বিডিআর বিদ্রোহ-পরবর্তী সময়ে নানা জল্পনা–কল্পনার মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজের বিরুদ্ধে অপপ্রচার নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে।
বিশেষ করে বিডিআর (বর্তমান বিজিবি)–এর একটি বিশেষ ইউনিফর্মকে ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ব্যাখ্যা ছড়ানো হচ্ছে।
এ অবস্থায় বিষয়টি পরিষ্কার করতে স্বয়ং সোহেল তাজ তার লিখিত স্টেটমেন্ট থেকে তথ্য তুলে ধরে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
সোহেল তাজ বলেন, অনেকেই ইচ্ছাকৃতভাবে বিডিআর কমিশনের রিপোর্টের ভুল ব্যাখ্যা ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ইউনিফর্মের বিষয়টিও এর একটি উদাহরণ।
তিনি জানান, এই ইউনিফর্মটি তার ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য বানানো হয়নি, বরং বিডিআর-এর তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের অনুরোধে বর্ডার আউটপোস্ট (BOP) পরিদর্শনে অংশ নেওয়ার জন্যই এটি তৈরি করা হয়েছিল।
তার ভাষ্যে, তিনি যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে মার্চ মাসে দেশে ফিরে ডিজি শাকিলের সঙ্গে হেলিকপ্টারে করে সীমান্তের বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শনে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। এ কারণেই তাকে একটি বিশেষ পরিদর্শন ইউনিফর্ম প্রস্তুত করে দেওয়া হয়েছিল।
কিন্তু সেই সফরের আগেই দেশব্যাপী সংঘটিত হয় ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারির বিডিআর ট্র্যাজেডি, যার ফলে সফরটি আর অনুষ্ঠিত হয়নি।
স্টেটমেন্টে সোহেল তাজ আরও উল্লেখ করেন, তিনি দুইবার পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তর পরিদর্শন করেন, একবার মন্ত্রীর সঙ্গে, এবং দ্বিতীয়বার ডিজির ব্যক্তিগত আমন্ত্রণে। ডিজি শাকিল তাকে জানিয়েছিলেন যে সামরিক কর্মকর্তারা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আগ্রহী।
তিনি নিজেও দেশরক্ষায় সাহসী ভূমিকায় থাকা সামরিক সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা পোষণ করতেন।
বিডিআর প্রধানের সঙ্গে তার আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল মূলত জাতীয় নিরাপত্তা–সংক্রান্ত, ভারতের দখলকৃত ছিটমহল, সীমান্ত নিরাপত্তা, মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি এবং রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রোধের কৌশল।
২০০৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত তিনি যুক্তরাষ্ট্রে তার কন্যার জন্মদিন এবং এক আত্মীয়ের অসুস্থতার কারণে অবস্থান করছিলেন। সেখান থেকেই তিনি ফেরার পর BOP পরিদর্শনে যাওয়ার পরিকল্পনা নিশ্চিত করেছিলেন বলে জানান।
সোহেল তাজ বলেন, তার স্টেটমেন্ট কমিশনের কাছে জমা দেওয়া আছে—কিন্তু এর আংশিক তথ্য বিকৃত করে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
তিনি জনগণকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সত্য সব সময় স্পষ্ট।কিন্তু অপপ্রচার তার মাত্রা বাড়াতে মিথ্যার আশ্রয় নেয়।
সূত্র: ইনকিলাব