বাংলাদেশে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংক্রান্ত একটি বাস্তবতা হলো, বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্মতারিখ দেওয়া হয়েছে পহেলা জানুয়ারি। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি বক্তব্য দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশে যত মানুষ পহেলা জানুয়ারিতে জন্মগ্রহণ করেছে, পৃথিবীর আর কোনো দেশে এত মানুষের জন্ম এই তারিখে হয় না। এটা আসলে আমাদের ব্যবস্থাপনার একটি বড় দুর্বলতা।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের অভিজ্ঞতা বলছে—এদেশে বহু মানুষ নিজেদের প্রকৃত জন্মতারিখ জানে না, এমনকি অনেকেই নিজের আসল নামও জানে না। পরিচয়ের ক্ষেত্রে তারা পরিচিত হয় কারো মা, কারো ছেলে, কারো স্ত্রী বা শাশুড়ি হিসেবে। ফলে জন্ম তারিখ ও নামের যথাযথ রেকর্ড রাখা সম্ভব হয়নি।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি, যেখানে ৬০ বছর বয়সেও কেউ জানে না তার জন্মতারিখ কী, কবে তার জন্ম। তখন তারা বলে—‘যেকোনো একটা তারিখ বসিয়ে দিন।’ ফলস্বরূপ, এনআইডির প্রায় ৫০ শতাংশের বেশি ব্যবহারকারীর জন্মতারিখ হিসেবে দেখা যায় ১ জানুয়ারি।”
তিনি শিক্ষাব্যবস্থার সমস্যার কথাও তুলে ধরেন। বলেন, “বেশিরভাগ স্কুলের শিক্ষার্থী—বিশেষ করে প্রাথমিক স্তরে, এমনকি এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীদেরও জন্মতারিখ নির্ধারণ করে দেন হেডমাস্টাররা। তখনও ব্যবহার করা হয় পহেলা জানুয়ারি।”
এই অব্যবস্থাপনার পেছনে বড় কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন—জন্মের সময় সরকারি রেকর্ড না থাকা, বা জন্মের সময় হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো কর্তৃক সনদ না দেওয়া।
সমাধান হিসেবে তিনি বলেন, “দেশের সব হাসপাতালে সন্তানের জন্ম হলে তাৎক্ষণিকভাবে জন্মসনদ, এনআইডি প্রক্রিয়ার প্রাথমিক কাগজপত্র দিয়ে দিতে হবে। এটা বাধ্যতামূলক করতে হবে। সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব হবে শিশুর জন্মের দিনই তার নাম ও জন্মতারিখ রেকর্ড করে দেওয়া।”
তিনি আরও বলেন, “এনআইডি একটি আজীবনের পরিচয়পত্র—এখানে তথ্য ভুল থাকলে মানুষের জীবনে নানা ধরণের জটিলতা তৈরি হয়। সুতরাং এর শুরুটা সঠিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে।”