শিরোনাম
◈ বাংলা‌দেশ জিত‌লো তামিমের সেঞ্চুরিতে, সি‌রিজ শেষ হ‌লো সমতায়  ◈ তোপের মুখে হ্যান্ডকাপ পরা অবস্থায় ছাত্রলীগ কর্মীকে ছেড়ে দিল পুলিশ (ভিডিও) ◈ ‘ফজু পাগলা’ উপাধি যারা দিয়েছে তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই: ফজলুর রহমান ◈ সরকার থেকে পদত্যাগ নিয়ে যা বললেন আসিফ মাহমুদ ◈ ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে বাতিল হবে ৬ ধরনের দলিল: আসছে সম্পূর্ণ ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থা ◈ আগামী নির্বাচন হতে যাচ্ছে মাইলফলক: সিইসি নাসির উদ্দিন ◈ 'র' এর মাধ্যমে শিখ নেতাদের হত্যাকাণ্ডে জড়িত অমিত শাহ, চাঞ্চল্যকর তথ্যচিত্র প্রকাশ! (ভিডিও) ◈ জেট ফুয়েলের দাম আরও বাড়ল, বিমান ভাড়া কি বাড়বে? ◈ আ.লীগের বড় পরিকল্পনা ফাঁস, গ্রেপ্তার ২৫ ◈ ১৮ নভেম্বর ‘প্রবাসী ভোটার অ্যাপ’ উদ্বোধন

প্রকাশিত : ০৯ নভেম্বর, ২০২৫, ০২:৫২ দুপুর
আপডেট : ০৯ নভেম্বর, ২০২৫, ০৯:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ফাঁস হলো ভারত–ইসরায়েলের গোপন পরিকল্পনা: পাকিস্তানের কাহুটা পরমাণু স্থাপনায় হামলা ঠেকিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র

দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতির ইতিহাসে বহু অজানা অধ্যায় ছড়িয়ে আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ও গোপন রাখা ঘটনাগুলোর একটি—পাকিস্তানের কাহুটা পরমাণু স্থাপনায় ভারত ও ইসরায়েলের যৌথ হামলার পরিকল্পনা।

সম্প্রতি ইসরাইল ও ভারতের ওই যৌথ পরিকল্পনার তথ্য ফাঁস করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সাবেক সদস্য রিচার্ড বার্লো।

প্রায় চার দশক পর সেই রহস্যজনক পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ–এর সাবেক কর্মকর্তা। তিনি,১৯৮০-এর শুরুর দিকে পাকিস্তানের দ্রুত অগ্রসরমান পারমাণবিক কর্মসূচি রুখতে ভারত ও ইসরায়েল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এক সামরিক অপারেশনের নীলনকশা করেছিল।

১৯৭৪ সালে ভারতের প্রথম পারমাণবিক বোমা পরীক্ষার পর পাকিস্তান নিজের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগে পড়ে। ড.আব্দুল কাদির খানের নেতৃত্বে পাকিস্তানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি দ্রুত এগোতে থাকে। চীন,নেদারল্যান্ডস এবং মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের সহায়তায় ইসলামাবাদ অল্প সময়েই পরমাণু সক্ষমতার কাছাকাছি পৌঁছে যায়। এই অগ্রগতি ভারতের নিরাপত্তা মহলে তীব্র অস্বস্তি তৈরি করে। একই সময়ে ইসরায়েলও উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে—কারণ মধ্যপ্রাচ্যের কোনো মুসলিম রাষ্ট্র পরমাণু অস্ত্র পেলে সেটি তেলআবিবের কৌশলগত নিরাপত্তার বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।

এই প্রেক্ষাপটেই ভারত ও ইসরায়েলের মধ্যে গোপন আলোচনার সূচনা হয়। বার্লোর ভাষ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল তার এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিয়ে পাকিস্তানের কাহুটা স্থাপনায় ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’ চালাতে আগ্রহী ছিল। ভারত সেই বিমানের জন্য প্রয়োজনীয় রিফুয়েলিং ও আকাশপথের নিরাপদ করিডোর দেওয়ার প্রস্তাবও দিয়েছিল। পরিকল্পনাটি ছিল দ্রুত, গোপন এবং ধ্বংসাত্মক—একটি সফল হামলা পাকিস্তানের পরমাণু স্বপ্নকে বছরের পর বছর পিছিয়ে দিত।

কিন্তু শেষ মুহূর্তে নীরবে পর্দা নামিয়ে যায় এই অপারেশনের। কারণ একটি সফল বা ব্যর্থ—দুই ধরনের হামলাই পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধাবস্থার জন্ম দিতে পারত, যার আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মূল্য বিপুল। একই সময়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানও দৃঢ়ভাবে এর বিরোধিতা করেন। তার আশঙ্কা ছিল—এমন হামলায় ইসরায়েলের সংশ্লিষ্টতা প্রকাশ পেলে মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার অবস্থান দুর্বল হবে এবং আফগানিস্তানে সোভিয়েত বিরোধী গোপন অভিযানে জটিলতা তৈরি হবে।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, হামলাটি বাস্তবায়িত হলে দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ও সামরিক সমীকরণ পুরোপুরি বদলে যেত। পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচি হয়তো আরও এক দশক পিছিয়ে যেত এবং ভারত–ইসরায়েল কৌশলগত সম্পর্ক আগেই দৃশ্যমান হয়ে উঠত। সবচেয়ে বড় বিষয়—১৯৯৮ সালে পাকিস্তানের প্রকাশ্য পারমাণবিক পরীক্ষা আদৌ সম্ভব হত কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন থাকত।

রিচার্ড বার্লোর বক্তব্য নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে—আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গোপন সামরিক পরিকল্পনার প্রভাব কতটা গভীর হতে পারে এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত কিভাবে একটি যুদ্ধ থামিয়ে দিতে পারে—এ ঘটনাই তার বড় প্রমাণ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়