শিরোনাম
◈ বিমানের সাবেক এমডিসহ ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট ◈ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রের পথে বাংলাদেশ দল ◈ বাংলাদেশে বাড়িতে সন্তান প্রসবের উচ্চহারে জাতিসংঘের উদ্বেগ, পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ ◈ ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের ফল প্রকাশ ◈ রংপুরে তুলা গবেষণা কেন্দ্রে আগুন ◈ বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি ◈ ডিএফপির নতুন ডিজি আকতার হোসেন ◈ শরিকদলগুলোর সাথে ভবিষ্যৎ কর্মপদ্ধতি নির্ধারণে আলোচনা চলছে: মির্জা ফখরুল ◈ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হচ্ছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় রেমাল ◈ তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচন ফের ৫২ জনকে বহিষ্কার করলো বিএনপি

প্রকাশিত : ৩০ নভেম্বর, ২০২৩, ০৩:০৪ দুপুর
আপডেট : ৩০ নভেম্বর, ২০২৩, ০৮:৫২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার রায়ের নতুন তারিখ ১২ ডিসেম্বর 

এম.এ. লতিফ, আদালত প্রতিবেদক: [২] সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা মামলার রায়ের তারিখ ছিল বৃহস্পতিবার। তা পিছিয়ে আগামী ১২ ডিসেম্বর ধার্য করেছেন আদালত। সময়ের অভাবে রায় লেখা যায়নি বলে ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম রায় ঘোষণার জন্য নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন।

[৩] এর আগে, গত ২২ নভেম্বর রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে রায় ঘোষণার জন্য বৃহস্পতিবার তারিখ রেখেছিলেন বিচারক। আদালতের পেশকার জাহিদুল ইসলাম বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) ‘আমাদের সময় ডটকম’কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

[৪] দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এ মামলায় রাষ্ট্র পক্ষের দাবি মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ করতে তারা সক্ষম হয়েছেন এবং সবোর্চ্চ শাস্তি ১৩ বছরের কারাদণ্ড ও তার সম্পদ বাজেয়াপ্তের প্রত্যাশা করছেন। মির্জা আব্বাসের আইনজীবীদের দাবি, দুদকের আনা অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। রায়ে মির্জা আব্বাস খালাস পাবেন বলে তাদের প্রত্যাশা।

[৫] এ মামলায় মির্জা আব্বাসের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মো. আমিনুল ইসলাম, মহিউদ্দিন চৌধুরী ও শাহীনূর ইসলাম অনি। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।

[৬] মির্জা আব্বাস নিজের পক্ষে নিজেই সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাছাড়াও কয়েকজন ব্যাংক কর্মকর্তা ও চার্টাড একাউনটেন্ট তার পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দিয়েছেন।

[৭] মির্জা আব্বাস তার সাফাই সাক্ষ্যতে বলেছেন, কৃষি পেশাজীবী থেকে তার  আগের প্রজন্ম  ব্যবসায়ী পরিবার হয়ে ওঠে। মতিঝিলের পীরজঙ্গী মাজার থেকে শাহজানপুর-রাজারবাগ ফ্লাইওভার পযর্ন্ত তার এবং পরিবারের, বংশের জ্ঞাতি গোষ্ঠীর জায়গা। তিনি ধর্নাঢ্য পরিবার থেকে এসেছেন। তাকে বাঁকা পথে তার সম্পদ অর্জন করতে হয়নি। তার চাচা শহীদের নামে ঢাকার শহীদবাগের নামকরণ করা হয়। ঢাকার বিখ্যাত মাজেদ সরদার তার এবং তাদের পরিবারের ঘনিষ্ঠ আত্নীয়। তার চাচা বিডি মেম্বার ও পাকিস্তান আমলে ইউনিয়ন পরিষদের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। রাজনীতিতে চাচার হাত ধরেই তার প্রবেশ। তার নানার কাছ থেকে তার বাবা এবং তিনি ঢাকার খিলগাঁও রেলগেট থেকে রাজারবাগ পযন্ত পুরো এলাকার জমির মালিকানা পান। শাজাহানপুর থেকে রাজারবাগ মোড় পযর্ন্ত রাস্তাটি তাদের মালিকানার জায়গা বিভক্ত করে গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে মির্জা আব্বাস রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ‘জাগো দল’এ যোগ নেন এবং তারও পরে ‘বিএনপি’তে। চাচা তাকে কমিশনার নির্বাচন করান। পরে ১৯৭৬ সনে তিনি ঢাকা সিটি করপোরেশন  প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ১ বছর পরে ১৯৭৭ সালে কমিশনার নির্বাচিত হন। তারো অনেক পরে তিনি ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন।

[৮] আর আব্বাসের পক্ষে ঢাকা ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা শাহজাহান মিয়া ও কাজী শিফাউর রহমান হিমেলও সাক্ষ্য দেন। তারা আদালতে বলেন, তিনি ঢাকা ব্যাংকের শেয়ার নিয়মতান্ত্রিক ভাবে পান। বোনাস এবং ডিভিডেন্ট শেয়ার হিসাবে ঢাকা ব্যাংকের অংশীদার হন। ২০০৭ সালে দুদক এসব ডকুমেন্ট জব্দ করে নিয়ে যায়। 

[৯] সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় বিএনপিরস্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের পক্ষে সাফাই সাক্ষী আইনজীবী এ.কে.এম. শাহজাহান বলেছেন, তিনি শাহজাহানপুরের একটি জমি কেনার জন্য বায়নাবাবদ মির্জা আব্বাসকে ৫০ লাখ টাকা দেন। এ টাকা অবৈধ টাকা নয়। আব্বাস সাহেবের সঙ্গে তার নিজের পিতার মাধ্যমে তার ঘনিষ্টতা হয়। এনআরবি ব্যাংকের চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট নুরুল হোসেন খান সাফাই সাক্ষ্যে মির্জা আব্বাসের পক্ষে বলেছেন, তার কর ফাইল তিনি দেখতেন। তার অজ্ঞাত গোপন কোন সম্পদের বিষয় নেই।

[১০] জ্ঞাতআয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৭ কোটি ৫৪ লাখ ৩২ হাজার ২৯০ টাকার সম্পদ অর্জন এবং ৫৭ লাখ ২৬ হাজার ৫৭১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ১৬ আগস্ট দুদকের উপপরিচালক মো. শফিউল আলম রাজধানীর রমনা থানায় মির্জা আব্বাস ও তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাসের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ২৪ মে দুদকের উপপরিচালক মো. খায়রুল হুদা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তদন্তে তার বিরুদ্ধে ৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ২২ লাখ টাকার সম্পত্তির তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়। ২০০৮ সালের ১৬ জুন মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।

[১১] অভিযোগ গঠনকে চ্যালেঞ্জ করে দুজনই হাইকোর্টে মামলা বাতিলের আবেদন করেন। হাইকোর্ট আফরোজা আব্বাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ বাতিল করে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন।

[১২] এদিকে মির্জা আব্বাস তার অংশটুকু বাতিল করার জন্য আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল দায়ের করেন। ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর লিভ টু আপিল খারিজ হয়। মির্জা আব্বাস আবার রিভিউ আবেদন করলে চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি রিভিউ আবেদন খারিজ হয়। পরে মামলার কার্যক্রম এ আদালতে চলে। সম্পাদনা: তারিক আল বান্না

এমএএল/জেএ/টিএবি/এইচএ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়