মোঃরফিকুল ইসলাম মিঠু, ঢাকা: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের পর আমদানি পণ্য খালাস কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে নানন সংকট। অগ্নিকাণ্ড ঘটনার ১ মাস পেরিয়ে গেলেও কাজের চাপ সামাল দিতে কাস্টমস কর্মকর্তারা দ্রুত পদক্ষেপ নিলেও কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর ধীরগতি ও অব্যবস্থাপনায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে।
দ্রুত পণ্য জরুরি স্থানে পৌছে দেওয়াই হলো কুরিয়ার সার্ভিসের কাজ। কিন্তু কার্গো ভিলেজে আগুন লাগার ঘটনার পর থেকে কুরিয়ার সার্ভিস গুলো অনেক পণ্যই ১০/১২ দিনেও এজেন্টদের হাতে দিতে পারছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করছে একাধিক সিএন্ডএফ এজেন্ট কর্মীরা।
অগ্নিকাণ্ডের পরবর্তী সময়ে পণ্য খালাসের জন্য ৯ নম্বর গেট উন্মুক্ত করা হয় । যদি এখন আরও একটা গেইট খালাসের কাজে ব্যবহার হচ্ছে। তীর্থের কাকের মত সিএন্ডএফ এজেন্টের অনেক কর্মীদের হাতে ক্লিয়ারিং এর কাগজ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কখন পণ্যটি নিতে পারবো।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক কাস্টমস কর্মকর্তা বলেন, এয়ারপোর্টের আগুন লাগা ঘটনায় দেশের পণ্য আমদানি ও রপ্তানি খাতের এখন ক্রান্তিলগ্ন চলছে। শত শত কোটি টাকার পণ্য খালাসে যে প্রক্রিয়া ছিল তা অনেকটাই কঠিন হয়ে গেছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ব্যবসায়িক ভাবে রাষ্ট্রের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে তা সত্যিই দুঃখজন। কাগজ থেকে শুরু করে পণ্যের যাচাই বাছাই প্রক্রিয়া করে ব্যবসায়ীদের হাতে পৌছাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। অস্থায়ী স্টোরেজ ব্যবস্থা, নথিপত্র এবং ঝুঁকিমুক্ত এলাকায় পণ্য রাখা কষ্টকর। এর ফলে জরুরি ক্যাটাগরির কিছু পণ্য খালাস করতে রাত দিন শ্রম দিতে হচ্ছে।
ব্যবসায়ী মহল জানায়—কাস্টমসের কাজ অত্যন্ত দ্রুত ও সংগঠিত ছিল, তাদের তৎপরতায় পুরো সিস্টেম সম্পূর্ণ থেমে যায়নি।
তবে বিপরীত চিত্র দেখা গেছে কুরিয়ার সার্ভিসগুলোতে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান সঠিক সময়ে পণ্য খালাসে ব্যর্থ হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। অগ্নিকাণ্ডের পরবর্তী সময়ে একাধিক কুরিয়ার (যা খাঁচা নামে পরিচিত) কোম্পানি সাথে যোগাযোগ করা হলে, তাদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে স্পষ্টত কোন উত্তর মিলে নি।
এক ব্যবসায়ী হতাশ হয়ে বলেন, আগুন তো লাগতেই পারে; কিন্তু এর পর যে সমন্বয় প্রয়োজন, কুরিয়ার কোম্পানিগুলো সেটাই দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। উৎপাদনমুখী শিল্পের জন্য এটি বড় ধাক্কা। অস্থায়ী ডেলিভারি সিস্টেম এবং কুরিয়ার ব্যবস্থায় কঠোর নজরদারি এ-ই মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি।
অগ্নিকাণ্ডের প্রভাব কাটাতে সময় লাগলেও সঠিক সমন্বয় থাকলে ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।