শিরোনাম
◈ সরকার ও রাজনৈতিকদলগুলো দুই মেরুতে, কোন দিকে যাচ্ছে ক্ষমতার রাজনীতি ◈ প্রধান উপদেষ্টার জাপান সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ,  ১ বিলিয়ন ডলারের সহায়তার ঘোষণা আসবে  প্রত্যাশা করছি ◈ সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় নির্বাচনের রুপরেখার সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসায় হতাশ হয়েছে বিএনপি ◈ ‘এবারের হজযাত্রার এক অলৌকিক ঘটনা’ ◈ বিশ্বের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক, আনচেলত্তি ব্রা‌জি‌লের কোচ হিসা‌বে বছ‌রে বেতন পা‌বেন ১০৮ কো‌টি টাকা! ◈ একদিনে ডেঙ্গুতে ভর্তি ৭০, করোনা শনাক্ত ৬ ◈ দ‌ক্ষিণ আ‌ফ্রিকার বিরু‌দ্ধে বাংলা‌দে‌শের ইফতির দুর্দান্ত সেঞ্চুরি আর মইন খানের ৯১ ◈ পা‌কিস্তান - বাংলা‌দেশ টি-‌টো‌য়ে‌ন্টি সি‌রিজ বুধবার শুরু  ◈ দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ৬০৮ কোটি টাকায় এক কার্গো এলএনজি আনছে সরকার  ◈ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সংকট নিরসনে কমিটি গঠনসহ নানা উদ্যোগ সরকারের

প্রকাশিত : ১৭ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:২৭ রাত
আপডেট : ১৫ মে, ২০২৫, ০২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

স্বামীর দীর্ঘ ১৭ বছর পর মুক্তিতে যা বললেন লুৎফুজ্জামান বাবরের স্ত্রী

দীর্ঘ ১৭ বছর পর আদালতের রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া প্রকাশ করছি। যারা অন্যায়ভাবে তাকে সাজা দিয়েছিল, আজ তারা তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করছে।’

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) এভাবেই নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছিলেন লুৎফুজ্জামান বাবরের স্ত্রী তাহমিনা জামান শ্রাবণী। 

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বাবরের চাচাতো ভাই শিক্ষক মাহমুদুর রহমান মীর্জা বলেন, ‘যারা আমাদের বাবরকে সাজানো মামলায় ফাঁসির রায় দিয়েছিল, তারা আজ দেশছাড়া। তাদের জন্য আজ ঝুলছে ফাঁসির রশি। এটাই হচ্ছে ইতিহাসের নির্মম সত্য। ১৭ বছর কারাগারে রেখে মিথ্যা মামলায় ফাঁসির রায় সাজিয়েছিল। তারা আজ তাদের কর্মের ফল পেতে শুরু করেছে। আমাদের নেতা, আমাদের সন্তান এখন মুক্ত। আদালত তাকে সাজানো মামলা থেকে রেহাই দিয়েছেন।’

এর আগে দুপুর ১টা ৪৮ মিনিটে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে মুক্ত বাতাসে বের হন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। কারাগারের প্রধান ফটকে ভিড় করে এলাকার মানুষ তাকে অভ্যর্থনা জানান।

বাবরের মুক্তির খবরে নির্বাচনী এলাকাসহ নেত্রকোনায় মানুষের মাঝে দেখা গেছে উল্লাস। কৃষক, শ্রমিক, রিকশাচালক, শ্রমজীবী মানুষের মাঝে মুখে মুখে ভেসে বেড়াচ্ছে বাবরের মুক্তির খবর।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৫৮ সালের ১০ অক্টোবর নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল মদন উপজেলার বাড়িভাদেরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন লুৎফুজ্জামান বাবর। তার বাবা এ কে লুৎফর রহমান, মা জোবায়দা রহমান। বাবা ছিলেন একজন পুলিশ কর্মকর্তা। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে বাবর ছিলেন তৃতীয় সন্তান। ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

২০০১ সালে সংসদ সদস্য হওয়ার পর তিনি তৎকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। এরপর ২০০৭ সালের ২৮ মে গ্রেফতার হন বাবর। তখন থেকে গ্রেনেড হামলা, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলাসহ বিভিন্ন মামলায় জেলে ছিলেন লুৎফুজ্জামান বাবর। তবে এরইমধ্যে তিনি গ্রেনেড হামলা ও ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলাসহ সব মামলা থেকেই বেকসুর খালাস পেয়েছেন।

স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লুৎফুজ্জামান বাবর সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী থাকাকালে নিজ নির্বাচনী এলাকার মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরী ও মদন উপজেলাসহ জেলার সার্বিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। দলমত নির্বিশেষে বেকারদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছেন। এ কারণে তিনি পুরো জেলাবাসীর কাছে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জনগণের আস্থাভাজন ও প্রিয় হয়ে উঠতে পেরেছিলেন।

প্রিয় নেতার মুক্তির খবর ঢাকায় ছুটে গেছেন নেত্রকোনা সদরসহ তার নির্বাচনী এলাকার (মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরি) অন্তত ৩০ হাজার মানুষ। মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরীতে সড়কের বিভিন্ন স্থানে তৈরি করা হয়েছে তোরণ। তৃণমূল মানুষের মাঝে দেখা গেছে উচ্ছ্বাস।

স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাবরের মুক্তির খবরে নেত্রকোনা থেকে আড়াই শতাধিক বাস ও তিন শতাধিক মাইক্রোবাসে করে ঢাকার কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ জড়ো হন। এছাড়া গণপরিবহনে ঢাকায় পৌঁছেছেন হাজার হাজার লোক।

নেত্রকোনা জেলা শহরের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী ও জেলার মদন উপজেলার নায়েকপুর গ্রামের আব্দুল্লাহ খান বলেন, ‘জীবনের ১৭টা বছর তাকে কে ফিরিয়ে দেবে? তাকে যারা মিথ্যা মামলা দিয়ে হত্যা করতে চেয়েছে, তাদের বিচার কে করবে? আমাদের মতো গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষকে তিনি অত্যন্ত মূল্যায়ন করতেন। দল-মত নির্বিশেষে তিনি সবার কথা শুনতেন। তার কাছে গিয়ে কাউকে কোনো দিন খালি হাতে ফিরে আসতে হয়নি। তার সময়ে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তাই তিনি সাধারণ মানুষের প্রিয় নেতা।’

মদন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম আকন্দ বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রিয় নেতাকে বরণের জন্য উন্মুখ হয়ে আছি। অন্তত ৫০ হাজার মানুষ ঢাকায় এসেছে তাকে বরণ করতে। নেতাকে বরণ করতে হাওরাঞ্চল মানুষ এসে ঢাকাকে জনসমুদ্রে পরিণত করেছে।’

নেত্রকোনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. আনোয়ারুল হক বলেন, পতিত স্বৈরাচার সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা ভাটিবাংলার নন্দিত নেতা লুৎফুজ্জামান বাবরকে নানাভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করেছেন। দীর্ঘ ১৭ বছর কারাগারে রেখেছেন। ফাঁসির দণ্ড দিয়ে হত্যার চেষ্টা করেছেন কিন্তু পারেননি। বরং স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। আজ তিনি মুক্ত হয়েছেন। আশা দেশ ও মানুষের জন্য আবারও কাজ করবেন। উৎস: জাগোনিউজ২৪

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়