নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতারণার মাধ্যমে নগদ সাড়ে ৪৭ লাখ ও বাড়ি ভাড়ার-সহ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক স্ত্রী শরিফা আক্তার পিয়ার বিরুদ্ধে যশোরের আদালতে রোববার (২৯ জানুয়ারি) প্রতারণার মামলা করেছে কানাডা প্রবাসী মাসুম হোসেন সিদ্দিক (তুহিন)।
তুহিন শহরের কাজীপাড়া পুরাতন কসবার শহীদ মশিউর রহমান সড়কের মৃত এরশাদ হোসেন সিদ্দিকের ছেলে। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক পলাশ কুমার অভিযোগের তদন্ত করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডিকে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আসামি শরিফা আক্তার পিয়া বর্তমানে পুরাতন কসবা শহীদ মশিউর রহমান সড়কের জরিনা ম্যানসনের বাসিন্দা ও শহরের বেজপাড়া পিয়ারী মোহন রোডের মৃত শফি মিয়া ওরফে মন্টু মিয়ার মেয়ে।
এর আগে বিবাহ বর্হিভুত সম্পর্ক ও ব্যভিচারের অভিযোগে শরিফা আক্তার পিয়া ও এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে আরও একটি মামলা করেছিলেন মাসুম হোসেন সিদ্দিক (তুহিন)।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, মাসুম হোসেন সিদ্দিক (তুহিন) একজন কানাডা প্রবাসী। ২০১৫ সালের ৬ নভেম্বর মাসুম হোসেন সিদ্দিক (তুহিন) স্বামী পরিত্যক্ত দুই কন্যাসহ শরিফা আক্তার পিয়াকে বিয়ে করেন। শরিফা তার দুই কন্যাকে নিয়ে তার স্বামীবাড়ি পুরাতন কসবার জেরিনা ম্যানসনে বসবাস করতেন। এরপর তুহিন তার স্ত্রী শরিফাকে কানাডায় নিয়ে যাওয়ার জন্য ওই বছর পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল মাসুম হোসেন (তুহিন) কানাডা চলে যান। শরিফার পাসপোর্টের তদন্তে আসেন এসআই জসিম শিকদার। জসিম শিকদার বিভিন্ন কাজের অজুহাতে শরিফার সাথে দেখা করতেন। একপর্যায়ে শরিফা (পিয়া) তার সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন।
২০২১ সালের ৭ আগস্ট মাসুম হোসেন (তুহিন) কানাডা থেকে দেশে ফিরেন। পরে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে শরিফার অবৈধ সম্পর্কের কথা জানতে পারেন তুহিন। ওই বছরের ২২ অক্টোবর পুলিশ কর্মকর্তা জসিমের সাথে শরিফাকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলেন তুহিন। এদিন থেকে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের দুরত্ব সৃষ্টি হয়।
এর আগে তুহিন তার স্ত্রী শরিফার কাছে কানাডা থেকে বিকাশ ও মানি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে বিপুল পরিমান টাকা পাঠান। যার মধ্যে ২০১৬ থেকে বাড়ির ভাড়াটিয়া বিকাশ এজেন্ট রেজাউল হকের মাধ্যমে ২০২১ সাল পর্যন্ত ২৪ লাখ ১৪ হাজার ৮৬২ টাকা ও মানি একচেঞ্জের মাধ্যমে ২৩ লাখ ১৯ হাজার ৪শ' টাকাসহ বাড়ি ও দোকান ভাড়ার প্রায় কোটি টাকা শরিফাকে দেয়া হয়। এ টাকার হিসাব চাইলে শরিফা হিসাব না দিয়ে তালবাহানা শুরু করেন। এর মধ্যে পাঠানো টাকা দিয়ে বাড়ি-ঘর মেরামতসহ ব্যাংক হিসাব নম্বরে জমা করার কথা থাকলেও শরিফা কোন কিছু না করেই টাকা আত্মসাত করেছেন।
এ টাকা ফেরত চাইলে শরিফা টাকা না দিয়ে স্বামী তুহিনকে তালাকের নোটিশ দিয়েছেন। এ অবস্থায় তিনি বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা ও বাড়ি এবং দোকান ভাড়ার টাকা ফেরত না পেয়ে আদালতে এ মামলা করেছেন তুহিন।
মাসুম হোসেন সিদ্দিক (তুহিন) আমাদের সময় ডটকমকে বলেন, জসিম শিকদার ও তার বন্ধু-বান্ধব মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আমাকে বিভিন্নভাবে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। এক কথায় পিয়ার ভাইয়ের ফ্যামিলির কাছে আমি জিম্মি, এর মধ্যে শিমুল (পিয়ার ভাই) বাসায় এসে আমাকে মারধর করে।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমি আমার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। সরকারের আমি আমার জানের নিরাপত্তা চাচ্ছি।
এমএইচ/এসবি২