শিরোনাম
◈ পানি নিয়ে পাকিস্তানকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেন নরেন্দ্র মোদি ◈ এবার শাহবাগ ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় অবরোধ করলো ছাত্রদল, তীব্র যানজট ◈ উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের পদত্যাগ দাবি করলেন রিজভী (ভিডিও) ◈ ‘রায়ের পরও ইশরাককে শপথ না পড়ালে আদালত অবমাননা হবে’ ◈ আদর্শগত বিভাজনে বিভক্ত এনসিপি, কমছে জনসমর্থন! ◈ ডিজিএফআই'র সাবেক মহাপরিচালকের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা ◈ আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা ও নিবন্ধন বাতিল ‘গণতন্ত্রের জন্য হুমকি’—হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ◈ লঘুচাপের আভাস সাগরে, রূপ নিতে ঘূর্ণিঝড়ে ◈ পুশ ইন প্রসঙ্গে দিল্লিকে চারবার চিঠি, শেষ চিঠিতে যা বলেছে ভারত ◈ উচ্চ আাদালতের রায়ে জনগনের বিজয় হয়েছে, জনগনের স্বস্তির জন্য তারা রাস্তা থেকে সরে যাবেন : মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত : ০৭ মে, ২০২৪, ০৩:২৫ রাত
আপডেট : ০৭ মে, ২০২৪, ০৩:২৫ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কার্ল মার্ক্স, এ দেশের ভাববাদী ও নিয়তিবাদী রাজাকার 

আহসান হাবিব

আহসান হাবিব: [১] কার্ল মার্ক্সের জন্মদিন। আমাদের দেশে অনেকে আছে যারা বলে ‘আজ মার্ক্সের জন্মদিন। তিনি জন্মগ্রহণ না করলেও অন্য কেউ এই তত্ত্ব নির্মাণ করতেন’! অর্থাৎ এই লোকগুলি ইতিহাসে ব্যক্তির ভূমিকাকে খাটো করে দেখতে চায়। তারা বিষয়কে মহিমা দিতে গিয়ে বিষয়ীকে হেয় করে। এদের মনস্তত্ত্ব হচ্ছে ব্যক্তিকে নয়, ব্যক্তির দর্শনকেই নাকচ করতে চায়। এমনকি বাংলাদেশে অনেক তথাকথিত বাম আছেন যারা এই ঘটনার নিয়তিবাদে বিশ্বাস করে। নিয়তিবাদ মানে হচ্ছে ব্যক্তি নয়, ঘটনায় এসব ঘটায়। এরা নিয়তিবাদী। এরা জঘন্য, নিকৃষ্ট, পরিতাজ্য।

[২] বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়েও এমন নিয়তিবাদীর দেখা মেলে যারা কথায় কথায় বলে ইতিহাস নির্মিত হয় জনগণ কর্তৃক। এরা ব্যক্তির ভূমিকাকে খাটো করে দেখাতে প্রয়াস পায়। বিশেষ করে যারা শেখ মুজিববিরোধী। অথচ অবাক বিষয় এরা আবার ব্যক্তি ভাসানীর পা ধোয়া পানি খেতে একপায়ে খাড়া। তার মানে হচ্ছে এখানে জনগণের নামে অপছন্দের ব্যক্তিকে নাকচ করার হীন প্রবণতা। শেখ মুজিব না হয়ে যদি স্বাধীনতার নেতৃত্ব এই মৌলানার হাতে থাকতো, তাহলে এরা ভাসানীর নামে শত শত মাজার নির্মাণ করে জিকির করতো। কিন্তু ইতিহাস তাকে বর্জন করেছে। কেন? কারণ তিনি সমাজবিকাশের গতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারেন নাই। ফলে ছিটকে পড়েছেন। পেরেছেন শেখ মুজিব, ফলে ইতিহাস তাকে বুকে টেনে নিয়েছে। এই টেনে নেয়া তারা সইতে পারে না। প্রকৃতপ্রস্তাবে তারা স্বাধীনতাবিরোধী এক একটা মুখোশধারী রাজাকার।

[৩] প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মান বাহিনীর সঙ্গে শান্তিচুক্তি করার প্রশ্নে লেনিনের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দেয়। ট্রটস্কি ছিলেন এই বিরোধিতাকারীদের অন্যতম। তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন। লেনিন এই সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধের বিপক্ষে ছিলেন। কারণ সেই সময় সদ্য বিপ্লবের পর যুদ্ধ করাবার মতো শক্তি ছিল না বরং বিপ্লবকে রক্ষা করার প্রয়োজনে শান্তির দরকার ছিল। জাতিবাদী অতি বামেরা অনুধাবন করতে পারে নাই। কিন্তু লেনিন ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন তার অসাধারণ প্রজ্ঞা দিয়ে। ফলে জার্মান বাহিনী যখন পেত্রগাদ দখল করতে চলেছে তখন টনক নড়ে ওঠে। শান্তিচুক্তিতে মত দেয় এবং তারই ফলে বিপ্লব রক্ষা পায়। এই যে ব্যক্তি ইতিহাসের গতিকে বুঝে সঠিক রণকৌশল  গ্রহণ করে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল নিজেদের অনুকূলে নিয়ে আসে, এখানেই ব্যক্তির ভূমিকা অনস্বীকার্য। 

[৪] কার্ল মার্ক্স যে কাজটি করেছিলেন তাহলো তিনি বস্তু এবং চেতনার দেহভঙ্গিটাকে সঠিকভাবে দাঁড় করিয়েছিলেন। তার আগে চেতনার গঠন ছিল উল্টা, পা ছিল উপরে, মাথা ছিল নীচে অর্থাৎ বস্তু থেকে চেতনা নয়, চেতনাই বস্তুকে রূপ দেয়। কার্ল মার্ক্স এসে এটাকে সোজা করে দিলেন, বললেন চেতনা নয় বস্তুই চেতনার জন্ম দেয়। এটাই বস্তুবাদ, এটাই বিজ্ঞান। এখন কেউ যদি বলে মার্ক্স না করলেও অন্য কেউ ঠিকই করতো, শেখ মুজিব না করলেও অন্য কেউ করতো, লেনিন না করলেও অন্য কেউ কেউ করতো, তারা প্রকৃতপ্রস্তাবে মার্ক্সবাদী নয়, স্বাধীনতার পক্ষের নয়, তারা এক একটা ভাববাদী ও নিয়তিবাদী রাজাকার।
লেখক: ঔপন্যাসিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়