শামসুদ্দিন পেয়ারা: সৎভাবে সম্মানের সঙ্গে জনহিতৈষী সুন্দর জীবন যাপনের জন্য শিক্ষকতা ও সাংবাদিকতার চেয়ে মহৎ, মর্যাদাশীল ও গৌরবের আর কোনো পেশা নেই। এই দু’টো পেশাতেই এক শ্রেণির অসৎ দুর্বৃত্ত ও সুবিধাবাদী চক্র নিজেদের রাজনৈতিক পরিচয় (অধিকাংশ ক্ষেত্রে যৎকালে তৎদেবতা) ও শাসকমহলের সঙ্গে অনৈতিক যোগসাজসের মাধ্যমে কেবলমাত্র নিজেদের আর্থিক ও বৈষয়িক তরক্কি সাধনের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার লক্ষ্যে দুর্নীতি ব্যক্তি তোষণ ও দুষ্ট রাজনীতির এমন এক পরিমণ্ডল তৈরি করে রেখেছে যে দুর্লঙ্ঘ্য প্রাচীর বর্তমান শাসনব্যবস্থায়Ñ শুধু শেখ হাসিনা নয়, খালেদা জিয়া বা অন্য কারো শাসন প্রতিষ্ঠা হলেও অতিক্রম করা কারো পক্ষে কখনো কোনোক্রমেই সম্ভব হবে না।
ঔপনিবেশিক শাসন অব্যাহত রাখা ও সমাজে বিত্তশালী দুর্বৃত্তদের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পথ নিষ্কণ্টক করার নিশ্চিত উপায় হিসাবে এদেশবাসীর উপর চাপিয়ে দেওয়া গণতন্ত্র নামের এই ব্রিটিশ পার্লামেন্টারি পদ্ধতির (এক ভোটের মেজরিটি) জোয়াল এদেশবাসীর ঘাড়ে এমনভাবে চেপে বসেছে এবং এর সুযোগ নিয়ে গত কয়েক দশকে রাজনৈতিক ও দুর্বৃত্ত লুটেরা শ্রেণি এমনভাবে সমাজের উপর তাদের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছে যে প্রচলিত কোমল-বিরোধিতা, দিনে বিরোধিতা ও রাতে লেফাফা গ্রহণ, মিটিং-মিছিল, বক্তৃতা-বিবৃতি, দলবাজি ও ব্যালটের মাধ্যমে এই কঠিন চোরাবালি থেকে উদ্ধার পাওয়া সম্ভব নয়।
‘গণতান্ত্রিক স্বৈরতন্ত্র’ তথা ‘নির্বাচিত একনায়কতন্ত্র’ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য দরকার সর্বস্তরের জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে চালিত একটি সর্বব্যাপি ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যাভিমুখি গণতান্ত্রিক সমাজবিপ্লব। শিক্ষাব্যবস্থা ও সাংবাদিকতার বর্তমান হাল বিরাজমান নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির দু’টি দৃষ্টান্তমাত্র। লেখক: মুক্তিযোদ্ধা ও সিনিয়র সাংবাদিক
আপনার মতামত লিখুন :