রাহমান চৌধুরী: ফাল্গুনের বিশেষ দিনটিতে শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দেওয়া কিংবা সকালের প্রভাতফেরীতে উপস্থিত থাকা, বাংলাদেশে ভাষা আন্দোলন দিবসটির গুরুত্ব তার চেয়ে বেশি কী? বাংলাদেশের সর্বস্তরের শিক্ষার বাহন বাংলা নয়। শিক্ষা ব্যবস্থায় বাংলার চেয়ে ইংরেজি মাধ্যমের গুরুত্ব বেশি। বিভিন্ন দূরদর্শনের অনুষ্ঠানের নাম ইংরেজিতে। ভদ্রলোকরা কথা বলেন ইংরেজিতে, লেখেন বেশির ভাগ ইংরেজিতে। বাংলায় যারা লেখেন তাঁদের রচনায় অজস্র সাধারণ বানান পর্যন্ত ভুল। কার উদ্দেশ্য এবং কী উদ্দেশে এই অজস্র ফুল দেওয়া হচ্ছে যদি সর্বক্ষেত্রে বাংলা ভাষার মর্যাদা না দেওয়া গেলো?
বাংলা ভাষাকে সম্মান না দেখিয়ে এই প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি দিবস পালনের পেছনে আবেগের লক্ষ্যটা কী? এটা কি নিজের সঙ্গে প্রতারণা? শহীদরা কি প্রাণ দিয়েছিলেন ফুলের মালা পাবার জন্য, নাকি বাংলা ভাষাকে সর্বস্তরে চালু করার জন্য। যতক্ষণ পর্যন্ত না সর্বক্ষেত্রে বাংলা ভাষা গুরুত্ব পাবে, যতক্ষণ না বাংলাদেশের সকল প্রকার শিক্ষার মাধ্যম বাংলা হবে, ততোক্ষণ পর্যন্ত ভাষা আন্দোলন দিবস পালন করাটা রাষ্ট্রের দিক থেকে চূড়ান্তভাবে শহীদদের অসম্মান করা। তাঁদের প্রাণ দেওয়ার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার নামান্তর। আর আমরা? মাতৃভাষার প্রতি আমাদের আবেগের বাড়াবাড়ি আছে, কিন্তু মাতৃভাষার প্রতি সামান্য সম্মান নেই। লেখক : শিক্ষক
আপনার মতামত লিখুন :