অর্জয়িতা রিয়া: নারীদের পোশাকের স্বাধীনতা নিয়ে যে আন্দোলন চলতেছে, আমি তার পক্ষে। কিন্তু আন্দোলন করতে গিয়া নারীবাদীরা যেইটা করতেছেন, ব্যক্তির পোশাকের স্বাধীনতার সঙ্গে অন্যে তাকে দেখে সিডিউস হবে কী হবে না সেইটাকে এক করে দেখতেছেন। এইটা স্ট্যান্ড হিসেবে প্রবলেমেটিক। কাউকে দেখে সিডিউস হওয়াতে সমস্যা নাই, তা ব্যক্তির ভিতরকার বিষয়। কাউকে যেমন ভালো লাগে, তেমনি কাউকে দেখে যৌন আকাক্সক্ষা হয়। সমস্যা তখনই, যখন কেউ তা ভুল পরিস্থিতিতে ও ভদ্রতা বজায় না রেখে প্রকাশ করে। প্রকাশটা অন্যের প্রাইভেসি নষ্ট করার সমস্যা, উত্তেজিত হওয়াটা না। ‘এই দেইখা কেন সিডিউস হবা’! ওই দেইখা কেন সিডিউস হবা। মানে এই ওই দেইখা সিডিউসড হওয়া যাবে না? তাইলে ঠিক কী দেইখা বা কখন সিডিউসড হইতে পারবেন একজন নারী বা পুরুষ? উভয়ের সম্মতি থাকলে? মানে, মেয়ের কনসেন্ট থাকলেই কেবল আপনি তার ব্রা’র স্ট্র্যাপ দেখে উত্তেজিত হইতে পারবেন, নাইলে আপনি পারভার্ট এই তো? এখানে রক্ষণশীলদের সঙ্গে নারীবাদীদের তফাৎ কই?
রক্ষণশীলরা যেমন যার যার ধর্মের নামে, বিয়া পড়াইয়া নারী-পুরুষের যৌন সম্পর্ককে লিগালাইজ করে, নারীবাদীরা ঠিক তাই করতেছেন কখন কে উত্তেজিত হইতে পারবে, তা ঠিক কইরা দিতে চাইয়া। নারীবাদীদের এই স্ট্যান্ডের ক্ষতিকর দিক হইলো তা নারী পুরুষের যে সম্পর্ক বা পারস্পরিক যৌনতার যে ধারণা, তার বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। অন্যের কখন কাকে দেইখা, কী দেইখা যৌন উত্তেজনা হবেÑ তা ঠিক করার অধিকার আমার-আপনার নাই। বরং কেউ যাতে এই উত্তেজনা প্রকাশ করতে চাইয়া অন্যকে অসম্মান করতে না পারে, অন্যের ওপর অন্যায় করতে না পারে সেইটা আমাদের দেখার বিষয়। কিন্তু নারীবাদীরা যে নারীবাদের নামে যেকোনো কিছুই খাওয়াইতে পারতেছে মানুষকে, এমনকি রক্ষণশীলদের চিন্তা ভাবনাও, এইটা আপনি ঠেকাবেন কীভাবে? তাদের বিরুদ্ধে আপনি দাঁড়াইতে পারেন না। কারণ তারা সবসময় ‘নারীবাদী মাত্রই নারীর কল্যাণে’ এমন একটা লেবাস নিয়া থাকে। লেবাস নিলেও আমাদের মনে রাখতে হবে, নারীবাদী মাত্রই সঠিক, বিষয়টা এমন না। এই ইস্যুতে যেমন নারীবাদীরা রক্ষণশীলদের হইয়া কাজ করলেন, আসলে তারা নিজেরাই রক্ষণশীল হইলেন। ফেসবুক থেকে