নতুন বছর শুরুর আগেই জমির আইনে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে সরকার। প্রকৃত মালিক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেকারণে দেশে সাতটি খতিয়ান সম্পূর্ণভাবে বাতিল হয়ে যাচ্ছে ২০২৬ সালের মধ্যে। এই সিদ্ধান্তের ফলে জমি ফিরে যাবে প্রকৃত মালিকের কাছে এবং দীর্ঘদিনের জমি সংক্রান্ত বিভ্রান্তির অবসান ঘটবে।
ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই সাতটি খতিয়ান হলো: সিএস খতিয়ান, এসএ খতিয়ান, আরএস খতিয়ান, বিএস খতিয়ান, সিটি জরিপ, ডিপি খতিয়ান ও নামজারী খতিয়ান। এই খতিয়ানগুলোর মধ্যে ভুল তথ্য বা অন্যের নামে জমি রেকর্ড হওয়ার কারণে দীর্ঘদিন ধরে মালিকানা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে।
বাতিলের মূল কারণ:
১. দ্বৈত খতিয়ান বা অন্যের নামে খতিয়ান: প্রকৃত মালিকের জমি ভুলবশত অন্যের নামে রেকর্ড হওয়া।
২. অবিভক্ত জমি: ভুল তথ্য দিয়ে নিজের নামে রেকর্ড করা।
৩. শিখস্তি সম্পত্তি: নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত জমি পুনর্জাগরণের পর দখল।
৪. খাস জমি: সরকারি সম্পত্তি অনৈতিকভাবে দখল।
৫. অর্পিত সম্পত্তি: পতিত সম্পত্তি বা পররাষ্ট্রে থাকা ব্যক্তিদের জমি।
৬. উত্তরাধিকার সম্পত্তি ও আংশিক নামজারি: মৃত ব্যক্তির জমি নিয়ে প্রাপ্তির চেয়ে বেশি অংশ নিজের নামে নথিভুক্ত করা।
৭. জালিয়াতি বা দলিল-খতিয়ান অসঙ্গতি: খতিয়ান তৈরি হলেও মালিকানা দলিলের সাথে মিল নেই।
ভূমি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই খতিয়ানগুলোর সমস্ত তথ্য বিডিএস (ডিজিটাল জরিপ) ও স্যাটেলাইট/ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহার করে পুনঃনিরীক্ষণ করা হবে। একবার জরিপ সম্পন্ন হলে, জমির প্রকৃত মালিকের নামে একমাত্র খতিয়ান থাকবে এবং যৌথ বা ভুল খতিয়ানের সুযোগ থাকবে না।
এই পদক্ষেপের ফলে না শুধু মালিকানা বিভ্রান্তি কমবে, বরং দেওয়ানী আদালতে মামলা এবং হেরফেরের ঝামেলাও কমানো সম্ভব হবে। সরকার আশা করছে, এটি ভূমি খাতকে আরও স্বচ্ছ ও ডিজিটালাইজড করে সাধারণ নাগরিকের জন্য সুবিধাজনক হবে।