এল আর বাদল : আমেরিকার সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন, ইরানের পরমাণু ঘাঁটি ধ্বংস করতে বদ্ধপরিকর ইসরায়েল। আমেরিকা যুদ্ধে যোগ দেবে কিনা সে বিষয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকার বিবৃতি প্রকাশ্যে আসার পরই ইসরায়েলের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন নেতানিয়াহু। স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিলেন, কেউ পাশে থাক, বা না থাক ইরানের পরমাণু ঘাঁটি ধ্বংস হবেই। -- সংবাদপ্রতিদিন
পরমাণু বোমার দৌড়ে অনেকখানি এগিয়ে যাওয়া’ ইরানকে থামাতে গত শুক্রবার বেলাগাম হামলা চালায় ইসরায়েল। তেহরানের প্রথম সারির সামরিক কর্তা, বিজ্ঞানীদের হত্যার পাশাপাশি হামলা চলে পরমাণু ঘাঁটিতে। এরপর থেকে লাগাতার একে অপরকে লক্ষ্য করে মিসাইল ছুড়ছে দুই দেশ। এরইমাঝে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লিভিট জানান, ”অদূর ভবিষ্যতে ইরানের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে বা নাও পারে। দুই দিকেই যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকায়, আগামী দুই সপ্তাহের ভিতরে আমি সিদ্ধান্ত নেব যে আমি এটা করব কিনা।
সেই সঙ্গেই লিভিট জানিয়েছেন, ট্রাম্প ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক পথে সমাধানের জন্য হাঁটতে প্রস্তুত। তবে তাঁর আসল লক্ষ্যই হল যেনতেন প্রকারেণ তেহরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে আটকানো। তাঁর কথায়, ”প্রেসিডেন্ট সব সময়ই কূটনৈতিক সমাধানে আগ্রহী। তিনি শান্তিরক্ষার মূল কাণ্ডারী। যদি এক্ষেত্রে কূটনৈতিক পথে সমস্যা মাধানের সুযোগ থাকে উনি সেটা নিতে প্রস্তুত। কিন্তু প্রয়োজন পড়লে বলপ্রয়োগ করতেও উনি ভীত নন।
মার্কিন বিবৃতি প্রকাশ্যে আসার পর এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু জানান, “আমরা ইরানের পরমাণু ঘাঁটি ধ্বংস করব। আমাদের সেই ক্ষমতা রয়েছে। এরপর ইরানের বর্তমান শাসকের পতন হবে কিনা, সেখানকার শাসনব্যবস্থায় বদল আসবে কিনা তা সেখানকার জনগণের সিদ্ধান্ত।” এরপরই আমেরিকা প্রসঙ্গে নেতানিয়াহু বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্প আমাদের সঙ্গে যুদ্ধে যোগ দেবেন কি না, সেটা তার একান্ত নিজস্ব সিদ্ধান্ত। আমেরিকার পক্ষে যেটা ভাল, তিনি সেটাই করবেন। ইজরায়েলের জন্য যেটা সঠিক বলে মনে হবে ইসরায়েল সেটা করবে।
উল্লেখ্য, ইজরায়েল-ইরান যুদ্ধে সরাসরি নিজেদের যুক্ত করা থেকে বিরত রেখেছে আমেরিকা। কিন্তু গত কয়েক দিনে ট্রাম্পের একের পর এক মন্তব্যে জল্পনা বেড়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, এবার কি সেই অবস্থান থেকে সরে আসতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প? ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইরানে হামলার পরিকল্পনায় সায় দিয়ে দিয়েছেন। তবে এখনই আক্রমণে যেতে চান না তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের একটাই বক্তব্য, যে কোনও মূল্যে ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা বন্ধ করতে হবে। আপাতত যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েও কূটনৈতিক আলোচনার পথ খোলা রাখতে চাইছেন ট্রাম্প।
তবে হোয়াইট হাউসের অপেক্ষায় বসে না থেকে কার্যত একাই ইরান ধ্বংসের হুঁশিয়ারি দিল ইসরায়েল।