সৌদি আরব ২০২৬ সাল থেকে মদ বিক্রির অনুমতি দেবে—এমন খবর সম্প্রতি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলেও তা ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র। তারা জানান, এ বিষয়ে কোনো সরকারি ঘোষণা বা নীতিগত পরিবর্তন হয়নি এবং সৌদি আরবের বিদ্যমান আইনি কাঠামোর সঙ্গে এসব দাবি অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সোমবার (২৬ মে) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আরব নিউজ।
আরব নিউজকে দেওয়া তথ্যে অবগত সূত্রগুলো জানায়, এই ধরনের খবরের সঙ্গে সৌদি আরবের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো অফিসিয়াল নিশ্চয়তা নেই এবং এটি দেশের বর্তমান নীতিমালা বা বিধি-বিধানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
তারা আরও জানান, পর্যটন খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে সৌদি আরব যে উচ্চাকাঙ্ক্ষী ভিশন বাস্তবায়ন করছে, তা এখনও দেশের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটিয়ে একটি অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদানেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এই পন্থা আন্তর্জাতিক পর্যটকদের মধ্যে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছে, যারা সৌদি আরবের ঐতিহ্য ও প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য অন্বেষণে আগ্রহী।
অমুসলিম কূটনীতিকদের জন্য মদ সংক্রান্ত নিয়মনীতি বিষয়ে ব্যাখ্যা
অমুসলিম দেশের কূটনীতিকদের জন্য মদ সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সূত্রগুলো জানান, সৌদি আরব নতুন একটি কাঠামো চালু করেছে, যার উদ্দেশ্য হলো কূটনৈতিক চালানের মাধ্যমে মদ বা অনুরূপ পণ্যের অননুমোদিত ব্যবহার রোধ করা।
এই নতুন ব্যবস্থার আওতায়, অমুসলিম দেশের দূতাবাসগুলো আর কূটনৈতিক চালানে মদ ও নির্দিষ্ট কিছু পণ্য আমদানি করতে পারবে না। তবে কঠোর নিয়ন্ত্রিত নিয়মের অধীনে এই ধরনের পণ্যে সীমিত প্রবেশাধিকার থাকতে পারে, যাতে অপব্যবহার প্রতিরোধ করা যায়।
মদের দোকান শুধুমাত্র অমুসলিম কূটনীতিকদের জন্য নির্ধারিত
এদিকে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবের শাসক যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান (এমবিএস) দেশটিতে ব্যাপক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংস্কারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার উদ্যোগে ২০১৭ সালে নারীদের গাড়ি চালানোর ওপর দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়। এই সংস্কারমূলক উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে এক সময়ের কঠোর রক্ষণশীল দেশটি এখন ধীরে ধীরে আরও উন্মুক্ত ও আধুনিক সমাজব্যবস্থার দিকে এগোচ্ছে। যদিও এখনও মদ বিক্রি ও সেবনের ওপর আনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কিছু ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ লক্ষ্য করা গেছে। এর একটি উদাহরণ হচ্ছে, ২০২৩ সালে রিয়াদে একটি সীমিত পরিসরের মদের দোকান চালু করা, যা শুধুমাত্র অমুসলিম কূটনীতিকদের জন্য নির্ধারিত। এটি ছিল সৌদি আরবে এই ধরনের প্রথম বৈধ উদ্যোগ।
তবে, সৌদি আরব ও কুয়েত উপসাগরীয় অঞ্চলের একমাত্র দুটি দেশ যারা এখনো মদের খুচরা বিক্রির ওপর পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা বজায় রেখেছে।