শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৭ মার্চ, ২০২৩, ০৮:৩২ রাত
আপডেট : ২৮ মার্চ, ২০২৩, ০২:১৯ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

উত্তর কোরিয়া জেল বন্দী জীবন 

ধর্ষণ, গর্ভপাতসহ নানা নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার বন্দীরা 

নির্যাতনের শিকার বন্দীরা 

জাফর খান: বিচার বহির্ভূত ফাঁসি, বিনা বিচারে কারালাভসহ নানারকম কষ্টের মধ্যদিয়ে কারজীবন পাড়ি দিয়ে থাকেন দেশটির বন্দীরা। এমনকি ত্যাদেরকে ক্ষুধার্ত অবস্থায় দিনের পর দিন রাখা হয়। আর চরম ক্ষুধার মুহুর্তে খাদ্য হিসেবে দেওয়া হয় পোকা মাকড় ও কীট পতঙ্গ। সিএনএন 

নির্মম বন্দি জীবনের ঘটনা নিয়ে বেঁচে ফিরে আসা জেল ফেরত বন্দিদের নিজের মুখের বর্ণনা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে হিউমান রাইটস ওয়াচ। সংস্থাটি জেল ফেরত এমন কয়েকশ বন্দির সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে প্রতিবেদনটি এই সপ্তাহে প্রকাশ করে।প্রতিবেদনে বলা হয়, আমরা দেশটির মানবাধিকার লংঘনের বিষয়ে আড়ালে ঘটে যাওয়া সব তথ্য প্রকাশ করার চেষ্টা করছি। 

মানবাধিকার কর্মী কিম জিয়োন বলেন, জাতিসংঘ কর্তৃক তদন্ত কমিশন গঠনের ১০ বছর পার হলেও এখনো দেশটির বিষয়ে জবাবদহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। তিনি জানান লন্ডন, হাগ ও সিউলে অবস্থিত কার্যালয় থেকে তিনি মানবাধিকার সংগঠন কোরিয়া ফিউচার দেশটির মানবাধিকার লংঘন বিষয়ক পর্যালোচনা করে আসছে। 

থ্রি ডি মডেলের একটি জেলখানা তৈরি করে এতে ১ হাজারেরও বেশি  নির্যাতনের ঘটনার অংশ হিসেবে চিত্রায়ন করে দেখানো হয় ধর্ষণ, অমানবিক আচরণসহ বিভিন্ন রকমের যৌন নির্যাতনের ঘটনার।এসব বন্দিশালায় মেজর জেনারেল পদমর্যাদার উচ্চ পদস্থ সামরিক কর্তাদেরকে প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। 

এমনকি এসব জেলে বন্দি ৭ বা ৮ মাস বয়সী নারীদের জোর করে গর্ভপাত ঘটানো ছাড়াও গর্ভবতী নারীদেরকে ৮০ গ্রাম শস্য (৩ আউন্সের কম) দেওয়া হয় খাদ্য হিসেবে। দেখা গেছে, ৬০ কেজির (১২০ পাউন্ড) জায়গায় মাত্র ২৭ কেজি খাদ্যের পাশাপাশি তেলাপোকা ও অন্যনায় কীটপতঙ্গ খাদ্য হিসেবে দেওয়া হয়। 

জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, নারীদেরকে সাধারণত রাজনৈতিক বন্দিশালায় পাঠানো হয়ে থাকে। যৌন সহিংসতার কাজে তাদেরকে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।  

কোরিয়া ফিউচারের কাছে সাবেক এক বন্দি জানান, নির্যাতনের ওই ক্যাম্পে থাকা অবস্থায় আমার মনে হচ্ছিলনা আমরা মানুষ।আমাদের সঙ্গে খরগোশের মত আচরণ করা হত।একটি ছোট্ট ঘরে ওদেরকে যেভাবে রাখা হয় সেভাবে আমাদেরকে সামান্য খাদ্য দেওয়া হত। এমনকি জিগজাগ আকৃতির কক্ষটির আয়তন ছিল মাত্র ২১.৫ স্কয়ার ফিট। 

কাওয়ালিশো নামে পরিচিত দেশটির রাজনৈতিক বন্দিশালাটি বহুকাল ধরেই এর ভয়াবহ নির্যাতন ও অত্যাচারের জন্য সুপরিচিত। 

এর আগে ২০১৪ সালে জাতিসংঘের এক তদন্তে উঠে এসেছিল পিয়ংইয়ংয়ের জেলখানাগুলোতে কিম শাসনামলের শুরু থেকেই। সেসময় ১ লাখ ২০ হাজার লোক কারাবরণ করেন। আর কোরিয়া ফিউচারের রিপোর্টে এর সকল দ্যভার কিম জং উনের উপর দেওয়া হয়েছে। তার একনায়কতন্ত্র ও স্বেচ্ছাচারিতার জন্যই অন্যায়ভাবে কারালাভ করার পাশাপাশি নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে জনসাধারণকে। 

এপি বন্দিদের সাক্ষাতকার নেওয়া কিম জিয়োন বলেন, সত্যি চরম কষ্ট দায়ক তাদের কথা যা কিনা সহ্যের বাইরে। বন্দিশালা থেকে বেঁচে ফিরে আসা একজন সিএনএনকে জানান, ২০০০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কয়েকবার তাকে কারাভোগ করতে হয়েছে। তার অপরাধ ছিল উত্তর কোরিয়া হতে চীনে কাজের সন্ধনে তিনি কেন এসেছিলেন। এসময় তাকে ৬ দশমিক ৬ স্কয়ার মিটারের একটি কক্ষে রাখা হয়। আর কক্ষটির তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ২৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এমনই হাজারো ঘটনার সাক্ষী হিসেবে অনেকেই তাদের উপর নির্মম নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন মানবাধিকার সংগঠন কোরিয়া ফিউচারের কাছে। 

জেকেএইচ/এসএ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়