সুজন কৈরী: [২] বুধবার দুপুরে মালিবাগে সিআইডির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, মাদক কারবার বা মাদক সংক্রান্ত অর্থ পাচার বা মানি লন্ডারিংয়ের মতো ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
[৩] তিনি বলেন, তরুণ প্রজন্মের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর বিষয় হচ্ছে মাদকাসক্তি। মাদকের ভয়াবহতা এতই বেশি যে, মাদকসেবীর আশপাশে থাকা মানুষও এর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। শিশু-কিশোর, যুব বা যে কোনো বয়সী নারী বা পুরুষ মাদকাসক্ত হতে পারে। মাদকের ভয়াবহতা পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। মাদকাসক্ত পরিবারে নেমে আসে ভয়াবহ বিপর্যয়।
[৪] ২০২১ সালে ৭৯ হাজার ৬৭৫টি, ২০২২ সালে ৮২ হাজার ৬৭২টি এবং ২০২৩ সালে ৭৬ হাজার ৪০৩টি মাদক মামলা দায়েরর তথ্য জানিয়ে সিআইডি প্রধান বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণে মাঠ পর্যায়ে পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থা মাদকের বাহকসহ সেবীদের গ্রেপ্তার এবং তাদের কাছে থেকে মাদক উদ্ধার করে বিচারের আওতায় আনছে। কিন্তু মাদকের গডফাদারদের বিরুদ্ধে কার্যত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তারা সব সময় ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়।
[৫] প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির প্রেক্ষিতে সিআইডি মাদকের মামলা তদন্তে নতুন ডাইমেনশন এনেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিআইডিই প্রথম মাদক সম্পৃক্ত মানিলন্ডারিং মামলার তদন্তে গভীরে প্রবেশ করে মাদক ব্যবসায়ী ও গডফাদারদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে এবং তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও ব্যাংকে থাকা অর্থ ফ্রিজ করতে সক্ষম হয়েছে।
[৬] প্রাথমিকভাবে সিআইডি ৩৫টি মামলা তদন্ত করে মামলার মূল হোতা তথা গডফাদারদের মাদক ব্যবসা থেকে অবৈধভাবে অর্জিত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমাকৃত অর্থ, ক্রয়কৃত জমি, বাড়ি ও ফ্ল্যাটসহ বিভিন্ন স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির সন্ধান পায়। পর্যায়ক্রমে মাদকের সকল গডফাদারদের আইনের আওতায় আনা হবে। মাদক ব্যবসা করে যারা অবৈধভাবে সম্পদ ও অর্থ-বিত্তের মালিক হয়েছে, তাদের অবৈধ সম্পদ আইনি প্রক্রিয়ায় সরকারি কোষাগারে চলে যাবে। দেশপ্রেমিক সকল মানুষের প্রতি মাদক গড ফাদারদের তথ্য সিআইডিকে দেওয়ার অনুরোধ করা যাচ্ছে।
[৭] এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা নিজে থেকে কারো সম্পত্তি ক্রোক করতে পারি না। আদালতের নির্দেশ পাওয়ায় আমরা কারো জিম্মায় ক্রোক করে থাকি।
[৮] গডফাদার বলতে সিআইডি কাদের বোঝাচ্ছে? তাদের পরিচয় কী- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মাদকের কারবারে করেও যারা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকে, এরকম আমরা ২২ জনকে পেয়েছি। আমরা তো প্রথমে মাদকের ক্যারিয়ার বা বহনকারী কিংবা ইউজার বা সেবনকারীকে ধরি। যারা খুচরা বিক্রেতা তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলার তদন্ত হয়, গডফাদারদের খোঁজা হয়। সম্পাদনা:কামরুজ্জামান
এসবি২
আপনার মতামত লিখুন :