শিরোনাম
◈ বাড়ি যদি কবরও হয়, তবু দেশ না ছাড়ার অঙ্গীকার ইরানের ‘জেনজি’ ◈ স্ত্রী নির্যাতন বেশি হয় বরিশালে, সবচেয়ে কম সিলেটে! ◈ ভারতীয় দলের কোচ হতে চান সৌরভ গাঙ্গু‌লি ◈ জাস‌প্রিত বুমরাহর রেকর্ড ফাইফার, লিডসে ইংলান্ড- ভারত লড়াই হ‌চ্ছে সমা‌নে সমান  ◈ আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি কি সত্যিই রাসূল (সা.)-এর বংশধর? ◈ রাজধানীতে দুই ঘণ্টা পর স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে লোডশেডিং পরিস্থিতি ◈ ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের গোপন হামলা ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’: পেন্টাগনের বিস্তারিত প্রকাশ ◈ নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন কত দূর? ◈ নুরুল হুদার পর এবার সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেপ্তার ◈ আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার অনুরোধ অন্তর্বর্তী সরকারের, মব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে

প্রকাশিত : ২১ জুন, ২০২৫, ০৩:৩৯ দুপুর
আপডেট : ২৩ জুন, ২০২৫, ১০:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এক শুক্রবার যেভাবে বদলে দিল খামেনির জীবন! (ভিডিও)

ইরানের লৌহমানব আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে প্রভাবশালী ও রহস্যময় ব্যক্তিত্বদের একজন। ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি শুধু ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা নন, দেশটির রাজনৈতিক ভাগ্যও কঠোরভাবে নির্ধারণ করে চলেছেন।

১৯৩৯ সালের ১৯ এপ্রিল মাশহাদে এক সাধারণ ধর্মীয় শিক্ষকের ঘরে জন্ম নেন তিনি। মাত্র ২০ বছর বয়সেই তার জীবন নতুন মোড় নেয়। নাজাফ ও কুমে উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে ইসলামি জ্ঞান, দর্শন ও প্রশাসনে পান্ডিত্য অর্জন করেন তিনি। শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলবির বিরুদ্ধে আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার কারণে ছয়বার গ্রেফতার ও তিন বছর নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয় তাকে।

এরপর আসে ১৯৮১ সালের ২৭ জুন, এক শুক্রবার—যে দিনটি তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ওই দিন তেহরানের আবুজার মসজিদে বক্তৃতা শেষে একজন সাংবাদিক ছদ্মবেশে একটি টেপ রেকর্ডার খামেনির সামনে রাখেন, যা বিস্ফোরিত হয়। সেই রেকর্ডারের ভেতরে ছিল বোমা—গায়ে লেখা ছিল: “ইসলামী প্রজাতন্ত্রের জন্য ফোরকান গ্রুপের উপহার।” এতে তার ডান হাত চিরতরে পঙ্গু হয়ে যায় এবং গলার স্বরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

পরবর্তীতে জানা যায়, এই হামলার পেছনে ছিল চরমপন্থী গোপন সংগঠন ফোরকান গ্রুপ। ঠিক পরদিনই আইআরপি কার্যালয়ে আরেকটি বিস্ফোরণে নিহত হয় ৭০ জনের বেশি মানুষ। এসব ঘটনা ইরানের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও দ্বন্দ্বের গভীর চিত্র তুলে ধরে। তবে এই কঠিন সময় তাকে আরও দৃঢ় করে তোলে।

ইসলামী বিপ্লবের পর তিনি শরিক সুরক্ষা পরিষদের সদস্য এবং বিপ্লবী অভ্যন্তরীণ রক্ষাকারী বাহিনীর সহপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৮১ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত দু’বার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮৯ সালে আয়াতুল্লাহ খোমেনির মৃত্যুর পর তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচিত হন। যদিও তখন তার ‘মারজাআ’ (ধর্মীয় উচ্চতর যোগ্যতা) ছিল না, যা বিতর্কের জন্ম দেয়।

২০০৩ সালে এক ফতোয়ার মাধ্যমে তিনি পারমাণবিক অস্ত্র না রাখার নৈতিক অবস্থান তুলে ধরেন, যা ইরানের শান্তিপূর্ণ অভিপ্রায়ের বার্তা দেয়।

২০২৫ সালের ১৩ জুন—আরও একটি শুক্রবার—ইরান-ইসরাইল সংঘাত নতুন মোড় নেয়। ইসরাইলি হামলার মধ্যে এবার খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনার কথাও উঠে আসে। অভ্যন্তরীণ বিক্ষোভ, অর্থনৈতিক চাপে বিপর্যস্ত দেশ এবং ঘনিষ্ঠদের মৃত্যুর কারণে বর্তমানে খামেনি এক চরম সংকটে রয়েছেন। জেরুজালেম পোস্ট জানিয়েছে, তার উত্তরসূরি হিসেবে সবচেয়ে আলোচনায় আছেন তার পুত্র মোজতবা খামেনি।

চার দশক ধরে ইরানের ধর্মীয় ও রাজনৈতিক কাঠামোকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে আসা আয়াতুল্লাহ খামেনি বর্তমানে ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছেন—যার ভবিষ্যৎ অধ্যায় হয়তো আরও উত্তাল হতে চলেছে।

উৎস:

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়