শিরোনাম
◈ পিআর পদ্ধতি কী, কেন প্রয়োজন ও কোন দেশে এই পদ্ধতি চালু আছে?" ◈ ইসরায়েলি হামলায় ৪৩৭ ফুটবলারসহ ৭৮৫ ফিলিস্তিনি ক্রীড়াবিদের মৃত্যু ◈ পশ্চিম তীরে দখলদার ইসরায়েলিদের সাথে তাদেরই সেনা জড়ালো সংঘর্ষে! (ভিডিও) ◈ আমদানি-রপ্তানিতে এনবিআরের নতুন নিয়ম: বাধ্যতামূলক অনলাইন সিএলপি দাখিল ◈ জুলাই স্মরণে শহীদ মিনারে ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্বলন (ভিডিও) ◈ জুলাই বিদ্রোহ: কোটা সংস্কার থেকে গণঅভ্যুত্থান ◈ ভারতের বাংলাদেশ সফর নিয়ে যা বললেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল ◈ ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, ক্যাডার পদে মনোনয়ন পেলেন ১৬৯০ জন ◈ ১৮ জুলাই নতুন দিবস ঘোষণা ◈ ডিসি-এসপি কমিটি ও ইভিএম বাদ, ভোটকেন্দ্র স্থাপনে নতুন নীতিমালা জারি করলো ইসি

প্রকাশিত : ২৬ মে, ২০২৩, ০৩:০৪ রাত
আপডেট : ২৬ মে, ২০২৩, ০৩:০৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নজরুল সংগীতের শিল্পী, বাংলাদেশে

আহসান হাবিব

আহসান হাবিব: নজরুল যা কিছু সৃষ্টি করেছেন, সংগীত তার মধ্যে সেরা। নজরুল নিজেও একথা জানতেন। এবিষয়ে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তার মিল আছে। উভয়েই বলে গেছেন বাঙালিকে তাদের গান গাইতেই হবে। বাঙালি তাদের গান গাইছে। না গেয়ে উপায় নেই, কেননা তাদের মতো এতো বিচিত্র ধারায় আর কোনো সংগীতকার বাঙালির জীবনকে ধরতে পারেননি। বাঙালি সংস্কৃতির দুই শ্রেষ্ঠ রূপকার সন্দেহাতীত রবীন্দ্রনাথ এবং নজরুল। 

বাংলাদেশ নজরুলকে জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়েছে। তার ‘চল চল চল ঊর্ধ্বে গগনে বাজে মাদল’ গানটি সামরিক সংগীত হিসেবে গীত হয়। সংগীতবিমুখ মুসলমান সম্প্রদায়ের যে কোনো উৎসব নজরুলের গান ছাড়া পূর্ণতা পায় না। নজরুল সংগীতের চর্চাও সম্ভবত আগের চেয়ে বেড়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে মতভেদ থাকতে পারে।

নজরুলকে নিয়ে এই যে উৎসাহ, বিশেষত তার সংগীত নিয়ে, লক্ষ করলে দেখি বাংলাদেশে নজরুল সংগীতের কোনো একজনও কালজয়ী কোনো শিল্পী নেই যার কণ্ঠে এই সংগীতে সংগীতবোদ্ধা থেকে গণমানুষ বুঁদ হতে পারে। আজো নজরুল সংগীতের শ্রেষ্ঠ শিল্পী বলতেই বুঝি আঙুরবালা, কমলা ঝরিয়া, জ্ঞানেন্দ্রপ্রসাদ গোস্বামী, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। নজরুল সংগীত করেন এমন বাংলাদেশের কোনো শিল্পীকে তাদের মাপে ফেলা কি সম্ভব?

আমার বিবেচনায়- সম্ভব নয়। কেন এমন বড় মাপের অন্তত একজন শিল্পী বাংলাদেশে তৈরি হলো না? প্রধান কারণ মুসলিম সম্প্রদায় সংগীতবিরোধী। এখানে সংগীত করা হয় মানসিক একটা প্রতিবন্ধকতা নিয়ে। ফলে সংগীতের মতো একটি কঠিন শিল্পকে আয়ত্তাধীন করার জন্য যে দীর্ঘ সাধনা, তা তাদের মন থেকে সম্পূর্ণ সাড়া এবং উদ্যোগ পায় না। যতটুকু পায়, তা দিয়ে গান গাওয়া চলে, কিন্তু কিংবদন্তী হওয়া যায় না। দ্বিতীয় কারণ হলো নজরুল সংগীত গাইতে হলে রাগ সংগীতের উপর যে দখল অর্জন করতে হয়, তা বাংলাদেশে তৈরি করা সম্ভব নয়, কারণ এখানে বড় মাপের কোনো সংগীতজ্ঞ নেই যিনি বড়মাপের শিল্পী তৈরি করতে সক্ষম। এখানে কোনো সংগীত ইন্সটিটিউশন গড়ে ওঠেনি। এখানে যে সমস্ত গানের স্কুল আছে, সেসব নামকাওয়াস্তা, তারা গানের প্রাথমিক স্তরও অতিক্রম করতে পারেনি। 
যে দু’একজন সংগীতজ্ঞের নাম শুনি, তারা ভারত থেকে শিক্ষাপ্রাপ্ত এবং তাদের গান শুনলে আধাআধি শিক্ষিত মনে হয়। একটি খেয়াল গান গাওয়ার যে প্রস্তুতি কিংবা দখল থাকা দরকার, তার কিছু অংশ তাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়। রাগসঙ্গীতের যে বিকাশ এবং তার রূপকার হিসেবে ভারতের দিকে তাকানো ছাড়া কোনো উপায় নেই। অথচ নজরুল সংগীত গাইতে হলে দরকার রাগসঙ্গীতের উপর পূর্ণ দখল। আর নজরুল সংগীত যেহেতে গীতিকবিতা, শিল্পীকে সাহিত্যের নন্দনতত্ত্বে সামান্য হলেও জ্ঞান থাকতে হবে। সুর এবং কথার মেলবন্ধনে রচিত নজরুল সংগীত গাওয়া কোনো সংগীত অশিক্ষিত মুর্খের দ্বারা সম্ভব নয়। নজরুল সংগীত অনেকেই করেন, কিন্তু সংগীতের বিবেচনায় তারা সকলেই মাঝারি মানের শিল্পী। জ্ঞানেন্দ্রপ্রসাদ কিংবা মানবেন্দ্রের যে কোনো একটি গানের পাশাপাশি বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ নজরুল শিল্পীর গান শুনে দেখুন, পানসে লাগবে। মনে হবে প্রাথমিক স্তরেই এদের অবস্থান আটকে গেছে। আর কি হবে এমন একজন আন্তর্জাতিক মানের শিল্পী যিনি নজরুলের গানকে উচ্চতর আসনে অধিষ্ঠিত করতে পারবেন? বাংলাদেশ তাকে নিয়ে গর্ব করবে যেমন আধুনিক গানের বেলায় করে সাবিনা, রুনা, শাহনাজ, ফেরদৌসিকে নিয়ে?
 লেখক: ঔপন্যাসিক

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়