প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ উনার চোখে পড়ে না। উনার লন্ডন যেতে হয়। লন্ডনে গিয়ে সেজদা দিয়েছেন। সেজদার মাধ্যমে উনি আদেশ পেয়েছেন এবং সেখানে একটা প্রেসের মধ্যে জানিয়েছেন বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারিতে ইলেকশন হতে হবে। কোন সংবিধানের অধীনে ঠিক হয় নাই। আপনার সিজদা দিতে হবে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি।’
আজ শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর বাংলামোটরে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণপরিষদ নির্বাচন শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘বর্তমান বাংলাদেশের যদি সংকট নিরসন করতে হয় তাহলে এটার একমাত্র সমাধান গণপরিষদ নির্বাচন।’
এ সময় পাটোয়ারী বিভিন্ন দেশের গণপরিষদ নির্বাচনের উদাহরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ১৯৭৮ সালে ১৭ এপ্রিল একটি সামরিক ফরমান জারি করেছিলেন। সেই ফরমানে লেখা ছিল যে, বাংলাদেশে একটি গণপরিষদ গঠন করা যায় কি না। এটা গ্যাজেটেড ফরমান।’
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক আরও বলেন, ‘দেশ যদি স্থিতিশীল হয় তাহলে আমাদেরও একটি সংবিধান আপনি দিয়ে দেন। যদি আপনি দিয়ে দিতে না পারেন তাহলে আপনারও বৈধতা থাকবে না। কারণ আপনি যেই সংবিধানের ১০৬ এর মাধ্যমে আছেন আপনার বৈধতা খুঁজে পেতে আপনার অনেক কষ্ট হবে।’
তিনি অভিযোগ করেন, 'জুলাই ঘোষণাপত্র জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঘোষণা করা উচিত ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঘোষণাপত্র ঘোষণা করে জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে।'
বর্তমান সংকট নিরসনের একমাত্র পথ 'গণপরিষদ নির্বাচন' বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আমলা থেকে রাজনীতিবিদ হওয়া একজনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, 'আবু জাহেলরা বলেছে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন দিতে হবে। আবার কিছুদিন আগে বলেছিল ডিসেম্বরেই নির্বাচন দিতে হবে। মুখে এক, কাজে আরেক। তারা এত উলটো কেন? জিয়াউর রহমান নিজেও গণপরিষদের জন্য ফরমান জারি করেছিলেন। অথচ ওই মূর্খরা জিয়ার রাজনীতি করেও সেটি মুখে আনে না।'
পাটওয়ারী বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের মধ্য থেকে আমরা লড়াই করে যাব। এই ক্ষেত্রে এক চুল পরিমাণও আমরা ছাড় দিব না। আমাদের সামনে ভয় দেখানো হচ্ছে যে, তোমাদেরকে মেরে ফেলব, আরে আমরা তো মরে গেছি, কীভাবে মারবেন? এখন যদি মারেন তাহলে আপনিও মরে যাবেন, কারণ মৃত মানুষের কবরে ঢুকে যদি মারতে যান আপনিও কবরে পড়ে যাবেন।’
পাটওয়ারী বলেন, ‘আসুন নতুন যুদ্ধ শুরু হয়েছে। যেই যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা একটি নতুন সংবিধান তৈরি করতে হবে। সে লড়াইয়ে আপনারা যোগ দেন।’