শিরোনাম
◈ পঞ্চগড় এক্স‌প্রেস ট্রেনের ব‌গি চার ঘণ্টা পর উদ্ধার, ট্রেন চলাচল স্বাভা‌বিক ◈ বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা ◈ সীমান্তে হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকার টু শব্দ করার সাহস পাচ্ছে না: বিএনপি ◈ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে সোমালিয় পুলিশ ও বহুজাতিক নৌবাহিনী ◈ পঞ্চগড় এক্সপ্রেসের বগি লাইনচ্যুত, ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ◈ জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ডিবিতে অভিযোগ করলেন জবি ছাত্রী ◈ ঈদের পর কাওরান বাজার যাবে গাবতলীতে: মেয়র আতিক ◈ আবদুল্লাহ জাহাজে থাকা কয়লায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি নেই: এস আর শিপিং ◈ পাপেট সরকার ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত সব নির্বাচন ত্রুটিপূর্ণ বলবে যুক্তরাষ্ট্র: জয়  ◈ চট্টগ্রামের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হতে তিন দিন লাগতে পারে: রেল সচিব

প্রকাশিত : ২৭ নভেম্বর, ২০২২, ০৩:২৯ রাত
আপডেট : ২৭ নভেম্বর, ২০২২, ০৩:২৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মানব ইতিহাসের সূচনা লগ্ন, ১৩ হাজার বছর পূর্বে

অধ্যাপক ডা. মো. তাজুল ইসলাম

অধ্যাপক ডা. মো. তাজুল ইসলাম: মানব ইতিহাসের সূচনা লগ্ন ধরা হয় খ্রীস্টপূর্ব ১১ হাজার সালকে (এখন থেকে ১৩ হাজার বছর পূর্বে)। [১] মেরু অঞ্চল থেকে তখন বরফ ছড়িয়ে পড়েছিল দক্ষিণে এবং তা ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত চলে এসেছিল। [২] পারস্য সাগরের উত্তরের অংশটি তখন ছিল একটি সমভূমি, যার মাঝে ছোট ছোট খালবিল প্রবাহিত হতো। [৩] বর্তমানের ‘কাতার’ এর সঙ্গে সংযুক্ত সমতল ভূমিটি ছিল তখনকার ‘সমুদ্র তট’- নিয়মিত বৃষ্টির জন্য সে ভূখণ্ড সর্বদা আর্দ্র থাকতো। [৪] বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়তে থাকলে বরফগুলো গলতে শুরু করে এবং এটি চলে দীর্ঘ । [৫] হাজার বছর ধরে (খ্রীস্টপূর্ব ১১০০০ থেকে ৬০০০)। ফলে সাগরের উচ্চতা বৃদ্ধি পায়ও পানি কাতার পেরিয়ে বাহরাইন পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। এভাবে পানির নীচে অনেক জনবসতি তলিয়ে যায়। [৬] ৮ হাজার বছর পূর্বে ব্রিটেন ইউরোপের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে একটি ‘ দ্বীপ রাস্ট্রে’ পরিনত হয় এবং পারস্য উপসাগরের ব্যাপ্তি কুয়েতের দক্ষিণ সীমান্ত পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। [৭] কুয়েতের উত্তরে অবস্থিত সমতল ভূমি বেশ কয়েকটি নদীপথের কারনে আদ্র ও উর্বর ভূমি হয়েছিল। বুক অব জেনেসিস (বাইবেল) ও বর্নিত আছে এই সমতল ভূমি দিয়ে বয়ে যাওয়া ‘চার মাথাওয়ালা’ একটি নদীর কথা। [৮] তবে ধীরে ধীরে এটি শুষ্ক হতে থাকে। বরফ তিরোহিত হওয়ার কারণে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে, বৃষ্টি কমে যায়- শুরু হয় মরুভূমির। [৯] এদিকে দক্ষিণের সমতল ভূমির বাসিন্দারা (সুমেরীয়রা) ভূবৈচিত্রের সঙ্গে সংগ্রাম করছে। বছরে একবার তাদের জমি পানিতে প্লাবিত হতো, আবার বন্যা কমে গেলে মাটি শুকিয়ে যেতো। তাদের না ছিল পাথর, না কাঠ, না ছিল বনভূমি বা গবাদি পশু পালনের জন্য বনভূমি। [১০] তবে তাদের ছিল প্রচুর নলখাগড়া যা নদীর তীরে জন্মাত আর ছিল প্রচুর কাদামাটি। ঢালাই করা শুষ্ক কাদার সাথে নলখাগড়া মিশিয়ে সেটিকে উচ্চ তাপে।

 [১১] এই ইট দিয়ে তারা ঘরবাড়ি, শহরের প্রাচীর, ঘটিবাটি ও বাসন-কোসন বানাতো তারা আসলেই ছিল, ‘মাটির মানুষ’। [১২]  প্রথমে ‘সুমেরীয়’ ভাষার সঙ্গে অন্য কোন ভাষার সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু পরে ‘সেমেটিক’ ভাষার শব্দ এতে ঢুকে পড়ে। [১৩] তার মানে উত্তরের সমতল ভূমিতে শুধু ‘সুমেরীয়রা’ ছিল না, ছিলো দক্ষিণ পশ্চিমের ‘মেসোপোটেমিয়ারা’ (বর্তমান ইরাক)। [ ১৪] সেমেটিকরা সুমেরীয়দের সঙ্গে এসে মিশেছিল এবং তাদেরকে নিজেদের ভাষার শব্দাবলী ধার দিয়েছিল। [ ১৫] শুধু ভাষা নয়, সেমিটিকরা (ইরাকিরা) চাষাবাদের বিভিন্ন প্রক্রিয়া- ঝুড়ি বানানো, চামড়া ও কাঠের কাজ- ইত্যাদি শিখিয়েছিল।

[১৬] সেমাইটদের কাছ থেকে শিখে নিয়ে সুমেরীয়রা তাদের গ্রামের চারপাশে ফসলের বীজ বপন করে। তখন তাদের একজন ‘রাজার’ প্রয়োজন হয় সবকিছু সমাধানের জন্য। তাছাড়া কেউ যাতে বেশি খাদ্য নিয়ে না যায়, সবাই মিলেমিশে যেন পানি সংরক্ষণ ও খালবিল খনন করে- এসবের জন্যও প্রয়োজন ছিল ‘রাজার’। [ ১৭] তাই তাদের প্রাচীন শহর ‘এরিদুতে’ আসেন রাজা ‘আলুলিম’। [ ১৮] ২ হাজার ৩ শত বছর পূর্বেকার পাওয়া ‘শিলালিপিতে’ (কাদা মাটির ট্যাবলেট- বা কিইনিফর্মে) লেখা ছিল যে ‘একটি মহাপ্লাবনের’ আগে সেখানে ৮ জন রাজা রাজত্ব করতেন (মজার ব্যাপার তারা প্রত্যেকে নাকি ৩ হাজার বছর করে রাজত্ব করতেন, এমনকি রাজা আলুলিম নাকি ২৮ হাজার বছর রাজত্ব করেছেন)। মনে হয় ওই রাজা ‘আলুলিম’ ছিলেন উপদেবতা বা দূরবর্তী ‘অতীতের রাজা’। বলা হয় রাজা ‘আলুলিম’ থেকে প্রাচীন সভ্যতার শুরু (১৩ হাজার বছর আগে) তাদের শহর ছিল ‘এরিদু’। [ ১৯] স্বর্গ থেকে নেমে আসলো রাজত্ব ‘এরিদু’ শহরে। যার বিবরণ ব্যাবলনীয় পৌরাণিক কাহিনিতেও পাওয়া যায় ‘সকল ভূমি সমুদ্রে নিমজ্জিত ছিল যখন এরিদু নির্মিত হয়েছিল মারদুক (ঈশ্বর রাজ) নির্মাণ করেছিলেন একটি নলখাগড়ার ভিত্তি...

[২০] বাইবেলের ‘ইডেন’ হারিয়ে গেলেও ‘এরিদু’ কখনো হারিয়ে যায়নি। এই শহর দাড়িয়েছিল শিকারী ও আহরনকারীদের বিভাজক হিসেবে। [২১] সুমেরীয়দের ৫ম রাজা ছিলেন ‘দুমিজি’- তিনি ছিলেন একজন ‘মেষপালক’। ‘উইং অব ইনান্না’ গল্পে বলা হয় দেবী ‘ইনান্না’ দুমিজিকে তার যোগ্য মনে করেননি। সূর্য দেবতা যখন ইনান্নাকে বলেন ‘মেষপালক তোমার সাথে বিছানায়’ যাবে তখন ইনান্না অস্বীকার করেন এই বলে যে ‘তার কাপড় চোপড় অমার্জিত’ এরচেয়ে বরং আমি ‘চাষীকে বিয়ে করবো যে আমার পোশাকের জন্য শন উৎপাদন করে,খাবার জন্য যব উৎপাদন করে’। কিন্তু দুমুজি হাল ছাড়েন না। তিনি টাটকা দুধ ও ননি উপহার দিয়ে ইনান্নাকে রাজি করান। [২২] কিন্তু তারপরেও ইনান্নার অনুরোধ ‘আমার রুক্ষ জমিতে লাঙ্গল ফলাও’ মানে চাষাবাদ করো এতে কৃষির প্রতি আগ্রহ বোঝা যায়। এই শহর, রাজা, কৃষক ও যাযাবরদের দেশে পরপর ৮ রাজা রাজত্ব করেন- ‘মহাদুর্যোগ’ হানার আগ পর্যন্ত (সে মহাপ্লাবনের কথা পরবর্তী পর্বে)। লেখক: মনোবিদ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়