শিরোনাম
◈ এক কোরালের দাম ২০ হাজার টাকা! ◈ এবার ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ মোদির বিজেপির, ফাটলের ইঙ্গিত যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের সম্পর্কে ◈ বিশ্বকে বার্তা: দেশের স্বার্থে সবাই ঐক্যবদ্ধ ◈ বেক্সিমকোর লোকসানি কোম্পানি বিক্রি করে দেবে সরকার ◈ গুলি করে হত্যার পর বাংলাদেশির মরদেহ ফেরত দিল বিএসএফ ◈ অন্তর্বর্তী সরকার ব্যর্থ হলে দেশে বড় বিদ্রোহ হবে: জ্বালানি উপদেষ্টা (ভিডিও) ◈ কলকাতা মিশনে ভারতীয়দের জন্য ভিসা সীমিত করল বাংলাদেশ ◈ গ্লোবাল সুপার লিগের ফাইনালে রংপুর রাইডার্স ◈ ভারত যেতে না করলে বাংলাদেশিরাও ভারতে যাবে না: উপদেস্টা সাখাওয়াত হোসেন ◈ আইনজীবী সাইফুল হত্যা মামলায় আরেক আসামি আটক

প্রকাশিত : ১১ জুলাই, ২০২৪, ১২:৩৬ রাত
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বিসিএস সমাচার

মো. সামসুল ইসলাম

মো. সামসুল ইসলাম: পিএসসির প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে সারাদেশে হৈচৈ। কারা, কীভাবে ক্যাডার বা নন-ক্যাডারের চাকরি পেয়েছেন সেসব প্রশ্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠছে। তবে বিসিএস নিয়ে আমার পুরনো স্মৃতি মনে পড়লো। মাস্টার্সের কিছুদিন পরেই আমি ফরেন মিনিস্ট্রির রিসার্চ অরগানাইজেশনে চাকরি পেয়ে যাই। প্রথম শ্রেণির সরকারি চাকরি। ক্যাডার সার্ভিসের সমান বেতন। ঢাকায় অফিস। কোনো বদলি নেই। সুতরাং বিসিএসের চাকরিতে আমার তেমন কোনো আগ্রহ ছিল না। আমাদের সময়ে বিসিএসে এখনকার তরুণদের মতো কারো  আগ্রহ ছিল না। তখন বিসিএস ক্যাডারদের শুরুতে এখনকার মতো এতো সুযোগ-সুবিধা ছিল না। ঢাকার বাইরে থেকে অনেকেই অর্থকষ্টে ভুগতেন। 

কিন্তু বন্ধুবান্ধবদের কেউ কেউ দিচ্ছে দেখে আমি বিসিএস দেওয়া মনস্থ করলাম। তখন এপ্লাই করার সময় ৫টা ক্যাডারের চয়েজ দিতে হতো। আমি একটা চয়েজ দিলাম। সেটা হচ্ছে ফরেন সার্ভিস। এডমিন, পুলিশ, ট্যাক্স ইত্যাদি আমার পছন্দের চাকরি ছিল না। যাহোক প্রিলিমিনারিতে টিকলাম। তারপর লিখিত বেশ ভালো হলো। আমি জেনারেল ম্যাথসে বেশ ভালো ছিলাম। এসএসসিতে ৯৩ এর উত্তর দিয়ে ৯৩ পেয়েছিলাম। সুতরাং কোনো অসুবিধা হলো না কোথাও। ভাইভায় ডাক পেলাম। তখন খালেদা জিয়ার আমল। পিএসসি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের ফিসফাস শুনতাম। যেমন কেউ কেউ তাদের মার্কস জানছে। কিন্তু আমি এসব ব্যাপারে  খুব একটা কান দিইনি। যেহেতু আমি সরকারি চাকরি করছি, আমার সেই সময়ও ছিল না। তারপর এলো সেই অভীষ্ট দিন। আমি ভাইভায় ডাক পেলাম। আমি সরকারি চাকরিতে থাকার সুবাদে ততোদিনে স্যুট-কোটে বেশ অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি। স্যুট-কোট পরেই ইন্টারভিউতে ঢুকলাম। রুমে ঢুকে বসতে না বসতেই তাদের প্রথম প্রশ্ন তোমার পিতার নাম কী? নাম বললাম। তারা চিৎকার করে উঠলেন। আমি আমার বাবার নাম ভুল বলেছি। আমি রীতিমতো হতভম্ব হয়ে গেলাম। তাহলে আমার বাবা কে? আমি আমার বাবাকে চিনি না। আমি বললাম, কী ভুল আছে? তারা বক্রোক্তি শুরু করলেন। অনেক ঘুরিয়ে পেচিয়ে তারা যেটা বললেন, সেটা হলো যে আমি আমার বাবার নামের শুরুতে জনাব বা মি বলিনি। এর মাধ্যমে আমি তাকে নাকি অসম্মান করেছি। 

আমি তো হতভম্ব। এটা একটা ইস্যু হতে পারে চিন্তাও করিনি। তারপর তারা যখন দেখলেন আমার চয়েজ একটা তখন আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলেন। তাদের আলাপে বুঝলাম সেখানে দুইএকজন অন্য ক্যাডারের লোক। আমি একটা চয়েজ দিয়ে স্পর্ধা দেখিয়েছি এরকম কথাও বললেন। আমি অন্যদের নাকি এতে অপমান করেছি। এরকম চলতে থাকল। বাবার নাম কাণ্ডের পর আমি কিছুটা খেই হারিয়ে ফেলেছিলাম। তারপরও চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম সঠিক উত্তর দিতে। কোনো একটা বিষয় নিয়ে বোধহয় সংক্ষিপ্ত স্পিচ দিতে বললেন। তারপর আমার টাই নিয়ে উদ্ভট কিছু প্রশ্ন করলেন। টাই পরা তারা পছন্দ করেননি। ছোটবেলায় আমরা বন্ধুরা একে অপরকে বিপদে ফেলার জন্য উদ্ভট সব ট্রান্সলেশন জিজ্ঞেস করতাম। জিজ্ঞেস করতাম বলো-হাঁটিতে হাঁটিতে তাহার লুঙ্গি খুলিয়া গেলো-এর ইংরেজি কী? এই টাইপের বিপদে ফেলার জন্য কিছু ইংরেজি জিজ্ঞেস করা হলো আমাকে। এবং ভাইভা শেষ হলো। ইন্টারভিউতে আমি হতাশ ও বিরক্ত হলাম। 

ইন্টারভিউতে তাদের প্রথম থেকেই hostile মনে হয়েছে। ফরেন সার্ভিসের ক্যান্ডিডেটদের এরকম প্রশ্ন করা হতে পারে, তা আমার ধারণাতেও ছিল না। কিছু বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্ন আশা করেছিলাম। সুতরাং আমি বুঝে গিয়েছিলাম তারা আমার প্রতি আগ্রহী হবেন না। রেজাল্টেও তাই দেখা গেলো। তারপর যারা চাকরি পেলেন, তাদের কাউকে কাউকে চিনতাম। খুব সাধারণ মানের ছাত্র। ফার্স্ট ক্লাস পাওয়া না। অন্যত্র আমরা একই চাকরিতে পরীক্ষা দিয়েছিলাম। আমরা চাকরি পেয়েছি, কিন্তু তারা পায়নি। অথচ ফরেন সার্ভিসে চান্স পেয়ে গেলো। আমি ভেবেছিলাম হয়তো কোটায় সুযোগ পেয়েছে। ড্রাইভার প্রশ্ন ফাঁস করছিল, এটা শোনার পর আমার মনে বিসিএস নিয়ে অনেক প্রশ্নের জন্ম হয়েছে। শুধু  ড্রাইভার আর গুটিকয়েক কর্মকর্তা জড়িত আমি তা বিশ্বাস করি না। গত কয়েক দশকের সবকিছু নিয়ে তদন্ত হোক, সেটাই চাই। লেখক: কলামিস্ট, বিভাগীয় প্রধান, সাংবাদিকতা বিভাগ, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়