রাশিদুল ইসলাম: ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সিকিমে একটির বেশি সন্তান নিলে পাওয়া যাবে বাড়তি বেতন। বাড়িতে সন্তান লালনপালনের জন্য সহায়তাকারী রাখলে তার বেতনও রাজ্য সরকার দেবে। অন্যদিকে জাপানে বৃদ্ধ মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত সন্তান নিলে নাগরিকদের বাড়তি আর্থিক সুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। সন্তান পালন খরচবহুল হয়ে গেছে বলে জাপানিরা সন্তান নিতে চাচ্ছে না। এনডিটিভি/জাপান টাইমস
সিকিমে সরকারি নারী কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের বেতন ও আনুষঙ্গিক সুবিধা বাড়ানোর প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে দ্বিতীয় সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রে। দ্বিতীয় সন্তানের বেলায় এক দফা বেতন বাড়বে এবং তারচেয়ে বেশি সন্তান নিলে বেতন আরও বাড়ানো হবে। গত শুক্রবার সিকিমের রাজধানী গ্যাংটকে এক অনুষ্ঠানে প্রেম সিং তামাং বলেন, ‘স্থানীয় মানুষের মধ্যে সন্তান নেওয়ার প্রবণতা খুবই কম। এটা সিকিমের জন্য বড় একটি সমস্যা। এই প্রবণতা দূরীকরণে আমাদের অবশ্যই কিছু করতে হবে।’
এমনকি সন্তান প্রতিপালনের জন্যে বাড়িতে সহায়তাকারী রাখলে সেই অর্থও রাজ্য সরকার দেবে। ৪০ বছরের বেশি বয়সী নারীদের এক বছরের জন্য এ কাজে নিযুক্ত করা হবে। তারা প্রতি মাসে ১০ হাজার রুপি করে বেতন পাবেন। সিকিমের জনসংখ্যা মাত্র ৭ লাখ। কয়েক বছর ধরে রাজ্যটি জন্মহার (টিএফআর) নিয়ে সমস্যায় ভুগছে। রাজ্য সরকারের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে সিকিমে টিআরএফ সবচেয়ে কম (১ দশমিক ১) ছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সিকিমের আদিবাসী ভুটিয়া ও লিমবু সম্প্রদায়ে একাধিক সন্তান নেওয়া প্রবণতা আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে।
জাপানে জন্মহার হ্রাস দুশ্চিন্তায় ফেলেছে দেশটির সরকারকে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা গত সোমবার বলেছেন, জাপানে জন্মহার বৃদ্ধির জন্য ব্যবস্থা না নিলে দেরি হয়ে যাবে। তাই অপেক্ষা করার সময় নেই। ইতিমধ্যে জাপান বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সী জনসংখ্যার দেশ হয়ে গেছে।
শিশুর লালনপালনের ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল দেশগুলোর একটি জাপান। এ কারণে অনেকেই সন্তান নিতে চান না। জাপানের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, গত বছর দেশটিতে জন্মহার কমে যাওয়ার নতুন রেকর্ড হয়। গত বছর সরকারের প্রত্যাশার চেয়েও আট লাখ কম শিশুর জন্ম হয়েছে দেশটিতে। এর আগে ২০১৫ সালে দেশটিতে জন্মহার কমে যাওয়ার রেকর্ড হয়েছিল।
দেশটিতে ভবিষ্যতে আরও জন্মহার কমার আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, সেখানকার মানুষের গড় বয়স দাঁড়িয়েছে ৪৯। বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বয়স্ক মানুষের বাস মোনাকোতে। এরপরই বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সী মানুষের দেশ জাপান।
আগামী জুনের মধ্যে শিশু পালনবিষয়ক বাজেট দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা ও এপ্রিলে সমস্যাটির তদারক করার জন্য একটি নতুন শিশু ও পরিবার সরকারি সংস্থা স্থাপন করা হবে। জাপানের ইউওয়া পপুলেশন রিসার্চ অনুসারে, শিশু লালনপালনের ক্ষেত্রে জাপান বিশ্বের তৃতীয় ব্যয়বহুল দেশ। এর শীর্ষে আছে চীন। এরপর দক্ষিণ কোরিয়া। এ দুটি দেশেও জনসংখ্যা কমছে।