রাশিদুল ইসলাম: ১৯ বছর বয়সী রাশিয়ার ওলেসিয়া ক্রিভস্তোভা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে নিজ দেশের সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করার পর তাকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে। আইনজীবীরা বলছেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। ওলেসিয়ার নাম সন্ত্রাসী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে মস্কো। সিএনএন
ওলেসিয়া থাকেন রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আরখানজেলস্ক শহরে। সেখানে স্বামীর সঙ্গে একটি অ্যাপার্টমেন্টে তার বসবাস। স্থানীয় নর্দান (আর্কটিক) ফেডারেল ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেন তিনি। ওই অঞ্চলের সেভেরোভিনস্ক শহরে থাকেন ওলেসিয়ার মা নাতালিয়া ক্রিভস্তোভা। তার অ্যাপার্টমেন্টে এখন গৃহবন্দী ওলেসিয়া। তার ইন্টারনেট ও যেকোনো ধরনের অনলাইন যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
প্রশাসনের অভিযোগ, ওলেসিয়ার শরীরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনবিরোধী ট্যাটু রয়েছে। তিনি ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের বিরোধিতা করে অনলাইনে পোস্ট করেছেন। এমনকি গত অক্টোবরে যখন ক্রিমিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের সংযোগকারী একমাত্র সেতুতে বিস্ফোরণ হয়, তখন সেটার ভিডিও ফুটেজ ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে রাশিয়ার সমালোচনা করেছিলেন তিনি। এ ছাড়া রুশ সামাজিক নেটওয়ার্ক ভিকেতে তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে চলমান যুদ্ধ নিয়ে দেশবিরোধী বার্তা আদান-প্রদান করেছেন।
এসব কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকায় ওলেসিয়ার বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আনা হয়েছে।
ওলেসিয়ার মা নাতালিয়া সংবাদমাধ্যমকে জানান, গত ২৬ ডিসেম্বর হঠাৎ তার মেয়ের অ্যাপার্টমেন্টে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় ওলেসিয়া ও তার স্বামীকে মেঝেতে উপুড় হয়ে শুতে বাধ্য করা হয়। পরে একটি হাতুড়ি দেখিয়ে তাদের হুমকি দেয় পুলিশ। তাদের একটি ভিডিও দেখানো হয়। ওই ভিডিওতে হাতুড়ির আঘাতে কারাগারে থাকা এক বন্দীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ফুটেজ ছিল।
ওলেসিয়ার আইনজীবী অ্যালেক্সি কিচিন বলেন, তার ১৯ বছর বয়সী মক্কেলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ গুরুতর। এর মধ্যে রুশ সেনাবাহিনীকে অসম্মান করার অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার তিন বছরের কারাদণ্ড এবং সন্ত্রাসবাদের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় সাত বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। এমনকি ওলেসিয়ার নাম উগ্রবাদী-সন্ত্রাসীদের তালিকায় ইসলামিক স্টেট (আইএস), আল-কায়েদা এবং তালিবান সদস্যদের পাশে যুক্ত করা হয়েছে।