শিরোনাম
◈ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট: আকার কমছে, কর কাঠামোয় পরিবর্তন ◈ খোলাবাজারে ডলারের দাম বৃদ্ধি, ব্যবস্থা নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক ◈ পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন ছুটিতে, দায়িত্ব নিচ্ছেন নজরুল ইসলাম ◈ রেমিট্যান্সে করের প্রস্তাব: যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত কি বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাহে বিপর্যয় আনবে? ◈ চাহিদা মেটাতে সিঙ্গাপুর থেকে এলএনজি কিনছে সরকার ◈ ১৫ বছরে বাজারের প্রতিযোগিতা নষ্ট করা হয়েছে : বাণিজ্য উপদেষ্টা ◈ বেনাপোলে স্কুলের ফ্যান,ক্যামেরা, চেয়ার ভেঙে শিক্ষার্থীদের টিকটক ◈ বাংলাদেশের প্রতি বিশ্বের আস্থা বাড়ছে: প্রধান উপদেষ্টা ◈ নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ, কাল বিক্ষোভে নামছে এনসিপি (ভিডিও) ◈ কালো টাকা সাদা করার সব বিধান বাতিলের দাবি টিআইবির

প্রকাশিত : ২১ মে, ২০২৫, ০৪:০২ সকাল
আপডেট : ২১ মে, ২০২৫, ০৭:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

তরুণীর প্রতারণার শিকার ২৫ পুরুষ, অতঃপর...

বিয়ে নারী-পুরুষের কাছে পবিত্র সম্পর্ক হলেও এই সম্পর্ককে রীতিমতো আতঙ্কে রূপ দিয়েছেন এক নারী। বিয়ের নামে প্রতারণায় ছিল যার মূল কাজ। একে একে বিয়ের ফাঁদে ফেলে ২৫ জন পুরুষকে সর্বস্বান্ত করেছেন এক নারী। তার নাম অনুরাধা পাসওয়ান হলেও তিনি এখন বেশি পরিচিত ‘ডাকাত কনে’ নামে। এ ঘটনা ঘটেছে ভারতে।

এই নারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ২৫ জনের সঙ্গে বিয়ের নামে প্রতারণা করেছেন তিনি। প্রতারণার মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ রুপির গয়না ও নগদ অর্থ নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।

প্রতিবার নতুন নাম, নতুন শহর ও নতুন পরিচয় নিয়ে পুরুষদের ভুয়া বিয়ের ফাঁদে ফেলতেন এই তরুণী। তিনি একজন আদর্শ স্ত্রী ও পুত্রবধূর অভিনয় করতেন। তারপর সুযোগ বুঝে গয়না ও টাকা নিয়ে সটকে পড়তেন।

শেষমেশ সাওয়াই মাধোপুর পুলিশের কৌশলের ফাঁদে ধরা পড়েন অনুরাধা। পুলিশ তার সঙ্গে একটি ভুয়া বিয়ের নাটক সাজায়। সেই সূত্রেই তাকে গ্রেফতার করা হয়।

পাশের বাড়ির সুন্দরী গরিব কনে

অনুরাধা একা। গরিব ও অসহায়। তার এক বেকার ভাই আছে। তিনি বিয়ে করতে চান, কিন্তু অর্থসংকটের কারণে জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করতে পারেন না। ৩২ বছর বয়সী এই তরুণী নিজেকে এভাবে পাশের বাড়ির সুন্দরী গরিব কনে হিসেবে উপস্থাপন করেন।

কিন্তু বাস্তবে অনুরাধা একটি ভুয়া বিয়ে চক্রের প্রধান। যিনি প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের বিশ্বাস ও অর্থ হাতিয়ে নেন। এই চক্রের সদস্যরা তাঁর ছবি ও জীবনবৃত্তান্ত হবু বরদের কাছে নিয়ে যান। তাদের কাছে অনুরাধাকে আদর্শ জীবনসঙ্গিনী হিসেবে তুলে ধরেন। ঘটক পরিচয়ে এই চক্রের একজন সদস্য প্রতিটি বিয়ের জন্য দুই লাখ টাকা দাবি করেন।

বিয়ে নিয়ে কথাবার্তা পাকাপাকি হওয়ার পর একটি সম্মতিপত্র তৈরি করা হয়। সে অনুযায়ী হবু দম্পতি মন্দিরে বা বাড়িতে রীতিনীতি মেনে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন। আর সেখানেই শুরু হয় নাটক।

অনুরাধা পাসওয়ান বর ও শ্বশুরবাড়ির পরিবারের সামনে সহজ-সরল ও মায়াবতী কনের অভিনয় শুরু করেন। পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলে তাদের আস্থা অর্জন করেন।

আস্থা গড়ে তোলার কয়েক দিনের মধ্যেই চূড়ান্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন অনুরাধা। এ সময় খাবারে চেতনানাশক মিশিয়ে, গয়না, নগদ অর্থ ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়ে যান।

বিষ্ণু শর্মা এমনই একজন। যে ২৫ জন পুরুষ প্রতারিত হয়েছেন, তার একজন বিষ্ণু বিয়ের জন্য ঋণ করেছিলেন।

গত ২০ এপ্রিল রাজস্থানের সাওয়াই মাধোপুর জেলার বাসিন্দা বিষ্ণু শর্মা বিয়ে করেন মধ্যপ্রদেশের অনুরাধা পাসওয়ানকে। হিন্দু রীতিনীতি মেনে বন্ধু ও পরিবারের উপস্থিতিতে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন কথিত ঘটক পাপ্পু মীনা। বিষ্ণু তাকে বিয়ের জন্য দুই লাখ রুপিও দিয়েছিলেন।

কিন্তু বিয়ের দুই সপ্তাহের মধ্যেই অনুরাধা পাসওয়ান বরের বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। সঙ্গে নিয়ে যান সোয়া লাখ রুপির গয়না, নগদ ৩০ হাজার রুপি এবং ৩০ হাজার রুপির একটি মুঠোফোন।

বিষ্ণু শর্মা বলেন, ‘আমি ফেরি করে পণ্য বিক্রি করে জীবিকা চালাই। ঋণ নিয়ে বিয়ে করেছি। এমনকি মুঠোফোনটাও ধার করে এনেছিলাম, সেটাও সে নিয়ে গেছে। কখনো ভাবিনি, সে আমাকে এভাবে ঠকাবে।’

অনুরাধা যেদিন পালিয়ে যান, সেই রাতের কথা স্মরণ করে শর্মা বলেন, সেই রাতে তিনি কাজ থেকে দেরিতে ফিরেছিলেন। এরপর রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। ‘আমি সাধারণত বেশি ঘুমাই না, কিন্তু সেদিন শিশুর মতো গভীর ঘুমে ছিলাম, যেন কেউ আমাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দিয়েছিল,’ বলেন তিনি।

বিষ্ণু শর্মার মা এই ঘটনার পর তীব্র মানসিক আঘাত পেয়েছেন। এরপর শর্মার পরিবার থানায় একটি অভিযোগ করে।

রাজস্থান পুলিশের ‘পাল্টা চাল’

বিষ্ণু শর্মার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সাওয়াই মাধোপুর পুলিশ অনুরাধা পাসওয়ানের জন্য একটি ফাঁদ তৈরি করে। পুলিশের একজন কনস্টেবলকে বর সাজানো হয়। তিনি একজন ‘কাস্টমার’ হিসেবে চক্রের দালালের কাছে যান। দালাল তাকে বিভিন্ন নারীর ছবি দেখান।

পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘তদন্তে দেখা যায়, সব নথি ও বিয়ের চুক্তিপত্র জাল ছিল। আমাদের দল থেকে একজন কনস্টেবলকে বর সাজিয়ে ওই নারীকে বিয়ের ফাঁদে ফেলা হয়।’

এরপর অনুরাধা পাসওয়ানকে ভোপাল থেকে গ্রেফতার করা হয়।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়