এল আর বাদল : ইরানের ফোরদো সহ তিনটি ভূগর্ভস্থ পরমাণু কেন্দ্রে সম্প্রতি হামলা চালিয়েছিল আমেরিকা। সেই হামলার পরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি ধ্বংস করেছে আমেরিকা। তবে সেই দাবি ঘিরে সাম্প্রতিক সময়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। এরই মাঝে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ সাংবাদিক সম্মেলন করে ইরানে মার্কিন হামলার সাফল্যের 'প্রমাণ' দিলেন। তবে প্রমাণ বলতে আমেরিকার ব্যবহৃত বোমার 'টেস্ট ফুটেজ'। --- সূত্র, হিন্দুস্তান টাইমস
ফোরদোতে ইরানের ভূগর্ভস্থ পরমাণু স্থাপনায় হামলায় ব্যবহৃত বাঙ্কার-বাস্টার বোমার টেস্ট ফুটেজ শেয়ার করেছে হোয়াইট হাউজ। এই নিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথকে উদ্ধৃত করে হোয়াইট হাউজের পোস্টে লেখা হয়েছে, 'সংবাদমাধ্যমের লোকেরা তথ্য ফাঁস করে বিষয়টিকে ঘুরিয়ে দেখানোর চেষ্টা করছেন এবং দাবি করার চেষ্টা করছে যে আমাদের অভিযান সফল হয়নি। এটা দায়িত্বজ্ঞানহীন।
' এদিকে এই মিশনের তত্ত্বাবধানকারী জেনারেল ড্যান 'রাজিন' কেইন যোগ করেছেন, 'এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে আমার লোম খাড়া হয়ে যাচ্ছে।' এদিকে হেগসেথ আবার দাবি করেছেন, 'আমি এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্য সম্পর্কে অবগত নই যা বলেছে যে জিনিসগুলি যেখানে থাকার কথা ছিল সেখানে ছিল না - সরানো হয়েছে বা অন্য কিছু।' উল্লেখ্য, এর আগে দাবি করা হয়েছিল, ইরানের ফোরদো থেকে ১৬টি ট্রাক বের হতে দেখা গিয়েছিল সম্প্রতি।
এদিকে ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে ক্ষয়ক্ষতির প্রমাণ দিতে গিয়ে নিজেদের বোমা পরীক্ষার ভিডিয়ো দেখান গেহসেথ। তিনি বলেন, 'মক প্রোগ্রামে আমাদের অনেক পিএইচডি কাজ করছিলেন। বোমাটি গভীর ভূগর্ভস্থ সমৃদ্ধকরণ চেম্বারে না পৌঁছানো পর্যন্ত বিস্ফোরণ হবে না। তেমন ভাবেই সেটি তৈরি করা হয়েছিল। টানেলের গভীরে গিয়ে পারমাণবিক সরঞ্জাম ধ্বংস করতে সক্ষম একটি শকওয়েভ তৈরি করে এই বোমা। ১২টি বোমা ফোরদোতে আঘাত হানে। ছয়টি বাঙ্কার-বাস্টার ব্যবহৃত হয়েছিল অভিযানের সময়। সাতটি বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান এই অভিযানে অংশ নিয়েছিল। প্রতিটি দুটি করে বোমা বহন করেছিল।
উল্লেখ্য, ইরানের ওপর হামলার পর থেকেই ট্রাম্প দাবি করে এসেছিলেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে আমেরিকা। তবে সম্প্রতি সিএনএন এবং নিউ ইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টে দাবি করা হয়, পেন্টাগনের গোয়েন্দাদের মূল্যায়ন অনুযায়ী, ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয়নি। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার (ডিআইএ) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা মাত্র কয়েক মাস পিছিয়ে গেছে মার্কিন হামলায়। তা পুরোপুরি নির্মূল করা হয়নি।
মূল্যায়ন অনুসারে, ২২ জুনের হামলায় ফোরদো, নাতাঞ্জ এবং ইসফাহানের সাইটগুলিতে যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। তবে ইরানের পারমাণবিক পরিকাঠামো মূলত অক্ষত রয়েছে। এই আবহে সিআইএ পরিচালক জন র্যাটক্লিফ দাবি করেছিলেন যে নতুন গোয়েন্দা তথ্যে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে সাম্প্রতিক মার্কিন বিমান হামলার ফলে ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামোর মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে।