শিরোনাম
◈ দেশকে পঙ্গু করে ভিক্ষুকের জাতিতে পরিণত করতে এ সহিংসতা : প্রধানমন্ত্রী ◈ খান ইউনুসে চলছে প্রচণ্ড লড়াই : আটকা পড়েছে প্রায় ২ লাখ ফিলিস্তিনি ◈ দেশের ৮ জেলায় দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা ◈ ভালোবাসার শহর প্যারিসে বৃষ্টিভেজা রাতে শুরু হলো অলিম্পিকস ২০২৪ ◈ সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী আজ ◈ কারফিউ আরো শিথিলের সিদ্ধান্ত হবে আজ, জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ একদফা দাবিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক বিএনপির ◈ শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা  ◈ ডিবি হেফাজতে কোটা আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ◈ কোটা আন্দোলন: ঢামেকে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীসহ তিন জনের মৃত্যু

প্রকাশিত : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০৩:৪৬ দুপুর
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০৩:৪৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মামা পার্টি খ্যাতচক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাসে যাত্রীবেশে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে ছিনতাই

সুজন কৈরী: [২] গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. রানা ওরফে মো. শাহীন ওরফে শাহীন রানা (৪৯), মো. মফিজুল ইসলাম ওরফে মো. ইসলাম ওরফে ইসলাম মিয়া (৪৮), মো. সাগর ওরফে হাবিবুর রহমান শেখ ওরফে মো. হাবিব (৫১), মো. ফারুক আহমদ ওরফে মো. ফারুক মিয়া ওরফে মো. ফারুক (৩৪) ও মো. আবুল কালাম (৫৩)।

[৩] সোমবার মাঝরাতে র‌্যাব-১০ এর একটি দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার শনির আখড়া এলাকায় একাধিক অভিযান চালিয়ে চক্রের মূলহোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত একটি হাইস গাড়ি ও একটি করোলা প্রাইভেটকার, একটি হাতকড়া, চেতনা নাশক ওষুধ (চার পাতার মোট ৪০টি), ২টি সুইচ গিয়ার চাকু, ২টি স্টিলের চাকু, একটি ক্ষুর, ৬টি পুরাতন টাচ মোবাইল ফোন, ৫টি পুরাতন বাটন মোবাইল ও নগদ- ১ হাজার ৬০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

[৪] মঙ্গলবার দুপুরে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন বলেন, গত বছরের ২৬ জুন ফরিদপুর জেলার ভাংঙা এলাকায় মো. শাহিন রানা ওরফে তজ্জম ও মফিজুল ইসলাম ওরফে ইসলামসহ আরও অন্যান্য আসামিরা যাত্রী সেজে সাদ্দাম শেখ নামের একজন ইজিবাইক চালকের ইজিবাইকটি ভাড়া করে। তারা ইজিবাইকচালক সাদ্দামকে মারধর করে এবং একপর্যায় চেতনানাশক ওষুধ ব্যবহারের মাধ্যমে অচেতন করে একটি মেহগনি বাগানে সাদ্দামকে অচেতন ও আহত অবস্থায় ফেলে রেখে ইজিবাইকটি ছিনতাই করে পালিয়ে যায়। ওইদিন আনুমানিক রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভুক্তভোগী সাদ্দাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ফরিদপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এছাড়াও আসামিরা নিহতের পরিবারের কাছে ছিনতাই করা ইজিবাইকটি ফেরত দেওয়ার কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিকাশ নম্বরে ৩৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তদন্তকালে মামা পার্টি চক্রটি সম্পর্কে জানা যায়। এই মামা পার্টির মূলহোতা শাহিন রানা ওরফে তজ্জম এবং এ পার্টির সক্রিয় সদস্য ১০ জন।

[৫] তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার শাহিন রানা চক্রটির মূল পরিকল্পনাকারী এবং তার নেতৃত্বে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস ভাড়া করে যাত্রীসেজে চেতনানাশক ওষুধ ব্যবহার করে ছিনতাই করে আসছিল। তাদের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রথমে তারা ছিনতাইয়ের জন্য উপযুক্ত ও নির্জন রুট বাছাই করতো। এক্ষেত্রে তারা রাত ৩টা থেকে সকাল ৭টার মধ্যে যেকোনো সময় এবং নির্জন রুটকে বেছে নিতো। কখনও মফিজুলের প্রাইভেটকার ব্যবহার করতো আবার কখনও মফিজুলের মাধ্যমে অন্য কোনো প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস ভাড়া নিত। এরপর মফিজুল এসব গাড়ি চালাতো এবং শাহিন যাত্রীসেজে মফিজুলের পাশে বসে থাকতো। অন্যান্যরা তাদের পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী নির্বাচিত রুটের ১-২ কিলোমিটার পরপর যাত্রী বেশে অবস্থান করতো।

[৬] তিনি বলেন, পরে সবাই একত্রিত হওয়ার পর যাত্রীদের কখনও দেশীয় অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখিয়ে মারধর করে আবার কখনও চেতনানাশক ওষুধ ব্যবহার করে অচেতন করে যাত্রীদের কাছে থাকা সবকিছু লুট করে তাদের সুবিধাজনক যে কোনো নির্জন স্থানে ফেলে রেখে সেখান থেকে পালিয়ে যেত।

[৭] র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তার শাহিন রানা ওরফে তজ্জম মামা পার্টি চক্রটির দলনেতা। ২০০০ সালে একটি চুরির মামলায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে পাঁচ বছর কারাভোগ করেছিল। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতিসহ ৫টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

[৮] মফিজুল ইসলাম পেশায় একজন ড্রাইভার। সে বিভিন্ন কোম্পানির গাড়িচালক হিসেবে কর্মরত ছিল। সে বিভিন্ন ব্যক্তির গাড়ি ভাড়া করে অপরাধ করে আসছিল। পরে সে মলম পার্টি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ডাকাতি, ছিনতাই ও মাদক মামলাসহ ৩টি মামলা রয়েছে।

[৯] সাগর রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ড্রাইভার হিসেবে কাজ করতো। পেশার আড়ালে সে মামা পার্টির সক্রিয় সদস্য ছিল হিসেবে কাজ করত। সে যাত্রীদের চেতনানাশক ওষুধ ব্যবহার করে ও দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে যাত্রীদের কাছে থাকা বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনতাই করতো। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি ও হত্যা চেষ্টাসহ ৪টি মামলা রয়েছে।

[১০] গ্রেপ্তার ফারুক আহমদ ঢাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় রেন্ট-এ কারের গাড়ি চালাতো। পেশার আড়ালে সে রাজধানীর সাইনবোর্ড, কদমতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় ভোর রাতে যাত্রীদের গাড়িতে তুলে বিভিন্ন মলম, চেতনা নাশক ওষুধ ব্যবহার করে ও দেশীয় অস্ত্রে ভয় দেখিয়ে যাত্রীদের কাছে থাকা বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনতাই করতো। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় পুলিশ পরিচয়ে ছিনতাই ও ডাকাতির দুটি মামলা রয়েছে।

[১১] গ্রেপ্তার আবুল কালাম পেশায় গাড়িচালক। পেশার আড়ালে সে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন যাত্রীবাহী গাড়িতে উঠে জুস, চিপসসহ বিভন্ন প্রকার খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে কৌশলে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে যাত্রীদের অচেতন করে তাদের কাছে থাকা টাকা ও মোবাইলসহ বিভিন্ন মূল্যবান সম্পদ ছিনতাই করতো। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রাজধানীর কদমতলী থানায় একটি ছিনতাই মামলা রয়েছে। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়