আনিস তপন: সরকার থেকে দুটি প্রকল্পের আওতায় মাত্র ৬০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় হয়েছে। অথচ দুদক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দফতরে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির কাল্পনিক অভিযোগ আনা হয়েছে আমার বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার দুদক প্রধান কার্যালয়ে নোটিশের জবাব দিতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।
ভুয়া ব্যাংক হিসাবে টাকা অবৈধ লেনদেন, বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এদিন দুদকের উপ-পরিচালক আলী আকবরের নেতৃত্বে দুটি আলাদা অনুসন্ধান টিম জাহাঙ্গীর আলমকে তলব করে।
সাবেক মেয়র জানান, নাম ঠিকানা বিহীন কে বা কারা আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর, দুদকসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মিথ্যা, বানোয়াট গল্প সাজিয়ে অভিযোগ করেছে। কে বা কারা দিয়েছে তাদের কোনো হদিস নেই। অভিযোগকারীদের ঠিকানার সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল নেই।
নিজের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে গাজীপুরের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর, দুদক ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট গল্প সাজিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
তদস্তকারী দল জানিয়েছে, অভিযোগ পেয়েছে, তাই সেগুলো যাচাই-বাছাই করছে। সে হিসেবে দুদক এর আগেও আমাকে ডেকেছিল। আজও ডেকেছে। দুদক ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমি এসেছি। অভিযোগের বিষয়ে দুদকে আমি লিখিত আকারে সব প্রশ্নের জবাব দিয়েছি।
তিনি বলেন, সর্বশেষ আমার নামে একটি ভুয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেখানো হয়েছে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেঠি আমি। অথচ একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে মেয়র এবং সিইওর যৌথ স্বাক্ষরের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া আমার স্বাক্ষর, এটা গোপন কিছু নয়। ছাত্রজীবন থেকে এখন পর্যন্ত সর্বশেষ আমার কর্মস্থল, পাসপোর্ট, এনআইডি ও সিটি করপোরেশেনের প্রত্যেকটি জায়গায় আমার স্বাক্ষর আছে। ভূয়া স্বাক্ষর দিয়ে আমার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট দেখানো হয়েছে। এ বিষয়ে দুদককে অনুরোধ করেছি, ন্যায়বিচারের স্বার্থে ব্যাংকে কে বা কারা ভুয়া স্বাক্ষর দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলেছে, তার বিচার আমিও চাই।
প্রয়োজনে আমার স্বাক্ষর ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষা করা হোক এমন অনুরোধ করে জানিয়ে দুদক কার্যালয়ে অনেকগুলো স্বাক্ষর দিয়ে এসেছি। আমিও চাই দুদক কর্তৃপক্ষ আমার এসব স্বাক্ষর যাচাই-বাছাই করে দেথুক। প্রয়োজনে যারা বিশেষজ্ঞ তাদের মতামত নেওয়া হোক। কারণ আমি ন্যায় বিচার চাই।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, যারা দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করতে চায় তাদের যদি মিথ্য, বানোয়াট অভিযোগে এ রকম হয়রানি করা হয়, তাহলে তারা আর জনগণের জন্য কাজ করতে চাইবে না। জনপ্রতিনিধিরা ভয়ে থাকবেন। কিন্তু আমার সততা ও দক্ষতা আছে বলেই এখানে এসেছি। আমি দুদক ও আইনকে সহযোগিতা করতেই এখানে এসেছি।
সঠিক সুন্দর ও শতভাগ স্বচ্ছতার পক্ষে রয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এর আগেও গাজীপুরবাসী আমর ওপর আস্থা রেখেছেন। সিটি করপোরেশনের মানুষ যে আমার ওপর আস্থা রেখে ভুল করেননি, তার প্রমাণ এবার আমার মাকে মেয়র পদে নির্বাচিত করে আবার প্রমাণ দিয়েছেন।
গাজীপুরের নির্বাচনে হেরে যাওয়া আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লাহ গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হচ্ছেন। এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী? এমন প্রশ্নের জবাবে জাহাঙ্গীর বলেন, আমি সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি অন্তত একটা দায়িত্ব পেয়েছেন। নগর উন্নয়নের জন্য তিনিও কাজ করবেন। যে কেউ যদি নগর উন্নয়নে কাজ করেন তবে তাকে আমি সাধুবাদ জানাই। তিনি আমার বড় ভাই। আমি চাই তিনি তার কর্ম দক্ষতা দিয়ে গাজীপুরের মানুষের জন্য ভালো কিছু করবেন, তিনি চাইলে, আমি তাকে সার্বিক সহযোগিতা করব। সম্পাদনা: শামসুল হক বসুনিয়া
এটি/এসএইচবি/এএ