কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার দুই সপ্তাহের মাথায় সামরিক সংঘাতে জড়িয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। মঙ্গলবার (৬ মে) মধ্যরাতের পর পাকিস্তানের কয়েক জায়গায় হামলা চালায় ভারত। এ ঘটনার পর পারমাণবিক ক্ষমতাধর দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরে চলা উত্তেজনায় পারদ আরও চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।
পাকিস্তানের দেয়া তথ্যানুযায়ী, ভারতের হামলায় ২৬ জন বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী এই দুই দেশের মধ্যে হামলা পাল্টা হামলা আবারও শুরু হয়েছে।
১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর থেকেই তাদের এই ‘সাপে-নেউলে’ সম্পর্ক বিদ্যমান। তখন থেকেই কাশ্মীর ইস্যুতে সবচেয়ে বেশি সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়েছে এই দুই দেশ।
চলুন জেনে নেওয়া যাক বিভিন্ন সময়ে পাকিস্তান ও ভারতের যুদ্ধ ও সংঘর্ষে জড়ানোর কারণ।
১৯৪৭: দেশ ভাগ ও প্রথম যুদ্ধ: ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসানে ভারত ও পাকিস্তান আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে জন্ম নেয়। দেশ ভাগের সময় কাশ্মীর রাজ্যের ভারত বা পাকিস্তানে যুক্ত হওয়া নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব প্রথম ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের জন্ম দেয়। ১৯৪৯ সালে জাতিসংঘের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি ও ‘লাইন অব কন্ট্রোল’ স্থাপন করা হয়, যা আজও দ্বন্দ্বের কেন্দ্রবিন্দু।
১৯৬৫: কাশ্মীর যুদ্ধ: কাশ্মীর নিয়ে দ্বিতীয় যুদ্ধ হয় ১৯৬৫ সালে। পাকিস্তান ভারতকে অভিযুক্ত করে ‘অবৈধ দখল’ এর জন্য। সেপ্টেম্বরের যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে যুদ্ধ থামে, কিন্তু সমস্যা থেকে যায়।
১৯৭১: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) স্বাধীনতার জন্য রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম শুরু করলে পাকিস্তান সামরিক অভিযান চালায়। ভারতের হস্তক্ষেপ এবং নয় মাসের যুদ্ধের পর ৩০ লাখের বেশি নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ও শরণার্থী সংকটের মধ্য দিয়ে জন্ম নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ।
১৯৮৯-৯০: কাশ্মীর যুদ্ধ: কাশ্মীরে ভারতবিরোধী যুদ্ধ শুরু হলে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের অর্থায়ন ও প্রশিক্ষণের অভিযোগ তোলে, যা পরবর্তী কয়েক দশক ধরে সংঘাতকে জিইয়ে রাখে।
১৯৯৯: কারগিল যুদ্ধ: পাকিস্তান কারগিল অঞ্চলে ভারতীয় সেনাঘাঁটি দখল করতে গেলে দুই দেশের মধ্যে তীব্র লড়াই শুরু হয়। আন্তর্জাতিক চাপ ও পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের আশঙ্কার মধ্যে পাকিস্তান পিছু হটে।
২০১৯: পুলওয়ামা হামলা ও প্রতিক্রিয়া: কাশ্মীরের পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলায় ৪০ জন ভারতীয় জওয়ান নিহত হলে ভারত পাকিস্তানের অভ্যন্তরে বিমান হামলা চালায়। পাকিস্তান ভারতের যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে এবং এক পাইলটকে আটক করে, পরে ফেরত দেয়।