সম্প্রতি জেন-জি বিক্ষোভের মুখে নেপালে সরকারের পতন ঘটেছে। এর আগে একইভাবে সরকার পরিবর্তন হয়েছে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কাতেও। দক্ষিণ এশিয়ার এই তিন দেশের সরকার পতনের মূল কারণ হিসেবে দুর্বল শাসনব্যবস্থাকে দায়ী করেছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত দোভাল।
তিনি বলেন, “দুর্বল শাসন ব্যবস্থা অনেক সময় একটি দেশের সরকার পতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বাংলাদেশ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশে অনানুষ্ঠানিক উপায়ে সরকার পরিবর্তনের পেছনেও এমন দুর্বল প্রশাসনিক কাঠামোর ভূমিকা ছিল।”
শুক্রবার রাষ্ট্রীয় ঐক্য দিবস উপলক্ষে দেওয়া বক্তৃতায় দোভাল বলেন, “রাষ্ট্র গঠন ও নিরাপত্তা রক্ষায় কার্যকর শাসনব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু রাষ্ট্রকে তার লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করে না, সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষাও পূরণ করে।”
তার ভাষায়, “আজকের প্রশাসনের বড় চ্যালেঞ্জ হলো সাধারণ মানুষকে সন্তুষ্ট রাখা। এখন মানুষ অনেক বেশি সচেতন, উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং রাষ্ট্রের কাছ থেকে আরও বেশি প্রত্যাশা রাখে। তাই রাষ্ট্রেরও তাদের সন্তুষ্টির প্রতি খেয়াল রাখতে হয়।”
অজিত দোভাল বলেন, “একটি জাতির শক্তি নিহিত থাকে তার শাসন ব্যবস্থায়। সরকার যখন প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে কাজ করে, তখন জাতি গঠনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন সেই ব্যক্তিরা, যারা এসব প্রতিষ্ঠান তৈরি ও লালন করেন।”
নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বের প্রশংসা করে দোভাল বলেন, “ভারত এখন এক নতুন কক্ষপথে প্রবেশ করছে—এক নতুন শাসনব্যবস্থা, সমাজ কাঠামো ও বৈশ্বিক অবস্থানে। প্রশাসনিক দুর্নীতি দমনে সরকার যে প্রাতিষ্ঠানিক পরিবর্তন এনেছে, তা গভীর প্রভাব ফেলছে। সামনে আরও পদক্ষেপ আসতে পারে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “পরিবর্তনের সময়ে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো লক্ষ্য পরিষ্কার রাখা, ঝড়-ঝাপটার মাঝেও যেন ভয় বা বিভ্রান্তিতে পথ হারানো না হয়।”
ভালো শাসনের উপাদান হিসেবে দোভাল নারীর সুরক্ষা, সমতা ও ক্ষমতায়নকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার নিয়েও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
তার ভাষায়, “আমাদের এমন প্রযুক্তি কাজে লাগাতে হবে, যা শাসনে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও জনসেবার দক্ষতা বাড়ায়। তবে একইসঙ্গে সাইবার হামলার মতো প্রযুক্তিনির্ভর হুমকি থেকেও সমাজকে রক্ষা করতে হবে।” সূত্র: এনডিটিভি