শিরোনাম
◈ বিএনপি নেতাকে না পেয়ে স্ত্রীকে কু.পিয়ে হ.ত্যা ◈ বাংলা‌দেশ হারা‌লো আফগানিস্তানকে, তা‌কি‌য়ে রই‌লো শ্রীলঙ্কার দিকে  ◈ রোজার আগে নির্বাচন দিয়ে পুরোনো কাজে ফিরবেন প্রধান উপদেষ্টা ◈ ঋণের চাপে আত্মহত্যা, ঋণ করেই চল্লিশা : যা বললেন শায়খ আহমাদুল্লাহ ◈ একযোগে এনবিআরের ৫৫৫ কর্মকর্তাকে বদলি ◈ আবারও রেকর্ড গড়ল স্বর্ণের দাম, ভরিতে বেড়েছে ৩ হাজার ৬৭৫ টাকা ◈ ভারতের নেপাল নীতিতে 'রিসেট বাটন' চাপলেন মোদি, শিক্ষা বাংলাদেশের কাছ থেকে ◈ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বিএনপি ◈ প্রথমবারের মতো জাপানের রাজনৈতিক দলের নেতা হবে AI ◈ আফগানিস্তানের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:১৮ রাত
আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভারতের নেপাল নীতিতে 'রিসেট বাটন' চাপলেন মোদি, শিক্ষা বাংলাদেশের কাছ থেকে

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্কসংক্রান্ত বিরোধও গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি কোনো মন্তব্য ছাড়া-  কেবল কৃষকের অধিকার রক্ষার প্রসঙ্গ বাদ দিলে। তবে এবার ব্যতিক্রম ঘটল। মণিপুরে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেপালের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকিকে অভিনন্দন জানালেন এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য শুভেচ্ছা জানালেন। মোদি তার বক্তব্যে কারকিকে নেপালের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য অভিনন্দন জানান এবং একে নারীর ক্ষমতায়নের ইতিবাচক দৃষ্টান্ত বলে আখ্যায়িত করেন। পাশাপাশি তিনি আশা প্রকাশ করেন যে কারকি নেপালে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করবেন।

দুই প্রতিবেশী দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় বন্ধনের প্রেক্ষাপটে মোদির এই বার্তাটি ছিল গঠনমূলক। বিশেষত যখন নেপাল দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ‘ওল্ডিগার্কি’- বৃদ্ধ নেতৃত্বের শাসনের বিরুদ্ধে তরুণদের নেতৃত্বে আন্দোলনের সাক্ষী হয়েছে।

কেন মোদি নেপালের প্রসঙ্গ তুললেন?
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মোদির এক্স পোস্টের মাধ্যমে বার্তা ইতিমধ্যে পৌঁছে গিয়েছিল। তাহলে কেন মণিপুরের জনসভায় মোদি নেপালের কথা বললেন? এর উত্তর নিহিত রয়েছে নেপালের জেনারেশন জেডের (জেন-জি) ভূমিকায়। তারাই ‘ওল্ডিগার্কি’র অবসান ঘটিয়ে কারকির নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। নয়াদিল্লি বুঝে গেছে, নেপাল নীতিতে এখন নতুন সূচনা প্রয়োজন। এতদিন ভারত মূলত নেপালের ঐতিহ্যবাহী দল ও বৃদ্ধ নেতৃত্বের সঙ্গে কাজ করেছে।

বাংলাদেশের শিক্ষা
ভারতের পররাষ্ট্রনীতির দীর্ঘদিনের সমালোচনা ছিল যে নয়াদিল্লি প্রতিবেশী দেশগুলোতে বহুমুখী সংযোগ গড়ে তোলেনি। তার নির্দিষ্ট প্রিয়পাত্র- বাংলাদেশে শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ ও নেপালে শের বাহাদুর দেউবার নেপালি কংগ্রেস। কিন্তু সঙ্কট বা রাজনৈতিক রূপান্তরের সময় নতুন নেতৃত্বকে সঙ্গে নেয়া কঠিন হয়ে পড়ত। এখানেই ভারত নীতি পরিবর্তন করছে। মোদি তার বক্তব্যে নেপালের তরুণদের প্রশংসা করেন, যারা অস্থির সময়ে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষা করেছে। তিনি উল্লেখ করেন, তরুণরা ৮-৯ সেপ্টেম্বরের আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত শহর পরিষ্কার করেছে এবং ভবনগুলো সাদা রঙে রাঙিয়েছে। এভাবেই ভারত জানিয়ে দিল, নেপাল নীতিতে ‘রিসেট বাটন’ টিপে দেয়া হয়েছে এবং তরুণ নেতৃত্বকে কেন্দ্র করে নতুনভাবে সম্পৃক্ত হওয়া হবে।

নতুন প্রজন্ম ও ভারতের চ্যালেঞ্জ
জেন জি ইতিহাসের বোঝা বহন করে না। তারা বাস্তববাদীভাবে বিদেশনীতি চালাবে এবং সুযোগ ও অর্থনৈতিক সুবিধা যেখান থেকে আসবে সেখানে ঝুঁকবে। ভারতের উচিত তাদের স্বাভাবিক পছন্দ হওয়া, কারণ ভারত নেপালের উন্নয়নে বড় অংশীদার, তৃতীয় দেশের বাণিজ্যের প্রধান প্রবেশদ্বার এবং সংকটে (যেমন ২০১৫ সালের ভূমিকম্প) প্রথম সাড়া দিয়েছে। তবে তরুণ প্রজন্ম ভারতের সঙ্গে ২০১৫ সালের কথিত সীমান্ত অবরোধ ও ২০২০ সালের লিপুলেখ-কালাপানি বিরোধ দেখেছে। ঐতিহ্যবাহী দলগুলো এসব ইস্যুকে জাতীয়তাবাদী আবেগ উসকে ভোটের কাজে লাগিয়েছে। তরুণরা সোশ্যাল মিডিয়ায় এসব নিয়ে আরও সরব হতে পারে। হ্যাশট্যাগ ব্যাক অব ইন্ডিয়া এবং হ্যাশট্যাগ গো ব্যাক ইন্ডিয়া ট্রেন্ডে তরুণদের সক্রিয় অংশগ্রহণই তার প্রমাণ।

চীনের প্রভাব
চীন গত এক দশকে নেপালি তরুণদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছে শিক্ষা বৃত্তি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ইত্যাদির মাধ্যমে। সিচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয় ও ইউনান বিশ্ববিদ্যালয়ে নেপালি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। তরুণদের একাংশ মনে করে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ নেপালের উন্নয়নের সুযোগ। চীন আপাতত চুপচাপ থাকলেও, তরুণ নেতৃত্বাধীন নেপালকে স্বাগত জানাতে পিছপা হবে না। ভৌগোলিকভাবে নেপালকে চীন ভারতীয় উপমহাদেশে প্রবেশেরদ্বার হিসেবে দেখে।

নেপালে জেন জি যখন মূলধারার ভূমিকায় আসছে, ভারত দ্রুত রাজনৈতিক পরিবর্তনকে মেনে নিয়ে ইতিবাচক বার্তা পাঠিয়েছে। তরুণদের ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিয়ে নয়াদিল্লি স্পষ্ট করছে যে নেপাল নীতিতে পুনর্গঠন ঘটেছে এবং তরুণদের সঙ্গে গভীর সম্পৃক্ততা এখন অপরিহার্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়