শিরোনাম
◈ পাসপোর্ট অফিসে ভোগান্তি কিছুটা কমেছে, জনবল বাড়ানোর তাগিদ  ◈ কিরগিজস্তানের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ঘরে থাকার পরামর্শ দূতাবাসের ◈ কিরগিজস্তানে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা: সাহায্য চাইলেন বাংলাদেশিরা  ◈ সংসদ ভবন এলাকায় দুই প‌ক্ষে‌র সংঘর্ষে শিক্ষার্থী নিহত ◈ আবারও বাড়লো সোনার দাম, ভরি ১১৮৪৬০ টাকা ◈ ভেবেছিলাম দেশের সমস্যা ক্ষণস্থায়ী, এখন আরও বেড়েছে: এডিটরস গিল্ড ◈ দেশের উন্নয়ন দেখে বিএনপি’র মাথা খারাপ হয়ে গেছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ যুক্তরাষ্ট্র স্মার্ট প্রাণিসম্পদ প্রকল্পে ৩৪ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিবে ◈ সিটি টোলের নামে চাঁদাবাজি বন্ধ হলে কাঁচাবাজারে দাম কমবে: সাঈদ খোকন ◈ নরসিংদীতে পৃথক বজ্রপাতের ঘটনায় মা-ছেলেসহ চারজন নিহত

প্রকাশিত : ১৭ এপ্রিল, ২০২৪, ০১:০৭ রাত
আপডেট : ১৭ এপ্রিল, ২০২৪, ০১:০৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মরু-গরু সংস্কৃতির আলাপ এবং ভুল বকার লজ্জা

কাকন রেজা

কাকন রেজা: লুৎফর রহমান রিটনের ‘সমস্যা যদি হয় মঙ্গলে’ পড়লাম সামাজিকমাধ্যমের কল্যাণে। ছড়ায় তার হাত ভালো। ছড়াকার ও বুদ্ধিজীবী এ দুটি ক্ষেত্র তিনি গুলিয়ে ফেলেছেন। না-হলে সংস্কৃতির এমন অদ্ভুত ব্যাখ্যা তিনি তার ছড়ায় দিতেন না। তিনি হয়তো বিস্মৃত হয়েছেন, ভারতীয়দের সংস্কৃতিহীনতাকে সাংস্কৃতিক রূপ দিয়েছে পারস্য। পারস্য মানেই মরু সংস্কৃতি। সেই মরু সংস্কৃতিই ভারতীয় সংস্কৃতিকে প্রাণ দান করেছে। এখানে কোনো লুকোচুরি নেই, নেংটি পরার ‘সভ্যতা’ থেকে ভারতীয়দের সত্যিকার সভ্য করেছে মূলত মরু সংস্কৃতির মানুষেরাই। পোশাক চিনিয়েছে, আলুসিদ্ধ, কচুপোড়া থেকে কাচ্চি বিরিয়ানিতে উন্নীত করা মরু সংস্কৃতিরই ক্যারিশমা।  

মূলত এতে কোনো দোষ নেই। সংস্কার থেকেই সংস্কৃতি। সুতরাং ভারতীয়রা পারস্য থেকে বা পুরাণে যাকে শামদেশ আখ্যায়িত করা হয়েছে সেই আরব দেশ থেকে উন্নতর সংস্কৃতি গ্রহণ করবে এটাই স্বাভাবিক। নেংটি থেকে ধুতি, ধুতি থেকে লুঙ্গি। লুঙি থেকে পাতলুন এবং হালের জিন্স এটাই সংস্কার ও সংস্কৃতির ধারা। একে অস্বীকার করার কিছু নেই। কেউ যদি ‘নেংটি সভ্যতা’য় ফিরে যেতে চান, তাদের যাওয়ার যায়গা তো অ্যামাজনের গভীর জঙ্গল ছাড়া আর কোথাও দেখি না। 

যারা কালচার আর এগ্রিকালচার পুরোপুরি এক করে ফেলেন সেক্ষেত্রেও তারা বোধহয় ভুলে যান, চাষাবাদ পদ্ধতিও পাল্টেছে। গরুর হালের বদলে ট্রাক্টর এসেছে। উন্নতি হয়েছে সেচ পদ্ধতির। হাইব্রিড পদ্ধতি চালু হয়েছে। সুতরাং কালচারকে শুধু এগ্রিকালচার ভাবা মানুষদের বোঝা উচিত, ভারতীয় গরু-মহিষের হাল পদ্ধতি বদলে গেছে এবং তা ভারতীয়দের কল্যাণে নয় অন্যদেশের প্রযুক্তির কল্যাণে। 

আর এখনকার বাংলাদেশের সংস্কৃতি সব-সময়ই ভারতীয় সংস্কৃতি থেকে কিছুটা হলেও ভিন্ন ছিলো। তাই আলাপে শুধু ‘ভারতীয়’ শব্দটি উল্লেখ করলাম সংস্কৃতি ও সংস্কারের প্রশ্নে। অবশ্য সঠিক অর্থে বলতে গেলে ভারতীয় বলেও কিছু নেই। কারণ বৃটিশরা ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান নামে ভাগ করার আগে ভারত বলতে কোনো দেশের অস্তিত্ব ছিলো না। পুরো উপমহাদেশই বিভিন্ন ভূখণ্ড আলাদা আলাদা পরিচয়ে পরিচিত ছিলো। যেমন, সিরাজউদ্দৌলার কথা বললেই স্বাধীন রাজ্য বাংলা বিহার উড়িষ্যার কথা এসে যায়। হায়দ্রাবাদের কথা উঠে আসে, যা ১৯৪৭ এর পরেও স্বাধীন ছিলো। সিকিমের লেন্দুপ দর্জির কথা উঠে আসে। আসে আরো অনেক অপ্রিয় কথা। যা অনেকেরই শরীরে সইবে না। শেষ কথায় বলি, যারা গরু সংস্কৃতি ও মরু সংস্কৃতির বিভাজন করতে যান, তারা গোড়ার দিকের ইতিহাসটা জানার চেষ্টা করেন। জানি, জেনে লজ্জিত হবেন। ভুল বকে লজ্জিত হওয়ার চেয়ে জেনে ভুল স্বীকারের লজ্জাটা গর্বের। লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়