শিরোনাম
◈ ভালোবাসার শহর প্যারিসে বৃষ্টিভেজা রাতে শুরু হলো অলিম্পিকস ২০২৪ ◈ সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী আজ ◈ কারফিউ আরো শিথিলের সিদ্ধান্ত হবে আজ, জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ একদফা দাবিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক বিএনপির ◈ শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা  ◈ ডিবি হেফাজতে কোটা আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ◈ কোটা আন্দোলন: ঢামেকে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীসহ তিন জনের মৃত্যু ◈ হেলিকপ্টার দিয়ে মানুষ হত্যার জবাব জনগণ একদিন আদায় করে নেবে: মির্জা ফখরুল ◈ প্রতিটি হামলার ঘটনার বিচার হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ সাম্প্রতিক সহিংসতায় আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৪ মার্চ, ২০২৪, ০১:১৩ রাত
আপডেট : ০৪ মার্চ, ২০২৪, ০১:১৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘অভিজাত এলাকা’ বিশেষণটির ওপর এতো গুরুত্ব দেওয়া কেন?

হেলাল মহিউদ্দীন

হেলাল মহিউদ্দীন: [১] ‘অভিজাত’, ‘অভিজাত’, ‘অভিজাত’। সংবাদে, ভাষ্যে, আলাপে, সামাজিক মাধ্যমে এই ‘অভিজাত’ বিশেষণটি শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা হচ্ছে। ‘অভিজাত এলাকা’ বিশেষণটির ওপর এতো গুরুত্ব দেওয়া কেন? বস্তি আগুনে ছাই হবে, ঠিক আছে; তাজরিন গার্মেন্টস পুড়বে, পুড়তেই পারে; রানা প্লাজা ধসবে, মানা যায়। কিন্তু গুলশান, বনানী, বেইলি রোডে আগুন মেনে নিতে কষ্টÑ আমাদের সামষ্টিক অবেচতন কি এ রকমই বদ্ধমূল রোগাক্রান্ত? এ রকমই শ্রেণিবিভাজনময়? মৃতদের সকলের জন্য শোকার্তি। কিন্তু বুয়েটের ছাত্র মারা গেছে, ভিকারুন্নিসা স্কুলের মা-মেয়ে দুজনের মৃত্যু, সাংবাদিকের মৃত্যু এভাবে ধরে ধরে বলা-লেখা-আলোচনা কি আমাদের জাতপাতমূখিতার প্রমাণ নয়? ‘মরার আবার জাত কী’। শরৎচন্দ্র সেই কবেই লিখে গেছেন। আরেকটা কথা। বেইলি রোড ঠিক কী কারণে এতোটা আহামরি ‘অভিজাত’? আর্ট-কালচার, নাটক, শুদ্ধ উচ্চারণে কথাবার্তা, আর কিছু উঠতি-উঠন্ত মধ্যবিত্তের মেকি শিল্প-শৈল্পিক ফুটানিকেই ‘আভিজাত্য’ বোঝানো হচ্ছে কি? 

[২] লিপ-ইয়ার উদযাপন উপলক্ষ্যে ৫০ শতাংশ ডিসকাউন্টে খাবার বিক্রির ঘোষণাটিই ছিল সবচাইতে বড় রেড ফ্ল্যাগ। আমেরিকা, ইওরোপের কথা বাদ দিই। থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, শ্রীলংকার মতো দেশেই তৈরি খাবার-দাবারে বিশেষ ছাড় দেবার ঘোষণা দেওয়া মাত্রই নগরের স্বাস্থ্যবিভাগ ও খাবার ব্যবসার সনদ দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ছুটে যায়। তারা সশরীরে সরেজমিনে দেখেশুনে নিশ্চিত করে আসে খাবার তৈরির পরিবেশ পরিচ্ছন্ন, জীবানুমুক্ত ও স্বাস্থ্যকর। অতিরিক্ত কর্মীবাহিনী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। দ্বিগুণ আসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সিঁড়িগুলো পরিচ্ছন্ন ও সম্পূর্ণ বাধামুক্ত। আগুন নিয়ন্ত্রণের ও জরুরি বেরোতে পারার সব রকমের ব্যবস্থা আছে। তারচেয়েও বড় কথা, অনুমোদন-অনুমতিরও দরকার। কারণ খাবারে ছাড় থাকলে ক্রেতার ভিড় অন্য যেকোনো ছাড়ের ক্রেতাদের ভীড়ের চাইতে কয়েকগুণ বেশি হয়। সমাজবিজ্ঞানীরা খাবার-দাবারকে সমাজ-সংগঠনের প্রথম সারির শক্তিশালী নিয়ামক মানেন। খাবারঘরগুলো একেকটি ওপেন কমিউনিটি সেন্টার, কম্যুনিকেশন সেন্টার, মিটিংপ্লেস, বিনোদন, ক্লান্তিমুক্তি, রসনাবিলাস কীসের জায়গা নয়? এই লেখা পড়তে গিয়ে অনেকে কী ভাবছেন জানি। খাবারঘরের ওপর নজরদারি ও পরিদর্শনের ব্যবস্থা থাকা হবে নজরদার-পরিদর্শকদের জন্য সোনার ডিম-পাড়া হাঁস। পকেটভর্তি কাঁড়িকাঁড়ি টাকা কামানোর ধান্দার সুযোগ তারা লুফে নেবে খাবারঘরগুলো ঘুষ হিসেবে দেওয়া টাকাগুলো কিন্তু ক্রেতাদের পকেট হাতড়েই উঠিয়ে নেবে। ভাবনাটি সঠিক। অসততাই যেখানে নিয়ম, সেখানে অপঘাত-মৃত্যুও হয়ে ওঠে নিয়ম। 

[৩] খবর হতে জানলাম, খাবার দোকানগুলোতে উঠানামার সিঁড়িগুলোর সিংহভাগ জুড়ে গ্যাস সিলিন্ডার রাখা ছিল। অর্থাৎ মুনাফার গন্ধে আকূল খাবারঘরগুলোর কর্তারা মৃত্যুকূপ তৈরিই করে রেখেছিল। দায়িত্বজ্ঞানহীন দোকানমালিকরাও এই হত্যাযজ্ঞের অংশীদার। যাঁরা ‘আল্লাহর মাল আল্লাহ্ নিয়ে গেছেন’ বা ‘কার কখন মৃত্যু আসবে কেউ জানে না’ বলছে তাঁরা ভুলভাল বকছেন। এ রকম হত্যাকাণ্ডের দায় রাষ্ট্রের। ব্যবসায়ীরা ব্যবসার লাইসেন্স পেয়ে গেছেন বলেই যেনতেন উপায়ে, অন্যদের জান-মালের ঝুঁকি তৈরি করেও মুনাফা করতে পারবেনÑএমনটি কখন ভাবেন, কেন ভাবেন? অ ষরপবহংব ঃড় ফড় নঁংরহবংং রং হড়ঃ ‘ধ ষরপবহংব ঃড় শরষষ’. ফেসবুকে ২-৩-২৪ প্রকাশিত হয়েছে। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়