নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় কাটসিনা রাজ্যে ফজরের নামাজের সময় মসজিদ ও এর আশপাশের বাড়িঘরে ভয়াবহ এক হামলা চালিয়েছে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী। এতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে অন্তত ৫০ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া সশস্ত্র হামলাকারীরা সেখানকার প্রায় ৬০ বাসিন্দাকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তা ও বাসিন্দারা।
বুধবার (২০ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রয়টার্স।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, মঙ্গলবার ভোরের দিকে কাটসিনা রাজ্যের মালুমফাশি জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের উঙ্গুওয়ান মানতাউ গ্রামে ওই হামলার ঘটনা ঘটেছে। মুসল্লিরা ফজরের নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে জমায়েত হয়েছিলেন। সেই সময় মোটরসাইকেলে করে আসা সশস্ত্র হামলাকারীরা প্রথমে মসজিদের ভেতরে গুলি চালান। এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে পুরো গ্রামে নির্বিচার গুলি ও অগ্নিসংযোগ করেন তারা।
নাইজেরিয়ার সংসদের মালুমফাশি আসনের আইনপ্রণেতা আমিনু ইব্রাহিম বলেন, বন্দুকধারীরা কমপক্ষে ৩০ জনকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছেন। এছাড়া আরও ২০ জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়েছে। তিনি এই ঘটনাকে ধারাবাহিক নৃশংস হামলা বলে মন্তব্য করেছেন।
কাটসিনা পুলিশের মুখপাত্র আবুবকর সাদিক আলিউ বলেন, পুলিশ দুটি গ্রামে পরিকল্পিত বড় হামলা ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে। তবে পালানোর সময় হামলাকারীরা মানতাউ গ্রামে ঢুকে স্থানীয়দের ওপর গুলি চালিয়েছে।
তিনি বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই কয়েকটি বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছেন হামলাকারীরা। বেঁচে যাওয়া স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, হামলাকারীরা নারীদের ও কিশোরীদের অপহরণ করে নিয়ে গেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মুহাম্মদ আব্দুল্লাহি বলেন, ফজরের নামাজ চলাকালীন মসজিদের ভেতরে গুলি শুরু করে হামলাকারীরা। এতে আমার প্রতিবেশী নিহত হয়েছেন। আমি ভাগ্যবান, কারণ আমি তখন বাসা থেকে বের হইনি।
মালুমফাশির স্থানীয় একটি হাসপাতালের কর্মকর্তা ফাতিমা আবাকার রয়টার্সকে বলেন, হাসপাতালের মর্গে ২৭ জনের লাশ আনা হয়েছিল। তবে দাফনের জন্য অনেকের মরদেহ তাদের পরিবারের সদস্যরা নিয়ে গেছেন।
গত কয়েক বছরে নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এই ধরনের নৃশংস হামলা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থানীয় বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা প্রায়ই দেশের নানা প্রান্তে গ্রাম ও সড়কে হামলা চালিয়ে থাকেন। বাসিন্দাদের অপহরণের পর মুক্তিপণ ও কৃষকদের কাছ থেকে জোর করে অর্থ আদায় করেন তারা।