শিরোনাম
◈ শেখ হাসিনাকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন  ◈ আইনি সহায়তা দিতে ‘পরামর্শ কর্মকর্তা’ নিয়োগ দেবে সরকার ◈ মিঠাপানির ঝিনুকে উৎপাদিত মুক্তার গহনা প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর  ◈ কোরবানিতে চাহিদার চেয়ে পশু বেশি: প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ◈ বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ভারত সকল কার্যক্রম পরিচালনা করছে: মির্জা ফখরুল ◈ ক্যাসিনোহোতা সেলিম প্রধানের প্রার্থিতা বাতিল, দিতে হবে জরিমানা ◈ বিএনপি দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র কাজে দেয়নি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ◈ যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিস্কার করেছেন ডোনাল্ড লু: ওবায়দুল কাদের  ◈ এনইসি সভায় ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন বাজেট অনুমোদন ◈ বর্তমান ডামি সরকার দেশটিকে একটি লুটপাটের দেশ বানাতে চাচ্ছে: রিজভী

প্রকাশিত : ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ০২:২৩ রাত
আপডেট : ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ০২:২৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জিএম কাদের এখনো কেন নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাখ্যা দিচ্ছেন?

সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা 

সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা: জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ বিরোধের খবর প্রায়ই আসছে। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর সংসদে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চলছে। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে আলোচনা অবসানের কোনো আলামত দেখছি না। শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বর্ধিত সভায় জিএম কাদের বক্তব্য রাখেন। প্রথম আলোর প্রতিবেদনে জাতীয় পার্টির নির্বাচনে অংশগ্রহণের ব্যাপারে বলা হয়েছে দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই দ্বাদশ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন জাতীয় পার্টি। বর্ধিত সভায় জিএম কাদের বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমি আগেই বুঝেছিলাম বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না। তিনটি বিদেশি বড় শক্তি আওয়ামী লীগকে সাহায্য করছে এবং আরো কিছু দেশ আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিচ্ছে’। তিনি তিনটি বিদেশি দেশের নাম খোলাসা করে বলেননি। জি এম কাদের বিএনপির আন্দোলনের প্রশংসা ও যৌক্তিকতা দেখিয়ে বলেছেন, ‘বিএনপি আন্দোলনের নামে খাঁদে পরে যায়, সহিংসতার নামে গ্রেপ্তার করে নির্বাচনের বাইরে রাখা হয়। দেশের স্বার্থে কাজ করেও বিএনপি সফল হয়নি’। জি এম কাদেরের একটি কথা আমার কাছে খুব যৌক্তিক মনে হয়েছে। তিনি বলেছেন, দল নির্বাচনে না গেলেও দেশ এভাবে চলতো। এমন পরিস্থিতি চলতো।

সুতরাং বোঝা যায় যে, জাতীয় পার্টি আর সেভাবে প্রাসঙ্গিক নয় বরং তাকে ছাড়া কোনো দেশের সরকার এভাবে চলতে পারে তাহলে বলা যায় যে তার লাভ হয়েছে সরকারের সঙ্গে নির্বাচন করায়। তিনি আরো বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারকে এখন আমরা আর রাজনৈতিক দল হিসেবে ভাবতে পারছি না তারা এখন রাজনৈতিক চরিত্র হারিয়েছে’। টানা চার মেয়াদে সরকারের সঙ্গে একত্রিত হয়ে কাজ করা দলটির শক্ত ঘাটি রংপুর শহর উত্তরাঞ্চলে ক্রমশ শক্তি হারানোর পথে থাকা জাতীয় পার্টি বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন কতোটা প্রাসঙ্গিক এ প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের। ১৯৮২ সালে হুসেন মুহাম্মদ এরশাদের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের পর ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টি দলটি গঠন করেন। প্রতিষ্ঠার ৩৮ বছরে বহুবার ভেঙ্গেছে জাতীয় পার্টি। এ দলটিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পর বড় দল হিসেবে দেখা হতো, কিন্তু বর্তমানে তেমন মূল্যায়ন করা হয় না।

গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে ২৬টি আসন নিয়েছিলো জাতীয় পার্টি। মাত্র ১১টিম আসনে জয়ী হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। সংসদে দলটির সংখ্যা কমে যাচ্ছে তেমনি রাজনীতিতে কোনো স্বতন্ত্র অবস্থান তৈরি করতে পারছে না। গত পনেরো বছর সরকারের সঙ্গে থাকতে হয়েছে জাতীয় পার্টিকে। বর্তমানে রওশন এরশাদ ও জি এম কাদেরের মাঝে চাওয়া-পাওয়া ঘিরে বিরোধ তৈরি হয়েছে। জাতীয় পার্টি কোনো আদর্শিক দল নয়, এটা আমরা সকলেই বারবার বলছি। আরেকটি অদ্ভুত বিষয় হলো, দলটি নাগরিক সমাজে কোনো অবস্থানে নেই। অথচ দলটি ৩৮ বছর পার করে দিয়েছে। প্রতিষ্ঠার ৩৮ বছরে বিএনপির দুই মেয়াদে ১০ বছর এবং ১/১১ দুই বছর ছাড়া জাতীয় পার্টি কোনো না কেনো সময় দলটির অবস্থান ছিলো। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে দলটি লাভবান হয়েছেন এবং বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতির কারণে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় থাকতে পেরেছে। এবার যদি বিএনপি নির্বাচনে জয়ী হতো তাহলে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো, সেটা জাতীয় পার্টির জন্য সুখকর হতো না। 

২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচন না করে যে ভুল করেছে তার পুরো ফসল ঘরে তুলেছে জাতীয় পার্টি। ২০১৮ সালে বিএনপি যেভাবে নির্বাচন করেছে এবং আওয়ামী লীগ বিএনপিকে সে সময় টার্গেট করার ফলে, জাতীয় পার্টি পুরো সুবিধা ভোগ করতে পেরেছে। এ দলটি সুবিধাবাদী দল। অনেক নেতারা ক্ষমতাশীল দলের না হয়েও ক্ষমতাশীল মন্ত্রিত্ব পদ পেয়েছিলেন। এমনকি জাতীয় পার্টি সরকারি দলের মতো সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছে। জাতীয় পার্টি সরকারি অনুমোদিত বিরোধী দল হিসেবে থেকেছে। এবারও এ দলটি সরকারের সমর্থন নিয়ে বিরোধী দলের আসনে আছে। জাতীয় পার্টি মূলত একটি ক্ষমতা কাঠােেমায় থেকে সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা দল। 

পরিচিতি: সিনিয়ির সাংবাদিক। ‘সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা’ ফেসবুক পেজের ভিডিও কন্টেন্ট থেকে শ্রুতিলিখন করেছেন রুদ্রাক্ষী আকরাম 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়