স্বকৃত নোমান: কালকূটের সঙ্গে একদিন সিদ্ধকামবাবুর দেখা। নাম আসলে শুদ্ধকাম। কিন্তু লোকে বলে সিদ্ধকাম। সেরকম মদখোর। সিদ্ধকামবাবু কালকূটকে বললেন, মদ-টদ চলে নাকি? কালকূট বললেন, আজ্ঞে না, আমার চলে না। সিদ্ধকামবাবু হতাশ ভঙ্গিতে হাত উল্টে বললেন, ভগবান তোমাকে বঞ্চিত করেছেন। এই উড়িষ্যায় দেখেছি, মদ খেয়েছি টের পেলেই অনেক দৌঁড়াতে আরম্ভ করে। মাতালকে যে স্পর্শও করতে নেই। মাতাল তো দূরের কথা, একবার গাঁয়ে এক ঠাকুরমশাইকে দেখলাম, রাস্তা থাকতেও, কেবলি বাদাড়ে নেমে এদিক ওদিক দিয়ে এঁকে-বেঁকে যাচ্ছে। ব্যাপারটা কী?
ভাবলাম, রাস্তায় বড় পাইথন-টাইথন শুয়ে আছে বোধহয়। কিন্তু কিছুই দেখতে পেলাম না। দিব্যি ভালো রাস্তা, রাস্তার ধারে ধারে নানান গাছ, তার ছায়া পড়েছে। তবে ঠাকুরমশাইটি এরকম করছেন কেন? পথে কোনো নীচ জাতীয় লোকটোকও নেই যে, ছুঁয়ে ফেলার ভয় আছে। বাধ্য হয়ে জিজ্ঞেস করতে হলো, ঠাকুরের হলো কী! রাস্তায় কিছু আছে নাকি? ঠাকুর ঘাড় নেড়ে, আঙুল তুলে দেখিয়ে দিলেন। অঙ্গুলি সংকেত লক্ষ্য করে দেখলাম, কয়েকটি খেজুর গাছ। জিজ্ঞেস করলাম, তাতে কী হয়েছে? বললেন, বাবু ও গাছের ছায়া মাড়াবো না, জাত যাবে। কেন? চোখ বড় বড় করে জিজ্ঞেস করতে ঠাকুর জবাব দিলেন, ওর রস গেঁজিয়ে গেলে মদ হয়। লেখক: কথাসাহিত্যিক
আপনার মতামত লিখুন :