শিরোনাম
◈ ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আগুন ◈ ৪৮ ঘণ্টার তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা জারি ◈ বিমানের সাবেক এমডিসহ ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট ◈ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রের পথে বাংলাদেশ দল ◈ বাংলাদেশে বাড়িতে সন্তান প্রসবের উচ্চহারে জাতিসংঘের উদ্বেগ, পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ ◈ ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের ফল প্রকাশ ◈ বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি ◈ শরিকদলগুলোর সাথে ভবিষ্যৎ কর্মপদ্ধতি নির্ধারণে আলোচনা চলছে: মির্জা ফখরুল ◈ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হচ্ছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় রেমাল ◈ তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচন ফের ৫২ জনকে বহিষ্কার করলো বিএনপি

প্রকাশিত : ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১২:৪৭ রাত
আপডেট : ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১২:৪৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এই যদি হয় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত পরিমাপের মাত্রা!

ইমতিয়াজ মাহমুদ

ইমতিয়াজ মাহমুদ: ‘সুন্নত দিলে হয় মুসলমান/নারী জাতির কি হয় বিধান/ব্রাহ্মণ চিনি পৈতে প্রমাণ/বামনি চিনি কিসেরে/সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে’। যান, লিখে দিলাম। এইটা লালনের গানের অংশ। আমার ফেসবুকেই অন্তত হাজারখানেক মানুষ পাবেন যারা এই কয়টা লাইন মুখস্থ বলতে পারবেন এবং সুর করে গাইতে পারবেন। পারবেন না? এখন বলেন, এই কয়টা লাইনে কি কোনো ধর্মকে অবমাননা করা হয়? এই কয়টা লাইনের জন্যে কি লালন শাহকে কেউ জেলে পাঠিয়েছিলো? এই কয়টা লাইনে যে আমি লিখে দিলাম উপরে, তার জন্য কি আমার শাস্তি হওয়া দরকার? বলেন। মন্তব্যের ঘরে একটা খবরের লিঙ্ক দিয়ে দিলাম। আউল বাউল ধরনের কোন পোর্টাল নয়, ডেইলি স্টারের খবর। খবরটা খুবই সংক্ষিপ্ত, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার ইউনিয়নের হরি নারায়ণ রক্ষিতের ছেলে সঞ্জয় রক্ষিত ওর ফেসবুকে এই গানের দুইটা লাইন উদ্বৃত করে পোস্ট করেছিলো। এজন্যই পুলিশ তাকে হাজতে আটকে রেখেছে। 

রোববার রাত ১০টার দিকে ভেদরগঞ্জ থানার ওসি মিন্টু মন্ডল টেলিফোনে ডেইলি স্টারকে বলেন, ফেসবুকের স্টোরিতে দুটি লাইন লেখাকে ঘিরে সঞ্জয় রক্ষিত নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি দাবি করেছেন, এই লেখার মাধ্যমে মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের অনুভূতিতে আঘাত হানা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তারা মৌখিক অভিযোগ করেছেন। তাই সামাজিক বিশৃঙ্খলা এড়াতে সঞ্জয়কে আটক করে শরীয়তপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কারা অভিযোগ করেছেন, জানতে চাইলে ওসি তাদের নাম উল্লেখ না করে বলেন, স্থানীয় কয়েকজন এই অভিযোগ করেছেন। ডেইলি স্টার আবার ওসি সাহেবকে জিজ্ঞাসা করেছে, এই লাইন দুইটা যে লালন গীতির অংশ সেটা কি তিনি জানেন? ওসি সাহেব ডেইলি স্টারের প্রতিনিধিকে নাকি বলেছে, থানায় আসেন। 
কী বলবেন আপনি? কী বলবো এই ঘটনা নিয়ে? ভাগ্যিস কাজী নজরুল ইসলাম বেঁচে নেই। বাংলাদেশে যদি তিনি বেঁচে থাকতেন তাইলে এই ওসি সাহেব তো তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়ে দিত আরকি। ভয় পাচ্ছি এরা না আবার লালনের মাজার খুঁড়ে তার হাড়গোড় তুলে নিয়ে আসে জেলে পাঠাবে বলে। এই যদি হয় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত পরিমাপের মাত্রা, তাহলে এদের হাত থেকে রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে কোনো কবিরই রেহাই পাওয়ার উপায় থাকতো না। কিন্তু এটা তো কোনো বিচ্ছিন্ন প্রবণতা নয়। এইটাই যেন হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশের বিদ্যমান চর্চা। এর ফল কী হবে ভেবেছেন? সেটি নিয়ে পরে আরেকটা পোস্ট লিখতে চেষ্টা করবো। আপনারা যদি কেউ পুলিশের এই আচরণের আমার মতো মুগ্ধ হয়ে থাকেন তাইলে লালনের ওই দুটো লাইন নিজের ওয়ালে পোস্ট করেন। ওসি সাহেব মিন্টু মণ্ডলের ফেসবুক একাউন্ট চেনা থাকলে তাকেও ট্যাগ করে দেন। ওসি সাহেবের কাছে ‘চন্দনা মজুমদার’র ঠিকানাটাও পাঠিয়ে দেন। কেননা সেদিনও আমি চন্দনা মজুমদারে কণ্ঠে এই গানটা শুনেছি। এরা আমার প্রিয় মাতৃভূমিকে কী বানাতে চাইছে? কী বলবো বলেন। লেখক: আইনজীবী। ২৯-৪-২৪। ফেসবুক থেকে 

 
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়