শিরোনাম
◈ আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার অনুরোধ অন্তর্বর্তী সরকারের, মব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে ◈ ১৬ জনের স্ক্রিনশট ‘ফাঁস’ করে যা বললেন নিলা ইসরাফিল ◈ মিরপুরে পিৎজা ক্লাব ভবনে আগুন ◈ ঢাকার একাংশে ভয়াবহ লোডশেডিং, অন্ধকারে রামপুরা-হাতিরঝিল-ফার্মগেট ◈ পঞ্চগড়ে নির্মাণাধীন স্কাউট ভবনের বীম ধসে পড়ায় মান নিয়ে প্রশ্ন ◈ রাতের আঁধারে বিদ্যুৎহীন রাজধানী, রামপুরা সাবস্টেশনে যান্ত্রিক সমস্যা ◈ ঢাকা-১৫ ছাড়াও যে আসনে প্রার্থী হতে পারেন জামায়াত আমির ◈ তিন পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা: ইরানের জবাব কেমন হতে পারে? ◈ ইরানে ৪ দিনের ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট: ক্লাবহাউজে ভরসা রেখে বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগে ইরানিরা ◈ ক্লাব বিশ্বকাপ জিতলেও মৌসুমের ব্যর্থতা মুছবে না ম্যানচেস্টার সিটির: কোচ গা‌র্দিওলা

প্রকাশিত : ২২ জুন, ২০২৫, ০৫:২৪ বিকাল
আপডেট : ২৩ জুন, ২০২৫, ০১:০২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ট্রাম্পের আকস্মিক হামলা: শান্তির আশ্বাস না কি যুদ্ধের ঘণ্টাধ্বনি?

ইরানিদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দুসপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বলেছিলেন, এরপর তিনি তেহরানে হামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে দু-দিন পার না হতেই শনিবার (২১ জুন) জানান, ইরানের নাতানজ, ফোর্দো এবং ইসফাহান পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন বিমান বোমা ফেলেছে।

তবে কী তার দুসপ্তাহের সময়সীমা ছিল কেবলই ভাঁওতাবাজি? ইরানিদের একটু দম ফেলার ফুরসত দেওয়ার আশা দেখিয়ে তাদের অপ্রস্তুত অবস্থায় কুপোকাত করার কৌশল?

নাকি পর্দার অন্তরালে ট্রাম্পের বিশেষ কর্মকর্তা স্টিভ উইটকফের সব কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়াতেই এই আকস্মিক হামলা? 
হামলার পর এখন পর্যন্ত অনেক কিছুই খোলাসা হয়নি।

হামলার ঘোষণা সবার আগে ট্রাম্প জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। ইরানে খুবই সফল সামরিক পদক্ষেপ পরিচালিত হয়েছে বলে কিছুক্ষণ আত্মদম্ভ করে তিনি যোগ করেন, এখন শান্তির সময়।

অবশ্য, হামলা চালিয়ে আসার পর তার শান্তির প্রচেষ্টা অনেকটা অতি আশাবাদীর বাণী শোনাতে পারে। তিনি হয়তো ধারণা করছেন, ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা দেখে ব্যর্থ মনোরথে আলোচনার টেবিলে বাধ্য ছেলের মতো হাজির হবে ইরান। তবে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলি হামলা হজম করে এবং বহুবছর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার চাপে থেকেও যারা নিজেদের গোঁ ছাড়েনি, তারা এই হামলায় টলে যাবে ভাবাটা কিছুটা আকাশকুসুম কল্পনা বৈকি।

ইরানের সার্বভৌমত্বে ইসরায়েলের সঙ্গে মিলে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করলে তার যথাযথ জবাব দেওয়া হবে বলে সতর্ক করেছিল ইরান। তাদের সামরিক ও পারমাণবিক সক্ষমতা গুড়িয়ে দেওয়ার জন্য ইসরায়েল যারপরনাই চেষ্টা করলেও ভুলে গেলে চলবে না, তেহরানের শাসকগোষ্ঠীর হাতে এখনও পর্যাপ্ত অস্ত্র থাকার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।

ট্রাম্পের পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া তিনি ঘরে-বাইরে দুজায়গাতেই অনুভব করবেন বলে ধারণা করা যাচ্ছে। ইরান এই হামলার প্রতিক্রিয়া কীভাবে জানাবে, সেটার ওপর পরবর্তী অনেক কিছু নির্ভর করছে। সব হিসাব নিকাশ মুহূর্তের মধ্যে উল্টেপাল্টে যাওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে, ট্রাম্প সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন, তার নির্দেশে পরিচালির বোমা হামলাটি ছিল বিচ্ছিন্ন, একক ঘটনা। এটা পুরোদস্তুর অভিযানে পরিণত হবে না। তিনি হয়ত আশা করে আসছে, ইরানকে বাগে আনা গেছে।

কিন্তু যদি তার ধারণা ভুল হয়, যদি তার ধারণ অনুযায়ী ইরান দুর্বল না হয়ে থাকে, তখন তিনি পড়বেন উভয় সংকটে। একদল তখন চাইবে আরও জোরালো হামলা করে ইরানকে পুরো পঙ্গু করে ফেলা হোক। অথচ সেটা করলে ট্রাম্পে নিজের কথার মূল্য নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে।

বছরের পর বছর ট্রাম্প তার পূর্বসূরি প্রেসিডেন্টদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং নিজের ঢোল নিজে পিটিয়েছেন। তার সবচেয়ে বড় অহংকারের জায়গা ছিল, নিজের প্রথম মেয়াদের কোনও যুদ্ধ বাধাননি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তো তিনি বলেই বসেন, সংঘাত নিরসনে তার অবদানের জন্য চার থেকে পাঁচটা নোবেল শান্তি পুরস্কার তার এমনিতেই পাওয়া উচিত ছিল।

এখন যদি তিনি কোনও কারণে ইরানে গিয়ে যুদ্ধে জড়ান, তাহলে তার শান্তির দূত পরিচয়ে দাগ পড়তে পারে। শনিবারের হামলাকে একক ঘটনা বলে হয়তো তিনি মার্কিনিদের শান্ত করতে পারবেন, কিন্তু পুরোদমে অভিযানে নেমে গেলে সেটা সামাল দেওয়া দুষ্কর হয়ে উঠতে পারে বৈকি।

এখন দেখা যাক কোথাকার জল কোথায় গড়ায়। ট্রাম্প তার দান চেলে দিয়েছেন। এখন খেলা অনেকটাই নির্ভর করবে ইরানের পাল্টা চালের ওপর। পরবর্তীতে যা ঘটতে যাচ্ছে, বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশের অধিপতি হয়েও তার অনেক কিছুই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়