এবং একটা উগ্রবাদ ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, তখন তো হতাশা আসবেই।’

তিনি বলেন, ‘ আমরা যারা লড়াই করেছি, লড়াই করছি, করে চলেছি, আমাদের দায়িত্ব হবে যে, সত্যিকার অর্থেই জনগণের জন্য যেন আমরা কাজ করি, জনগণ কথাটা আমার কাছে খুব ভেগ মনে হয়। কারণ কোন জনগণ? কারা?’

তিনি বলেন, ‘সেটা কি সালমান এফ রহমান, এস আলম নাকি আমাদের কলিম উদ্দিন-সলিম উদ্দিন। ওই জায়গাগুলোতে আমাদের আসতে হবে আলোচনা করতে হবে। বাস্তবতার প্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান সাহেবরা যে কথা বললেন, সাধারণ মানুষরা যে কথা বলছে, ওই রিক্সাওয়ালা ভাইরা, যারা প্রাণ দিয়েছে, তাদের কথাবার্তা শুনে, যখন জনপ্রতিনিধিরা সত্যিকার অর্থেই জনগণের সমস্যার সমাধান করার জন্য আন্তরিক হবেন, সততার সঙ্গে কাজ করবেন, তখনই হয়তোবা আমরা কিছুটা ভালো পথ দেখতে পারব।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সব কিছু নির্ভর করছে যারা ক্ষমতায় যাচ্ছে তারা কিভাবে সেই দেশটাকে পরিচালনা করছে? আওয়ামীলীগকে তো যেনোতেনোভাবে ভোট দিয়েছিলো ২০০৮ সালে, তাই না? সেই আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে এই দেশকে সর্বশান্ত করে দিয়েছে। একেবারে বলা যায় যে বিধ্বস্ত করে দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সেই জায়গায় আপনি এক দেড় বছরে সব কিছু ঠিক করবেন এটা মনে করার কারণ নেই। তবে কাজ শুরু করতে হবে, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থেকে সবকিছুর ঊর্ধে উঠে অর্থাৎ দুর্নীতির উর্ধে উঠে আমাদের ভবিষ্যৎ তৈরি করার জন্য কাজ করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ পারে, বাংলাদেশের মানুষ ’৬৯ এ পেরেছে, বাংলাদেশের মানুষ ’৭০ এ পেরেছে, বাংলাদেশের মানুষ ’৭১ পেরেছে। না পারার কোন কারণ নেই।'

তিনি বলেন, আর সবশেষে যেটা ২০২৪ সালে পেরেছে এটা তো অভাবনীয়, অসাধারণ। সেই ক্ষেত্রে আমার মনে হয় যে, আমরা পারবো। আমাদেরকে সামনের দিকে ধৈর্য ধরে এগিয়ে যেতে হবে। এখন আমাদের যে সুযোগটা এসেছে, তাকে যদি কাজে লাগাতে পারি, কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারি, তাহলে হয়তো আমাদের যে অভ্যুত্থান হলো, সেই অভ্যূত্থানের কিছুটা মূল্যায়িত হবে এবং ছেলেরা যে প্রাণ দিলো তারও কিছু মূল্যায়ন হবে।’

সংগঠনের প্রধান বীথিকা বিনতে হোসাইনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, এনডিএমের ববি হাজ্জাজ, সাবেক এমপি রেহানা আক্তার রানু, অর্থনীতিবিদ এম মাসরুর রিয়াজসহ স্থানীয় পর্যায়ের কয়েকজন নির্বাচিত প্রতিনিধি বক্তব্য রাখেন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়