নাদিম মাহমুদ: আমরা যখন ছোট ছিলাম, আমাদের বিনোদনের একটি অংশ রেডিওতে গান শুনে কাটত। রেডিওতে দিনের একটি সময় ‘লালনগীতি’ হতো। ফরিদা পারভীনের সেই দরদভরা কণ্ঠ ‘লালনগীতি’কে আরো বেশি আত্মিক করে তুলেছে। যদিও ছোটবেলায় সেইসব গানের ‘অন্তর্নিহিত’ অর্থ বোঝার ক্ষমতা ছিল না। কিন্তু গানগুলো তো আমরা ছোটকাল থেকেই গাইতাম। ‘লালনকে ধারণ’ করে স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলোতে ‘লালনগীতি’ পর্ব রাখা হতো। আমি জানি না, এখন স্কুলগুলোতে এই চর্চা আছে কিনা। তবে ‘ডেইলিস্টারের’ এই খবরটি দেখার পর, মনে হচ্ছে দেশটাতে কি সত্যিই লালনশাহ, রশিদ উদ্দিন, বিজয় সরকার, শাহ আবদুল করিম বাউলরা জন্মেছিলো?
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে সঞ্জয় রক্ষিত যদি ফেসবুকের স্টোরিতে ‘সুন্নত দিলে হয় মুসলমান, নারী জাতির কি হয় বিধান’ লিখে জেলে যেতে হয়, তাহলে লালনশাহ যদি এই ‘অস্থির’ সময়ে জন্ম নিত আমার বিশ্বাস, তিনি এই গান লিখবার আর সাহস পেতো না। কতবড় আহাম্মক জাতি হলে, চারশ বছর আগে লেখা এই গানের ভিতর ‘ধর্ম’ তালাশ করতে যায়? কত বড় জ্ঞানপাপী হলে, সেই গানকেই আর একজনের কাঁধে চেপে দিয়ে ‘সঞ্জয়দের’ হাতে হাত কড়া পরায়? উফ, গান না জানা, না শোনা মানুষরা লালনের সেই গানের পরের লাইনটি ‘ব্রাহ্মণ চিনি পৈতে প্রমাণ, বামনি চিনি কিসেরে...’ যদি শুনত কিংবা সঞ্জয়রা স্টোরি লিখত, তাহলে কি ‘অনুভূতি’ সজাগ হতো? আলো ও অন্ধকারের তফাৎ না জানা সম্প্রদায় সবকিছুর মধ্যে ‘মন্দির-মসজিদ’ খুঁজতে যায়, তাহলে উপাসনালয়গুলোতে প্রার্থনা করবে কে? রাষ্ট্র তুমি কি তোমার ‘ক্ষত’ দেখতে পাচ্ছ? ২৯-৪-২৪। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :