ভারতের আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বিধ্বস্ত বিমানটিতে মোট ২৪২ জন আরোহী ছিলেন। এর মধ্যে মধ্যে ২৩২ জন যাত্রী ও ১০ জন ক্রু সদস্য। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সবাই নিহত হয়েছেন বলে খবর প্রকাশ করেছে এনডিটিভি, নিউজ-১৮-সহ একাধিক ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্লাইটটিতে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ নাগরিক, সাতজন পর্তুগিজ ও একজন কানাডীয় যাত্রী ছিলেন।
এর আগে ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বেলা ১টা ৩৯ মিনিটে সরদার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে টেকঅফ করেছিল বিমানটি। তবে এক মিনিটের মধ্যেই এটি এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে। ফ্লাইট-ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম ফ্লাইটরাডার-২৪-এর তথ্য অনুযায়ী, উড়োজাহাজটির সিগন্যাল হারানোর সময় এর উচ্চতা ছিল মাত্র ৬২৫ ফুট—যা একটি দীর্ঘপথগামী ও পূর্ণ জ্বালানিভর্তি বিমানটির জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, উড়োজাহাজটি উড্ডয়নের পর উঁচুতে উঠতে পারছিল না। পরে এটি হঠাৎ করে তীব্র বাঁক নেয় এবং দ্রুত নেমে আসতে থাকে। এরপর শোনা যায় এক প্রচণ্ড বিস্ফোরণ এবং দেখা যায় এক বিশাল অগ্নিগোলক। শহরের ওপর দিয়ে ঘন কালো ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়।
দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। বিমানের পূর্ণ জ্বালানি থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের প্রবল সংগ্রাম করতে হয়।
ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন জানিয়েছে, বিমানটির ক্যাপ্টেন সুমিত সাবহারওয়াল ও ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্দার উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই ‘মে ডে’ সংকেত পাঠান—যা একটি গুরুতর জরুরি অবস্থা নির্দেশ করে। তবে সংকেত পাঠানোর পর আর কোনো যোগাযোগ হয়নি।
বিমানটি কেন উচ্চতা নিতে পারেনি এবং এত দ্রুত নেমে এল, তা এখনো স্পষ্ট নয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, উড্ডয়নের সময়ই কোনো বড় ধরনের যান্ত্রিক ব্যর্থতা ঘটেছিল। বিষয়টির তদন্ত করছে ভারতীয় বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও বোয়িংয়ের একটি কারিগরি দল।
এই ঘটনার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও বেসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী রামমোহন নাইডুর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি দুই মন্ত্রীকেই আহমেদাবাদে যাওয়ার নির্দেশ দেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার ও সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
এর আগে অমিত শাহ গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলের সঙ্গেও কথা বলেন এবং উদ্ধার তৎপরতা নিয়ে আলোচনা করেন।
বিশ্বজুড়ে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।