শোয়েব সর্বনাম: ভালো ডিজাইন করতে পারে এ ধরনের লোক হিসেবে শিল্পী সব্যসাচী হাজরা পরিচিত। মুজিববর্ষের লোগো ডিজাইন করার কারণে তার জনপ্রিয়তা আরও একধাপ বাড়ে। সীমিত রঙের ব্যবহার তার ডিজাইনের প্রধান বৈশিষ্ট্য। কিন্তু লোকেরা যেটা জানেন না সেটা হচ্ছে সব্যসাচী হাজরা মূলত একজন গবেষক ধরনের লোক। চারুকলার মেধাবী ছাত্র হাজরা দিনের পর দিন বাংলা বর্ণমালার ভিজ্যুয়াল বিউটি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলা অক্ষরগুলোর কেন এই অবস্থা হইছে এই প্রশ্নটা সারাক্ষণ তারা মাথায় ঘুরতে থাকে। এজন্য তিনি বাংলা বর্ণমালার সবগুলো প্রাচীন বই জোগাড় করে সেখান থেকে নির্বাচিত ৮টি বই নিয়ে কাজ করছিলেন। তার কাজগুলো নিয়ে আলিয়াস ফ্রসেজে এক্সিবিশন শুরু হয়েছে। ওই নির্বাচিত ৮টি বই এবং আরও কিছু বর্ণমালার ছবি নিয়ে একটা নতুন বই, বর্ণমালার পোস্টার এবং এরকম আরো কিছু জিনিস ওইখানে গেলে পাওয়া যাবে। সব্যদাকেও পাওয়া যাবে।
সব্যসাচী হাজরার কাজ যারা দেখছেন তারা ভালো জানেন, তিনি একজন অসম্ভব পরিমিত ধরনের শিল্পী। হাজার কোটি কালারের এই দুনিয়ায় দুইটার বেশি রঙ তিনি কিছুতেই ব্যবহার করতে রাজি না। এই দুইটা রঙও নির্ধারিত, লাল আর কালো। সব্যসাচী হাজরা তার জীবনের ফিফটি পার্সেন্ট কাজ লাল আর কালো দিয়েই সেরে ফেলছেন। তার গবেষণাও এরকম পরিমিত ও নির্বাচিত। বর্ণমালা নিয়ে তার আরও কিছু বই আছে। সবই ছবির বই। আমার কাছে সবগুলোই আছে। এটাও কালেক্ট করতে হবে। সব্যসাচীর হাজরা এমন একটা লোক যিনি সারাক্ষণ কাজ করতে থাকেন। তার মধ্যে কমার্শিয়াল কাজ খুবই কম। প্রায় বেশির ভাগ কাজই তিনি নিজের আনন্দের জন্য করেন। অল্পকিছু কমার্শিয়াল কাজ করে উপার্জিত টাকা এসব অক্ষর বর্ণমালা এসব এক্সিবিশন আর পাবলিকেশনের পিছে ঢালতে থাকেন। এই কাজেই তার সব আনন্দ। শিল্পী সব্যসাচী হাজরার শিল্পযাপন আরও আনন্দের হোক। লেখক: কবি ও কথাসাহিত্যিক
আপনার মতামত লিখুন :